Advertisement
E-Paper

গরমে অ্যাসবেসটসের ঘরে ৬ মাসের বাচ্চা থাকবে কী করে? ৬২ হাজার টাকার বিদ্যুৎ বিল নিয়ে হাই কোর্টে ঠাকুরমা

বর্ধমান শহরের পুরসভা এলাকার বাসিন্দা গীতা আদক। তাঁদের বাড়িতে বিদ্যুতের বিল এসেছে ৬২ হাজার টাকা। ওই বিল মেটাতে অপারগ পরিবার। গীতা তাই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ ২০:৫৯
বিদ্যুতের বিল নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ বর্ধমানের প্রৌঢ়া।

বিদ্যুতের বিল নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ বর্ধমানের প্রৌঢ়া। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

মিটার ‘ত্রুটিপূর্ণ’! আগেই সেই মর্মে নোটিস পেয়ে গিয়েছিল বর্ধমানের আদক পরিবার। অভিযোগ, বার বার বলা সত্ত্বেও মিটার সারিয়ে দেননি কর্তৃপক্ষ। উল্টে আচমকা তাঁদের বাড়িতে যে বিদ্যুতের বিল এসেছে, তা দেখে মাথায় হাত পড়েছে পরিবারের সকলের। ৬ জুনের মধ্যে বিদ্যুতের বিল বাবদ ৬২ হাজার ২৯১ টাকা দিতে বলা হয়েছে ওই পরিবারকে। যা দেওয়ার সামর্থ্য নেই তাদের। বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় তাই কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন ৫১ বছরের গৃহকর্ত্রী গীতা আদক। জানিয়েছেন, তাঁর বাড়িতে ছ’মাসের শিশু রয়েছে। বিদ্যুৎ পরিষেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে এই গরমে অ্যাসবেসটসের চালের ঘরে কী ভাবে থাকবে সেই শিশু? বাড়ির বাকিরাই বা কী করবেন, প্রশ্ন ঠাকুরমার।

বর্ধমান শহরের পুরসভা এলাকার বাসিন্দা মামলাকারী প্রৌঢ়া। পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার (ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট ইলেকট্রিসিটি ডিসট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড, সংক্ষেপে ডব্লিউবিএসইডিসিএল) গ্রাহক তাঁরা। আবেদনপত্রে জানিয়েছেন, গত ১২ বছর ধরে তাঁরা অ্যাসবেসটসের চালের ঘরে থাকেন। মামলাকারীর স্বামী পেশায় টোটোচালক। তাঁদের বাড়িতে ছ’মাসের শিশু আছে। ২০২২ সালে প্রথম বার বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থার প্রতিনিধি তাঁদের বাড়িতে মিটার পরিদর্শনে যান। সেই সময়ে তাঁদের জানানো হয়েছিল, মিটারটি অনেক পুরনো এবং ত্রুটিপূর্ণ। সংস্থার প্রতিনিধিই মিটার বদলে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, তার পর আর কেউ আসেননি। পরিবারের তরফে বার বার অনুরোধ সত্ত্বেও মিটার পাল্টে দেওয়া হয়নি।

মামলাকারী আরও জানিয়েছেন, গত ১০ মে তাঁদের বাড়িতে আবার বিদ্যুৎবণ্টন সংস্থার কর্তৃপক্ষ মিটার পরিদর্শনে আসেন। মিটারের স্থান পরিবর্তনের নোটিস ধরানো হয় ওই পরিবারকে। এর পর বাড়িতে আসে বিদ্যুতের বিল। তিন মাসের বিদ্যুৎ খরচ বাবদ তাঁদের কাছে চাওয়া হয় ৬৩,৫১২ টাকা, যার প্রথম কিস্তিতে ৬ জুনের মধ্যে দিতে হবে ৬২,২৯১ টাকা। দাবি, এই বিল সম্পূর্ণ কাল্পনিক। ত্রুটিপূর্ণ মিটারের কারণে এমন বিল ধরানো হয়েছে তাঁদের।

পরিবারের তরফে মিটার যাচাই করে সঠিক বিলের জন্য লিখিত আবেদন জানানো হয় ডব্লিউবিএসইডিসিএল-এ। কিন্তু অভিযোগ, সাহায্যের পরিবর্তে তাঁদের বিদ্যুতের লাইন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। নিরুপায় প্রৌঢ়া এর পর আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রৌঢ়া জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর টোটো পারিবারিক রোজগারের একমাত্র অবলম্বন। সেই টোটোয় চার্জ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ প্রয়োজন হয়। তিনি নিজেও শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। ছ’মাসের শিশুকে নিয়ে অ্যাসবেসটসের ঘরে বিদ্যুৎ ছাড়া থাকা সম্ভব নয়। অবিলম্বে এ বিষয়ে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তিনি। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি কৌশিক চন্দের এজলাসে আগামী ১২ জুন এই মামলার শুনানি হবে।

Calcutta High Court WBSEDCL electricity bill Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy