Advertisement
০৫ মে ২০২৪

প্রতিপক্ষ হলেও মুখ্যমন্ত্রীর ‘নাক’ বাঁচাবে সিপিএম

রাজ্য রাজনীতিতে তারা প্রতিপক্ষ। শিল্প এবং কর্মসংস্থানের জন্য তৃণমূল সরকারের কোনও তৎপরতা নেই, এই অভিযোগ সামনে রেখেই ধর্মতলায় তাদের সমাবেশ। কিন্তু সেই মঞ্চ থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সম্মান রক্ষায় প্রয়োজনে রক্ত দেওয়ার কথা বলল যুব সিপিএম।

মিছিল: ডিওয়াইএফআই-এর পঞ্চাশ বছর উদ্‌যাপনের সমাবেশ। ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ।

মিছিল: ডিওয়াইএফআই-এর পঞ্চাশ বছর উদ্‌যাপনের সমাবেশ। ধর্মতলায়। ছবি: সুমন বল্লভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:৪২
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রীর নাক কাটতে চান বিজেপি নেতা! ঢাল হতে চায় সিপিএম!

রাজ্য রাজনীতিতে তারা প্রতিপক্ষ। শিল্প এবং কর্মসংস্থানের জন্য তৃণমূল সরকারের কোনও তৎপরতা নেই, এই অভিযোগ সামনে রেখেই ধর্মতলায় তাদের সমাবেশ। কিন্তু সেই মঞ্চ থেকেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সম্মান রক্ষায় প্রয়োজনে রক্ত দেওয়ার কথা বলল যুব সিপিএম। দলনেত্রীকে হুমকির (‘পদ্মাবতী’ ছবিকে কেন্দ্র করে) প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই মুখ খুলেছেন তৃণমূল নেতারা। তবে তাঁদের চেয়ে কয়েক কদম এগিয়েই মুহিলা মুখ্যমন্ত্রীর সম্মান রক্ষায় সরাসরি লড়াইয়ের ঘোষণা শোনা গিয়েছে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ সিপিএমের মঞ্চ থেকে।

রানি রাসমণি অ্যাভিনিউয়ে রবিবার ছিল ডিওয়াইএফআইয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাবেশ। সিপিএমের দুই পলিটব্যুরো সদস্য হান্নান মোল্লা এবং এম এ বেবি উপস্থিত ছিলেন সেখানে। ওই সমাবেশেই যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি এবং সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য সায়নদীপ মিত্র বলেছেন, ‘‘কিছু হনুমান মুখ্যমন্ত্রীর নাক কেটে নেওয়ার হুমকি দিয়েছে! তৃণমূল বেরোবে কি না, জানি না। কিন্তু আমরা বলছি, মুখ্যমন্ত্রীর গায়ে হাত দিতে এলে আমরা বুক পেতে দাঁড়াব। প্রয়োজনে রক্ত দিয়ে লড়াই করব!’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘এ রাজ্যের সংস্কৃতি ওরা জানে না। মহিলাদের সম্মান রক্ষায় আমরা সামনে দাঁড়িয়েই লড়াই করব।’’

কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, অতীতে অনিল বিশ্বাস থেকে অনিল বসু— বেশ কিছু বাম নেতাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করে কুকথা বলেছেন। অনিল বিশ্বাসের মতো কোনও কোনও নেতা প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশও করেছেন। এখন তা হলে মমতার মানরক্ষায় সিপিএমের যুব নেতৃত্ব এই ভাবে এগিয়ে আসছেন কেন? কারও কারও মতে, হরিয়ানার ওই বিজেপি নেতার হুমকিকে সিপিএম আসলে গেরুয়া-বিরোধী লড়াইয়ে অন্যতম হাতিয়ার হিসাবেই ব্যবহার করতে চাইছে। ‘অসহিষ্ণুতা’র বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক যুদ্ধে তারাই যে অগ্রণী সৈনিক, দেখাতে চাওয়া হচ্ছে সেটাই।

বাম সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, প্রশ্নটা ব্যক্তি মমতাকে নিয়ে নয়। প্রশ্ন মুখ্যমন্ত্রীর পদের সম্মানের। এবং সেই মুখ্যমন্ত্রী এক জন মহিলা। তাই বিজেপি-র হুমকির বিরুদ্ধে এমন জেহাদ ঘোষণা। ওই মঞ্চে একই সঙ্গে সায়নদীপ অবশ্য বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সম্মান আমরা বাঁচাব। কিন্তু গোটা দেশের কাছে উনি যে রাজ্যের নাক কেটে দিচ্ছেন? সেটাও আমরা বুঝে নেব!’’

নাক কাটার হুমকির প্রতিবাদে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিনই বলেছেন, ‘‘এক দল অশিক্ষিত, সংস্কৃতির প্রতি যাদের শ্রদ্ধা নেই, অন্যের মতকে যারা গায়ের জোরে পদদলিত করতে চায়, তারাই এ ধরনের কুবাক্য বলে! প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে বাংলার মানুষ রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE