Advertisement
E-Paper

আড়ালে থেকেই এ বার মুকুলের ‘অস্ত্র’ বিতর্ক-সভা

তাঁর নতুন রাজনৈতিক ইনিংস নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। তার আগে ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চ থেকে সক্রিয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছেন মুকুল রায়। ইতিমধ্যেই মুকুল-অনুগামীরা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য অনুমোদন চেয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৫ ০২:০৫

তাঁর নতুন রাজনৈতিক ইনিংস নিয়ে জল্পনা তুঙ্গে। তার আগে ‘অরাজনৈতিক’ মঞ্চ থেকে সক্রিয়তা বাড়িয়ে দিচ্ছেন মুকুল রায়।

ইতিমধ্যেই মুকুল-অনুগামীরা জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছে নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের জন্য অনুমোদন চেয়েছেন। সেই আবেদনকারীদের তালিকায় যাঁদের নাম আছে, তাঁরাই আবার নতুন একটি পত্রিকা প্রকাশ করতে চলেছেন। সেই পত্রিকার আত্মপ্রকাশ অবশ্য এখনও হয়নি। দীপাবলির সময়েই পত্রিকাটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ হওয়ার কথা। পুজোর ঠিক আগে, মহালয়ার দিন সেই পত্রিকার তরফে আয়োজিত ‘আগমনি’ অনুষ্ঠানের মধ্যমণি ছিলেন মুকুল স্বয়ং। পুজো মেটার পরে, এ বার কালী পুজোর সময়ে মুকুল তাঁর ঘনিষ্ঠদের তৈরি মঞ্চ থেকে বিতর্কের আসরের আয়োজন করতে চলেছেন। মুকুলের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রে জানা গিয়েছে, কালী পুজোর প্রাক্ মুহূর্তে এবং তার অব্যবহিত পরেই অর্থনৈতিক বিকাশে কৃষি ও শিল্পের ভূমিকা এবং ‘বিপন্ন গণতন্ত্র’ বিষয়ে বিতর্ক-সভার পরিকল্পনা করছেন মুকুল-অনুগামীরা।

কেন বিতর্ক-সভার জন্য নভেম্বরের এই সময়কে বেছে নেওয়া? নিজাম প্যালেসে রবিবার মুকুলের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘নভেম্বর বিপ্লবের মাস!’’ তৃণমূলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের অনুগামীদের বক্তব্য, বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসার পরেই নতুন রাজনৈতিক পদক্ষেপ করবেন মুকুল। তার আগে বিতর্ক-সভা দিয়ে আরও কিছু সলতে পাকানো হবে। এই ঘটনাপ্রবাহকেই ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন মুকুল।

আলোচনাসভার বিষয় নির্বাচনও যথেষ্ট ইঙ্গিতবাহী। বামফ্রন্ট সরকারের শেষ পর্বে তাদের স্লোগান ছিল— ‘কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ’। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে ঘিরেই কৃষি-শিল্পের সংঘাত নিয়ে প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বস্তুত, সিঙ্গুরে কৃষি জমি রক্ষার আন্দোলনকে হাতিয়ার করে রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পথ প্রশস্ত করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই সময়ের বিশ্বস্ত ‘সেনাপতি’ ছিলেন মুকুল। এখন সেই মুকুলের অনুগামীরাই যখন কৃষি বনাম শিল্প নিয়ে আলোচনার আয়োজন করতে চলেছেন, তখন আবার পাল্টা বিতর্কে বিদ্ধ হচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

বিরোধীদের অভিযোগ, মমতার আমলে না হয়েছে কৃষির উন্নতি, না ঘটেছে শিল্পের বিকাশ! সিঙ্গুর থেকে টাটারা চলে যাওয়ার পরে নতুন শিল্প যেমন এ রাজ্যে আসেনি, তেমনই সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকেরাও জমি ফেরত পাননি। উপরন্তু রাজ্যে ফসলের নায্য দাম না পেয়ে কৃষক আত্মহত্যা নিয়ে সরব হয়েছেন বিরোধীরা। এই অবস্থায় মুকুল-অনুগামীরা কৃষি বনাম শিল্প নিয়ে যে বিতর্ক সভার আয়োজন করতে চলেছেন, তা রাজনৈতিক ভাবে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই অনেকের ধারণা। ওই বিতর্ক সভায় খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, কৃষি বিশেষজ্ঞদের বক্তা হিসেবে রাখা হচ্ছে বলে মুকুল-ঘনিষ্ঠদের সূত্রে জানা গিয়েছে।

পাশাপাশি রাজ্যে বর্তমান আইন-শৃঙ্খলার বেহাল পরিস্থিতি এবং গণতন্ত্র বিপন্ন বলে বিরোধীরা যে অভিযোগ তুলছেন, সেই অভিযোগকে সামনে রেখেই ‘বিপন্ন গণতন্ত্র, প্রতিবাদের ভাষা কী’ বিষয়ে বিতর্ক সভার আয়োজন করছেন মুকুল-ঘনিষ্ঠ অমিতাভ মজুমদার। যে নতুন রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে মুকুল-অনুগামীরা আবেদন করেছেন, অমিতাভবাবু তাঁদের মধ্যে অন্যতম। বিতর্ক-সভা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘আমরা পরিকল্পমনা করেছি। তবে দিনক্ষণ নির্দিষ্ট হয়নি এবং কোথায় করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি। তবে কালী পুজোর আগে বা পরে হবে।’’ এই বিতর্ক-সভা শুধু শহর কলকাতাতেই নয়, রাজ্যের জেলা-শহরগুলিতেও করার পরিকল্পনা তাঁদের আছে।

abpnewsletters
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy