Advertisement
E-Paper

অনাস্থা এনে পাঁচ বিধায়ককে প্যাঁচে ফেলতে চায় কংগ্রেস

বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছে কংগ্রেস। সারদা-কাণ্ডকে কেন্দ্র করেই অনাস্থা প্রস্তাব আনবে তারা। বিধানসভার কক্ষে সরকার পক্ষকে বিপাকে ফেলার মতো বিধায়ক-সংখ্যা কংগ্রেসের না থাকলেও এই অনাস্থার তাৎপর্য প্রতীকী। এবং সেই প্রতীকী পথ ব্যবহার করেই এক ঢিলে এ বার দুই পাখি মারতে চাইছে কংগ্রেস! সরকারের বিরোধিতার সুর চড়ানোর পাশাপাশিই তাদের নিশানায় পাঁচ দলত্যাগী বিধায়কও!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫৫

বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছে কংগ্রেস। সারদা-কাণ্ডকে কেন্দ্র করেই অনাস্থা প্রস্তাব আনবে তারা। বিধানসভার কক্ষে সরকার পক্ষকে বিপাকে ফেলার মতো বিধায়ক-সংখ্যা কংগ্রেসের না থাকলেও এই অনাস্থার তাৎপর্য প্রতীকী। এবং সেই প্রতীকী পথ ব্যবহার করেই এক ঢিলে এ বার দুই পাখি মারতে চাইছে কংগ্রেস! সরকারের বিরোধিতার সুর চড়ানোর পাশাপাশিই তাদের নিশানায় পাঁচ দলত্যাগী বিধায়কও!

কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেও বিধায়ক পদ ছাড়েননি পাঁচ জন। তৃণমূলও তাঁদের পদত্যাগ করতে বলেনি। তাঁদের বিধায়ক-পদ খারিজ করার জন্য কংগ্রেস বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আবেদন জানিয়েছে। দলত্যাগীদের মধ্যে দুই বিধায়ক আবার উল্টে কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাবকে চিঠি দিয়ে দাবি করেছেন, তাঁরা নাকি কংগ্রেসেই আছেন! এই চিঠি চালাচালির মধ্যে দলত্যাগীদের বিধায়ক পদ খারিজের প্রক্রিয়া ঝুলেই রয়েছে। শুধু আবেদনে কাজ হচ্ছে না বুঝে এ বার পরিষদীয় ব্যবস্থার মধ্যেই অন্য কৌশল নিয়েছে কংগ্রেস। তাঁদের অনাস্থা প্রস্তাব আলোচনার জন্য গৃহীত হলেই সব বিধায়কের উপরে ‘হুইপ’ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতৃত্ব। খাতায়-কলমে ওই পাঁচ দলত্যাগী এখনও কংগ্রেসেরই বিধায়ক। পরিষদীয় আইন অনুযায়ী, হুইপ অমান্য করলে দলত্যাগ-বিরোধী আইনে ওই বিধায়কেরা পদ হারাবেন। তৃণমূলে যোগ দিয়ে দেওয়ার পরে স্বাভাবিক কারণেই ওই পাঁচ বিধায়কের পক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থায় ভোট দেওয়া সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতি তৈরি করেই দলত্যাগীদের ‘শিক্ষা’ দিতে চায় কংগ্রেস!

বিধানসভার আসন্ন অধিবেশন বসবে ৭ নভেম্বর থেকে। তার আগে বৃহস্পতিবার কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের বৈঠকে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি পাঁচ বিধায়কের প্রসঙ্গ আলোচনা হয়। তখনই ঠিক হয়, আসন্ন অধিবেশনে অনাস্থা প্রস্তাব আনা-সহ যাবতীয় পদ্ধতি ব্যবহার করে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নেওয়া হবে। বৈঠকের পরে পরিষদীয় দলনেতা সোহরাব বলেন, “অধিবেশনে আমরা সর্বাত্মক বিরোধিতার পথে যাব। সারদা-কাণ্ড, বর্ধমান-কাণ্ড, যাদবপুর-কাণ্ডের মতো ঘটনা তুলে ধরে সরকারের জবাবদিহি চাইব। অনাস্থা প্রস্তাবও আনব।” পরিষদীয় দলের নতুন সচেতক হিসাবে হাওড়া জেলার বিধায়ক অসিত মিত্র এবং নতুন সম্পাদক হিসেবে জলপাইগুড়ির সুখবিলাস বর্মাকে বেছে নেওয়া হয়েছে এ দিনের বৈঠক থেকেই। আগের সচেতক ছিলেন অসিত মাল, যিনি দলত্যাগী পাঁচ বিধায়কের অন্যতম।

মাস সাতেক আগে রাজ্যসভা ভোটের সময়ে ক্রস ভোটিং করে তৃণমূল শিবিরে গিয়েছিলেন সূতি ও গাজোলের কংগ্রেস বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস ও সুশীল রায়। তার পরে ২১ জুলাই ‘শহিদ দিবসে’র মঞ্চে তৃণমূলে যোগদান করেন কংগ্রেসের আরও তিন বিধায়ক হাসনের অসিত মাল, পাড়ার উমাপদ বাউড়ি এবং গোয়ালপোখরের গোলাম রব্বানি। লোকসভা ভোটের হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এই পাঁচ কেন্দ্রের মধ্যে চারটিতেই পিছিয়ে রয়েছে তৃণমূল! মালদহের গাজোল ও পুরুলিয়ার পাড়া কেন্দ্রে ‘লিড’ রয়েছে বামফ্রন্টের। মুর্শিদাবাদের সূতি ও উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরে এগিয়ে কংগ্রেস। একমাত্র বীরভূমের হাসন কেন্দ্রেই তৃণমূলের ‘লিড’ রয়েছে। কংগ্রেস শিবিরের বক্তব্য, লোকসভা ভোটে পিছিয়ে থাকায় ঝুঁকি এড়াতেই এখন উপনির্বাচন চাইছে না তৃণমূল। তাই বিধায়কদেরও পদত্যাগ করানো হচ্ছে না। তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতা অবশ্য বলছেন, “ঠিক সময়ে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

কংগ্রেসের অঙ্ক বলছে, তাদের এখন হারানোর কিছু নেই। তার চেয়ে বরং তৃণমূলের ‘নীতিহীনতার রাজনীতি’কে উন্মুক্ত করে দেওয়াই ভাল! সোহরাব এ দিন বলেন, “ওই পাঁচ বিধায়কের বিরুদ্ধে পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া চলছে। আমাদের মতে, ওঁদের উপরে দলত্যাগ-বিরোধী আইন কার্যকর হওয়া উচিত। তার জন্য নিয়ম মেনে আবেদন করেছি।” শুধু অপেক্ষা না-করে তাঁরা যে দলত্যাগীদের উপরে চাপ সৃষ্টি করতে চান, তার ইঙ্গিত দিয়ে কংগ্রেসের এক বর্ষীয়ান বিধায়কের বক্তব্য, “নীতি মানলে তৃণমূলের উচিত ছিল ওঁদের পদত্যাগ করিয়ে দলে নেওয়া! কিন্তু সেটা হয়নি। এর পরে আমরা অনাস্থা প্রস্তাবে হুইপ জারি করব। উপস্থিত থাকলে ওঁদের ভোটাভুটিতে অংশ নিতেই হবে।”

no confidence motion west bengal congress
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy