Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মমতার ‘জুটি’র কাঁটা দাড়িভিটই

ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী করিমের গায়ে দলের উত্তরীয়। ফাইল চিত্র

ইসলামপুর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী করিমের গায়ে দলের উত্তরীয়। ফাইল চিত্র

অভিজিৎ পাল 
ইসলামপুর শেষ আপডেট: ১৭ মে ২০১৯ ০৩:৩৮
Share: Save:

সরাসরি কোনও উত্তর পাওয়া মুশকিল। তবু প্রশ্নটা ঘুরছেই কিছুদিন ধরে। সেটা হল, স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা ‘জুটি’ কি তাঁকে ইসলামপুর আসনটি উপহার দিতে পারবে? রাজনীতির ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, ভোটের অঙ্কের সোজা হিসেবে বাজিমাত করারই কথা ‘জুটি’র। এই কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী আব্দুল করিম চৌধুরী ও রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের দলীয় প্রার্থী কানাইয়ালাল আগরওয়ালের হাত মিলিয়ে দিয়ে দলনেত্রী জয়ের অর্ধেকটা রাস্তাই সুগম করে দিয়েছেন, এই ভাবনাটা বহাল তবিয়তে ঘুরছে এলাকায়।

কিন্তু বাতাসে অন্য গন্ধও আছে। সেই গন্ধের নাম দাড়িভিট-কাণ্ড। রাজনৈতিক মহলটির বক্তব্য, পারলে একমাত্র দাড়িভিটই মমতার আশায় জল ঢালতে পারে। কারণ, গত বছর এই দাড়িভিট-কাণ্ডের জেরেই তৃণমূল-বিরোধী একটা হাওয়া উঠেছিল ইসলামপুর জুড়ে। এমনকি, দাড়িভিট স্কুলে দু’জনের নিহত হওয়ার ঘটনার পর বিক্ষোভের জেরে কয়েকমাস ধরে এলাকায় পা-ই রাখতে পারেননি তৃণমূলের স্থানীয় বিধায়ক কানাইয়ালাল বা অন্য কেউই। আর সেই সুযোগকে পূর্ণ ভাবে কাজে লাগিয়েছিল বিজেপি। নিহত দুই পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছিল বিজেপি নেতৃত্ব। ঘটনার প্রতিবাদে ও দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের দাবিতে ধর্মঘট করেছিলে বিজেপি। তবে ধর্মঘটের দিন পাল্টা সভা ছিল তৃণমূলের। সেই সভাতে আসা মিছিল থেকে দোকানের উপর হামলার ঘটনায় অনেকটাই ব্যাকফুটে পড়তে হয়েছে শাসক দলকে। রামনবমীর মিছিলেও বিজেপি অনেকটা প্রভাব ফেলেছে। সেই হাওয়া, সেই গন্ধ এখনও অস্বস্তিতে রেখেছে তৃণমূলকে। এখন দেখার, ১৯ তারিখ ভোটের বাক্সে দাড়িভিট কতখানি বেগ দেয় শাসক দলকে।

গত বিধানসভা নির্বাচনে ইসলামপুর আসনটি দখল করেছিল কংগ্রেস। এমনকি ইসলামপুর পুরসভাও ছিল কংগ্রেসের দখলে। বিধায়ক হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই তৃণমূলে যোগ দেন বিধায়ক তথা পুরসভার চেয়ারম্যান কানাইয়ালাল নিজেই। এরপরেই করিম কানাইয়ার সঙ্গে বিরোধের জেরে দল ছেড়ে দেন। সেই করিমকেই ফিরিয়ে এনে ইসলামপুরে প্রার্থী করেন মমতা। ফলে শাসক দল এখন করিম-কানাইয়া দু’জনের ভোটব্যাঙ্ক ঝুলিতে ভ’রে জেতার ব্যাপারে নিশ্চিত। পাশাপাশি, বিগত কয়েক বছর ধরেই শক্তি বাড়িয়েছে বিজেপি। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিধানসভায় প্রথম স্থানে ছিল বিজেপি। ২০১৬ নির্বাচন অবশ্য তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি প্রার্থী সৌম্যরূপ মণ্ডল। এখন দাড়িভিটই তাদের প্রধান অস্ত্র বলে মনে করছে বিজেপি।

অপরদিকে, গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস জয়ী হলেও বিধায়ক নিজেই কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে চলে যাওয়ায় সংগঠন অনেকটাই নড়বড়ে হয়েছে কংগ্রেসের। এবার কংগ্রেস থেকে প্রার্থী হয়েছেন হাজি মুজাফ্ফর হোসেন। বামফ্রন্টের প্রার্থী শান্তিপ্রকাশ গুহনিয়োগীর (স্বপন) হয়ে প্রচারে নেমেছেন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। গত বিধানসভা নির্বাচনে জেডি ইউ-কে প্রার্থী করেছিল বামফ্রন্ট। জেডিইউ প্রার্থী মাত্র ১৫২১ ভোট পেয়েছিলেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE