রাত তখন ১১টা বাজে। কনকনে শীতে ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল চত্বর সুনসান। হঠাৎ একটি মারুতি গাড়ি হাসপাতালের গেটের সামনে এসে দাঁড়াল। তিন-চার জন যুবক মারুতি থেকে এক মহিলা ধরাধরি করে গেটের সামনে নামিয়েই চম্পট দেয়।
পাহারাদাররা পিছু ডাকলেও যুবকরা উত্তর ছুড়ে দিল—‘‘ওষুধ কিনে আনছি’’। তারপরে গাড়ি ঘুরিয়ে উধাও। হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাই মহিলাকে ভিতরে নিয়ে যান। খবর দেওয়া হয় ধূপগুড়ি থানাকেও। মহিলার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। কথাবার্তা অসংলগ্ন। তাঁর বাড়ি ধূপগুড়িরই একটি গ্রামে।
কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে মহিলা জানিয়েছেন, তাঁর স্বামীর বাড়ি ময়নাগুড়ি এলাকায়। দুই ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে। হাসপাতালের চিকিৎসক অজিত গুপ্তা জানান, “প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে মহিলাকে যৌন নির্যাতন করা হয়েছে।” হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত বিএমওএইচ দেবদাস মণ্ডল জানান, যে চিকিৎসক মহিলাকে প্রথম পরীক্ষা করে দেখেছেন, তিনি যৌন হেনস্থা নিয়ে তাঁকে কিছু বলেননি৷ দেবদাসবাবু বলেন, ‘‘তেমন কোন সন্দেহ থাকলে পূর্ণাঙ্গ মেডিক্যাল পরীক্ষা হবে।’’ জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতি দাবি করেন, ওই মহিলাকে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে কোন তথ্য হাসপাতাল থেকে তাঁদের দেওয়া হয়নি৷ পুলিশ সুপার বলেন, ‘‘চিকিৎসকরা তেমন কিছু জানালে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷’’
পুলিশ তদন্তে জেনেছে, মহিলার গ্রামের লোকজনই তাঁকে হাসপাতালের সামনে এনে ফেলে দিয়ে যায়। মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন বলে দাবি। পুলিশের কথার সঙ্গে মিল পাওয়া গিয়েছে খোলাইগ্রামের গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা ভারতী মণ্ডলের কথায়। ভারতীদেবী জানান, “ওই মহিলা মানসিক ভারসাম্যহীন। গতকাল রাতে পাশের বাজারে গিয়ে চিৎকার করে গালিগালাজ করছিলেন। তখন বাজার এলাকার কয়েকজন তাঁকে হাসপাতালে রেখে আসেন।’’ কারা তাঁকে রেখে এসেছেন, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।
গ্রামের লোকজন জানান, মহিলার দু’বার বিয়ে হয়েছিল। গ্রামের বাড়িতে ৩ বছর ধরে পরিচারিকার কাজ করছেন। সন্তানরা ময়নাগুড়িতে। তদন্তকারী এক অফিসার জানান, হাসপাতালের বিএমওএইচ ছুটিতে থাকায় গেটের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখা যায়নি। তা পাওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy