Advertisement
E-Paper

মেঘ একটু কাটতেই শীত আসার আশায় বাংলা

মহাদুর্যোগের পরে কিছুটা ক্ষান্তি দিয়ে চেন্নাইয়ে ফের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে কপাল খুলতে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গের! আকাশ মেঘলা ছিল কয়েক দিন। শুক্রবার ফের রোদের দেখা পেয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:০৫

মহাদুর্যোগের পরে কিছুটা ক্ষান্তি দিয়ে চেন্নাইয়ে ফের বৃষ্টি শুরু হয়েছে। তবে কপাল খুলতে শুরু করেছে দক্ষিণবঙ্গের!

আকাশ মেঘলা ছিল কয়েক দিন। শুক্রবার ফের রোদের দেখা পেয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গ। দিনের তাপমাত্রাও খানিকটা বেশি মালুম হয়েছে। আকাশ পরিষ্কার থাকায় নামতে শুরু করেছে রাতে তাপমাত্রা। টের পাওয়া গিয়েছে ঠান্ডা হিমেল হাওয়ার। বৃহস্পতিবারের তুলনায় এ দিন এক ধাক্কায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কমে গিয়েছে চার ডিগ্রি। তবে এখনও তা স্বাভাবিকের থেকে তিন ডিগ্রি বেশি। হাওয়া অফিসের খবর, বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শুক্রবার রাতে তা ১৯ ডিগ্রির কাছাকাছি নেমে এসেছে। আবহবিদেরা জানান, মেঘ কাটতেই উত্তুরে হাওয়ার মুখে দুর্বল হয়ে গিয়েছে বাধা। তার জেরেই কমছে রাতের তাপমাত্রা। বাতাসে শীত-শীত ভাবটা ফিরে আসছে।

কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গে শীত হাজির হয় উত্তর ভারত থেকে বয়ে আসা কনকনে হাওয়ায় ভর করে। আবহাওয়া দফতর সূত্রের খবর, অক্টোবরের অর্ধেক দিন পেরোলেই ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা থেকে ঠান্ডা, ভারী হাওয়া (পশ্চিমী ঝঞ্ঝা) আফগানিস্তান, পাকিস্তান হয়ে আসতে শুরু করে কাশ্মীরে। তার প্রভাবে কাশ্মীর এবং সংলগ্ন উত্তর ভারতের পাহাড়ি এলাকায় বৃষ্টি ও তুষারপাত হয়। সেখান থেকেই ঠান্ডা উত্তুরে হাওয়া আসে দক্ষিণবঙ্গে।

এ বারেও অক্টোবরের মাঝামাঝি থেকে বেশ কয়েকটি পশ্চিমী ঝঞ্ঝার দৌলতে দক্ষিণবঙ্গে হিমেল হাওয়া আসতে শুরু করেছিল। কিন্তু মাঝ-নভেম্বর থেকেই উত্তর ভারতে ঝঞ্ঝার খরা দেখা দেওয়ায় শীতের পথ বন্ধ হয়ে যায়। আবহবিদেরা বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরে জলের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে বঙ্গোপসাগরের উত্তর-পূর্ব মৌসুমি বায়ুর মতিগতি বিগড়ে গিয়েছে। তার ফলে পরপর তৈরি হয় ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ। বঙ্গোপসাগরের পরিমণ্ডল বিপর্যস্ত হয়ে যায়। উত্তুরে হাওয়ার মুখে বাধা তৈরি করে মেঘ। সব মিলিয়ে নভেম্বরের শেষ থেকে কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের হাওয়ায় স্বাভাবিক হিমেল ভাব উধাও হয়ে গিয়ে ফিরে আসে ভ্যাপসা গরম।

এ দিনও কলকাতার একটি সরকারি অফিসের এক কর্তা বলেন, ‘‘আগে নভেম্বরের গোড়া থেকেই অফিসে ফ্যান বন্ধ করে রাখতে হতো। এ বার দেখছি, ডিসেম্বরেও ফ্যান না-চালিয়ে উপায় নেই!’’ কেউ কেউ নভেম্বরের গোড়ায় রাতে গায়ে চাদর চাপিয়ে ঘুমোতেন। এ বার ১ ডিসেম্বর রাতে ফ্যান চালাতে হয়েছে তাঁদের। ঠান্ডা-গরমে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন অনেকে। খুশখুশে কাশি, সর্দি-জ্বর নিয়েই রাস্তায় বেরোচ্ছেন লোকজন।

এ বার কি শীত আশা করা যায়?

আবহবিদেরা জানাচ্ছেন, শীতকে জাঁকিয়ে বসতে হলে চাই পরিষ্কার আকাশ। চড়া রোদ উঠলে মাটি গরম হবে এবং রাতে আকাশ পরিষ্কার থাকলে সেই তাপ দ্রুত বিকিরিত হয়ে তাপমাত্রা নামিয়ে দেবে। দিন ও রাতের তাপমাত্রার ফারাক যত বাড়বে, তত বেশি শীত মালুম হবে। তবে সেই ফারাকটা যে হুট করে বেড়ে যাবে না, তা-ও জানিয়ে দিচ্ছেন হাওয়া অফিসের বিজ্ঞানীরা।

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ জানান, উত্তুরে হাওয়ার বাধা অনেকটা সরে গিয়েছে ঠিকই। তবে এত দিন যে-মেঘের কাঁটা ছিল, তা পুরোপুরি সরতে আরও অন্তত দু’দিন লাগবে। সোমবার থেকে শীত-শীত ভাবটা আরও বেশি করে মালুম হবে। এবং তাপমাত্রার ক্রম-পতন অব্যাহত থাকলে তার জেরেই ধীরে ধীরে শীত জাঁকিয়ে বসতে পারে।

সে-দিনটা কবে আসবে?

‘‘শীত জাঁকিয়ে বসতে বসতে ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ পেরিয়ে যেতে পারে। যদি না বঙ্গোপসাগরে আবার কোনও বাধা হাজির হয়,’’ বলছেন এক আবহবিজ্ঞানী।

meterological department prediction clear sky temperature drops down
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy