আব্দুল মান্নানের বাড়ির ছাদে রাজ্যপাল। নিজস্ব চিত্র
অধিকারের ‘লক্ষ্মণরেখা’ তিনি কখনও অতিক্রম করবেন না বলে পুজোর মণ্ডপে দাঁড়িয়ে জানিয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তাঁর আশা, রাজ্যের সকলেই নিজেদের অধিকারের গণ্ডি মনে রেখে কাজ করবেন।
হুগলি জেলার চাঁপদানিতে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানের পাড়ায় একটি দুর্গাপুজোর মণ্ডপ সোমবার ঘুরে দেখতে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। নবমীর সকালে সেখানেই তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সকলের একটাই ধর্ম, নিজেদের অধিকারের সীমা মনে রাখা। সকলেরই ধর্ম, নিজেদের কাজ করে যাওয়া। অধিকারের লক্ষ্মণরেখা আমি কখনও অতিক্রম করব না। আমি আশা করি, বাংলায় সকলেই নিজেদের অধিকারের সীমার মধ্যে কাজ করবেন।’’
কিছু দিন আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুমিল বিক্ষোভের মধ্যে আটকে পড়া কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ‘উদ্ধার’ করতে ক্যাম্পাসে গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। তার পরে শিলিগুড়ি গিয়ে জনপ্রতিনিধিদের ডেকে তাঁদের অভাব-অভিযোগ শুনেছিলেন। তাঁর ওই দুই পদক্ষেপই রাজ্যপালের অধিকারের সীমা লঙ্ঘন কি না, সেই প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছিল শাসক দল। তার পরে নানা অনুষ্ঠানের অবসরেই রাজ্যপাল একাধিক বার ব্যাখ্যা দিয়েছেন, তিনি এক্তিয়ার ছাড়িয়ে কিছু করেননি। সেই তালিকায় এ বার পুজোর আসরও যোগ হল।
গঙ্গার শোভা দেখে মুগ্ধ সস্ত্রীক রাজ্যপাল। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যপালের এই মতকে স্বাগত জানিয়েও শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য মন্তব্য করেছেন, ‘‘উনি যদি এ কথা বলে থাকেন, ভাল কথা। তবে তিনি এই কথাটা উনি বিজেপির সভাপতি এবং অন্য নেতাদের বোঝান। তা হলে আরও ভাল হবে!’’
উদ্বোধনের সময় না পেলেও চাঁপদানির ওই পুজো রাজ্যপাল দেখতে যেতে চান বলে ষষ্ঠীর রাতে বিরোধী দলনেতাকে বার্তা দেওয়া হয় রাজভবন থেকে। তার পরে রাজ্যপাল বিরোধী দলনেতার বাড়িতে যাওয়ার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। সেই মতোই এ দিন পুজো-মণ্ডপ ঘোরার অবসরে চাতরা কুমোরপাড়ায় মান্নানের বাড়িতে গিয়ে প্রাতরাশ সারেন রাজ্যপাল ধনখড় ও তাঁর স্ত্রী সুদেশ। বাড়ির পাশেই গঙ্গা দেখে ছাদে উঠে পড়েন তিনি। ছাদে দাঁড়িয়ে গঙ্গার শোভা দেখে মুগ্ধ সস্ত্রীক রাজ্যপাল। মান্নানের কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে উনি পুজোর কার্নিভালে যাবেন। আমাদের এখানকার পুজো উদ্বোধনের সময় না পেলেও রাজ্যপাল নিজেই জানিয়েছিলেন, তিনি আমার বাড়িতে আসতে চান। বাড়িতে আলাপচারিতাতেও তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, বাংলার সংস্কৃতি তাঁর মন কেড়েছে।’’ কল্যাণ অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, ‘‘বাংলার সংস্কৃতি উনি কিছুই জানেন না। বাংলা সকলের আগে ছিল, আছে এবং থাকবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy