মানসিক ভারসাম্যহীন দিদির আইনি অভিভাবকত্বের আবেদন করে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বোন। সম্প্রতি এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি অমৃতা সিংহ নির্দেশ দিয়েছেন, মামলাকারীর অসুস্থ দিদির মেডিক্যাল রিপোর্ট ফের কোর্টে পেশ করতে হবে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সমাজকল্যাণ আধিকারিককে। ওই মহিলার মানসিক অসুস্থতার শংসাপত্রের পুনর্মূল্যায়নের সময়ও হয়ে এসেছে। পরবর্তী শুনানিতে শংসাপত্র ও মেডিক্যাল রিপোর্ট বিবেচনা করে অভিভাবকত্বের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান বিচারপতি। মামলার পরবর্তী শুনানি ৬ অগস্ট।
আদালতের খবর, মামলাকারীর দিদি স্কিৎজ়োফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত এবং ২০২৩ সালে শংসাপত্র দিয়ে বারাসত সরকারি হাসপাতাল জানায় যে রোগীর ৮৫ শতাংশ মানসিক প্রতিবন্ধকতা আছে। মামলাকারী বোনের আইনজীবী মহেন্দ্রনাথ সরকার আদালতে জানান যে ওই অসুস্থ মহিলার পরিবারের অন্য কোনও সদস্য জীবিত নেই। দিদির দেখভালের জন্য বোন আইনানুগ দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক। আইনজীবীর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় প্রতিবন্ধী কল্যাণ দফতর ও জেলাশাসকের কাছে আইনি অভিভাবকত্বের আবেদন করলেও তা নাকচ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজ্যের আইনজীবী জানান, উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক ও স্থানীয় স্তরের কমিটি মামলাকারীর আবেদন বিবেচনা করে প্রতিবন্ধী কল্যাণ আইন ১৯৯৯ অনুযায়ী তা বাতিল করেছে। রাজ্য এক বিশেষজ্ঞের রিপোর্টও জমা দেয় কোর্টে। সূত্রের দাবি, ওই রিপোর্টে বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন যে এই অসুস্থতা চিকিৎসাযোগ্য এবং রোগীকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া যায়। যদিও মামলাকারীর আইনজীবীর দাবি, মানসিক রোগে আক্রান্ত মহিলার বয়স পঞ্চাশের বেশি এবং এই বয়সে ৮৫ শতাংশ মানসিক প্রতিবন্ধকতা থেকে পুরোপুরি সুস্থ জীবনে ফেরা সম্ভব নয়।
উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি সিংহের পর্যবেক্ষণ, ওই মহিলাকে কেন মানসিক প্রতিবন্ধী হিসেবে বিবেচনা করা হবে না তার পর্যাপ্ত কারণ দেওয়া হয়নি। অসুস্থ মহিলার অসহায়তা, অক্ষমতা এবং তাঁকে দেখভালের কেউ না থাকার বিষয়টি বিবেচনা করে বোনের আইনি অভিভাবকত্বের আবেদন গুরুত্ব দিয়ে বিচার করা উচিত ছিল কমিটির।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)