Advertisement
E-Paper

কেন ‘দাগি’দের পাশে দাঁড়াচ্ছে এসএসসি? প্রশ্ন তুলল হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ, দু’টি কারণ বললেন কল্যাণেরা

এসএসসি-র নিয়োগবিজ্ঞপ্তি নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল হাই কোর্টে। সেই সব মামলায় গত সোমবার উচ্চ আদালতের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন, নতুন নিয়োগে চিহ্নিত ‘দাগি’দের সুযোগ দেওয়া যাবে না।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৫ ১৬:১৭

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) নতুন নিয়োগপরীক্ষায় ‘দাগি’রা যোগ দিতে পারবে না বলে নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য এবং এসএসসি হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে। সেখানে প্রশ্নের মুখে পড়ল তারা। ডিভিশন বেঞ্চ প্রশ্ন তুলল, এসএসসি কেন ‘দাগি’দের পাশে দাঁড়াচ্ছে? জবাব দিতে গিয়ে আদালতে দু’টি কারণ জানিয়েছেন এসএসসি-র আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়।

এসএসসি-র নিয়োগবিজ্ঞপ্তি নিয়ে একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল হাই কোর্টে। সেই সব মামলায় গত সোমবার উচ্চ আদালতের বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন, নতুন নিয়োগে চিহ্নিত ‘দাগি’দের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ইতিমধ্যে কোনও ‘দাগি’ প্রার্থী আবেদন করে থাকলে তা-ও বাতিল করতে হবে। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে এসএসসি ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে। বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি স্মিতা দাসের সেই বেঞ্চেই প্রশ্নের মুখে পড়ে এসএসসি।

এসএসসি-র কাছে মোট তিনটি প্রশ্ন করেছেন বিচারপতি সেন। এক, এসএসসি কেন ‘দাগি’ বা ‘চিহ্নিত অযোগ্য’দের পাশে দাঁড়াচ্ছে? দুই, ‘দাগি’দের পাশে দাঁড়ানোর মতো কোনও অবস্থানে কি এসএসসি রয়েছে? তিন, নিয়োগপ্রক্রিয়ায় যোগ দেওয়া বা না-দেওয়া নিয়ে কমিশন কী ভাবে প্রভাবিত হচ্ছে।

আদালতের প্রশ্নের জবাবে দু’টি কারণের কথা বলেছেন এসএসসি-র আইনজীবী কল্যাণ। তাঁর প্রথম যুক্তি, নতুন নিয়োগে কারা যোগ দিতে পারবেন আর কারা পারবেন না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। প্যানেল-বহির্ভূত, মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে এবং সাদা খাতা জমা দিয়ে যাঁরা চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের ‘দাগি’ বলে চিহ্নিত করেছিল হাই কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টও হাই কোর্টের সেই নির্দেশকে মান্যতা দিয়েছে। তার বাইরে আর কেউ ‘দাগি’ বলে চিহ্নিত হননি। এই পরিস্থিতিতে হাই কোর্টের ‘গ্রহণযোগ্য’ নির্দেশ চাইছেন তাঁরা। কারা নতুন নিয়োগে যোগ দিতে পারবেন এবং কারা পারবেন না, তা স্পষ্ট ভাবে বুঝতে চাইছে এসএসসি। সেই কারণেই সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।

কল্যাণের দ্বিতীয় ‘যুক্তি’, ‘দাগি’দের চাকরি বাতিল হয়েছে। বেতনও ফেরত দিতে হচ্ছে। কিন্তু পরীক্ষায় কেন বসতে দেওয়া হবে না? কল্যাণের প্রশ্ন, ‘‘একই দোষের জন্য কি একাধিক শাস্তি প্রাপ্য?’’ প্রসঙ্গত, সিঙ্গল বেঞ্চেও একই প্রশ্ন তুলেছিলেন কল্যাণ। তবে বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, ‘‘ওঁ‌রা (দাগি হিসেবে চিহ্নিতরা) যদি জালিয়াতি এবং দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পান তা হলে তার ফলও ভুগতে হবে।’’

এসএসসির মতো ‘দাগি’ বা চিহ্নিত অযোগ্যদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাজ্যও। রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্তের সওয়াল, ওই অযোগ্যদের নিয়োগে অংশ নিতে না দিলে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে। তাঁদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রাখতে হবে। ভবিষ্যতে তাঁরা নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে পারবেন না সুপ্রিম কোর্ট কোথাও নির্দিষ্ট করে এটা বলে দেয়নি। তা ছাড়া সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সরকারি চাকরিতে সকলের সমান অধিকার। ফলে ওই দাগি চিহ্নিতদের বসতে না দিলে তাঁদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করা হবে।

বুধবারের শুনানিতে বিচারপতিরা জানতে চেয়েছিলেন, অযোগ্য বলে চিহ্নিতদের কত জন এখনও পর্যন্ত নতুন পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন করেছেন? জবাবে এসএসসি জানিয়েছে, ‘দাগি’দের ১০ শতাংশ এখনও পর্যন্ত আবেদন করেছেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা ১৮৮।

SSC Calcutta High Court
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy