Advertisement
E-Paper

টেট দিয়ে মেয়ে কোলে জেলে ফিরলেন কাকলি

বীরভূমের মুরারই থানার বঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা, বছর আঠাশের কাকলি স্বামীকে খুনের অভিযোগে আসানসোল সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি হিসাবে আছেন গত এক মাস ধরে।

তন্ময় দত্ত 

শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২২ ১০:০৭
কাকলির আত্মীয়েরা দেখা করতে এসেছিলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে।

কাকলির আত্মীয়েরা দেখা করতে এসেছিলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। প্রতীকী ছবি।

এক মাসের জেলবন্দি জীবনে তাঁকে এক টুকরো অন্য স্বাদ এনে দিল রবিবারের টেট।

পুলিশি ঘেরাটোপে পরীক্ষা দিতে বসলেন বিচারাধীন বন্দি কাকলি মাল। আড়াই ঘণ্টা পরে পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে তিন বছরের মেয়েকে কোলে তুলে নিয়ে বললেন, ‘‘ভাল হয়েছে পরীক্ষা, সব ভাল হবে নিশ্চয়ই।’’ আত্মীয়-পরিজন তাঁর জন্য ঘরে তৈরি কিছু খাবার নিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু দিনের আলো থাকতে থাকতে ফিরতে হবে, তাই পুলিশ তাঁকে সকন্যা গাড়িতে তুলে নিয়ে চলল আসানসোল সংশোধনাগারে।

বীরভূমের মুরারই থানার বঠিয়া গ্রামের বাসিন্দা, বছর আঠাশের কাকলি স্বামীকে খুনের অভিযোগে আসানসোল সংশোধনাগারে বিচারাধীন বন্দি হিসাবে আছেন গত এক মাস ধরে। তাঁর শ্বশুরবাড়ি আসানসোলের হিরাপুরে। ছ’মাস আগে কাকলির স্বামী শুভদীপ মালের ঝুলন্ত দেহ মিলেছিল তাঁদের কোয়ার্টারের শোওয়ার ঘর থেকে। কাকলি-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করে শুভদীপের পরিবার।

মাস খানেক আগে হিরাপুর থানার পুলিশ কাকলিকে গ্রেফতার করে। তার পর থেকে শিশুকন্যাকে নিয়ে কাকলির ঠিকানা সংশোধনাগারের মহিলা সেল। সেখানে বসেই প্রাথমিকের টেট দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন তিনি। রবিবার মুরারই কবি নজরুল কলেজের টেট পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢোকার সময় কাকলির কোলে থাকা শিশুকন্যাকে এক মহিলা পুলিশকর্মী তাঁর কাছ থেকে নিয়ে আত্মীয়ের হাতে দেন। খোলা আকাশের নীচে পালা করে সবার কোলে ঘুরে বেজায় খুশি একরত্তিও।

কাকলির আত্মীয়েরা দেখা করতে এসেছিলেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। ভাগ্নিকে কোলে নিয়ে কাকলির দাদা বিকাশ মাল বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে বোনের বিয়ে হল। সব তো ঠিকই চলছিল। হঠাৎ ভগ্নীপতির ঝুলন্ত দেহ মিলল ওদের কোয়ার্টারেই। তখন আমাদের কাছে বঠিয়াতে ছিল বোন। ও কী করে খুন করতে পারে!’’ তাঁর দাবি, কাকলির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ ঠিক নয়। এর জন্য কাকলির সঙ্গে তাঁর শিশুকন্যাকেও সংশোধনাগারের চার দেওয়ালে কাটাতে হচ্ছে। টেট পাশ করুক বোন, এটাই এখন তাঁরা চাইছেন।

নাতনি আর মেয়েকে নিয়ে চোখের সামনে পুলিশ নিয়ে চলে যাওয়ায় চোখের জল বাধ মানেনি কাকলির মা পুষ্পিতা মালের। পুলিশের গাড়ির পিছন পিছন কয়েক পা এগিয়ে যেতে যেতে বলে ওঠেন, ‘‘সত্যিটা এক দিন ঠিক জানা যাবে। তত দিন কষ্ট বুকে চেপে অপেক্ষা করব।’’

শুভদীপের পরিবারের আইনজীবী সায়ন্তন মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুনের ঘটনার অভিযোগে মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আদালতে অভিযোগ করেছিলেন শুভদীপের পরিজন। বিষয়টি বিচারাধীন। তাই এ নিয়ে আর কিছু বলব না।’’

TET 2022 Jail woman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy