Advertisement
১৮ মে ২০২৪

আলুর ক্ষতিও পুষিয়ে দেওয়ার আশ্বাস মন্ত্রীর

রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা আগেই আংশিক ভাবে তুলে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বার আলু ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসও দিলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। সোমবার মহাকরণে গিয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি জানায় পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। তখনই সমিতির প্রতিনিধিদের ওই আশ্বাস দেন মন্ত্রী। দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ মাসের গোড়া থেকে রফতানির পথে আলু আটক করার কাজে নামে সরকার।

পচে যাওয়া আলুর বস্তা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মিলনমেলা থেকে।  নিজস্ব চিত্র

পচে যাওয়া আলুর বস্তা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে মিলনমেলা থেকে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৪ ০৩:৩৬
Share: Save:

রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা আগেই আংশিক ভাবে তুলে নিয়েছিল রাজ্য সরকার। এ বার আলু ব্যবসায়ীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার আশ্বাসও দিলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। সোমবার মহাকরণে গিয়ে ক্ষতিপূরণের দাবি জানায় পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। তখনই সমিতির প্রতিনিধিদের ওই আশ্বাস দেন মন্ত্রী।

দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য এ মাসের গোড়া থেকে রফতানির পথে আলু আটক করার কাজে নামে সরকার। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং অন্যান্য রাজ্যে আলু পাঠানো হচ্ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সীমানা বন্ধ করে পুলিশকে দিয়ে ওই সব আলুর গাড়ি আটক করা হয়। তার তিন-চার দিন পর থেকে আটক আলুর গাড়ি আনা হয় মিলনমেলায়। ব্যবসায়ীরা তখনই দাবি তোলেন, সরকার আলু আটক করায় নানা ভাবে তাঁদের ক্ষতি হয়ে গিয়েছে। সেই ক্ষতিপূরণের দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। একই সঙ্গে ভিন্ রাজ্যে আলু রফতানি করতে দেওয়ার দাবিও তোলেন তাঁরা।

অরূপবাবু এ দিন বলেন, “ওঁদের কথা শুনেছি। ব্যবসায়ীরা আলু রফতানির দাবি জানানোর সঙ্গে সঙ্গে ক্ষতিপূরণ চেয়েছেন। সরকার বিষয়টি ভেবে দেখবে।” তিনি জানান, হিমঘরে এখনও পর্যন্ত যে-আলু রয়েছে, তাতে ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্যে জোগানের ক্ষেত্রে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়। ব্যবসায়ীদের জানানো হয়েছে, রাজ্যের মানুষকে সস্তায় আলু খাওয়ানোর পরেই তা বাইরে পাঠানো যাবে। তার আগে নয়। মন্ত্রী বলেন, “এক শ্রেণির আলু ব্যবসায়ী দাম বাড়াচ্ছে বলেই তো সরকারকে আলু আটক করে সেই আলু সস্তায় বিক্রি করতে হচ্ছে।”

এ দিনও মিলনমেলায় গিয়ে দেখা যায়, বস্তা বস্তা পচা আলু পড়ে রয়েছে হ্যাঙারগুলিতে। কিছু কিছু বস্তা থেকে পচা আলু বেছে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। ভাল আলু ভরা হচ্ছে নতুন বস্তায়। তবে যে-তিনটি হ্যাঙারে আলু রাখা হয়েছিল, তার মধ্যে দু’টি হ্যাঙারের আলু প্রায় শেষ। যা পড়ে রয়েছে, তার অধিকাংশই পচা বা আধপচা। সেখান থেকেও ভাল আলু বাছাইয়ের চেষ্টা চলছে। বেশ কিছু পচা আলুর বস্তা বাইরে রাখা হয়েছে।

কৃষি বিপণন দফতরের এক কর্তা জানান, মিলনমেলায় যত আলু আছে, আগামী দু’তিন দিনের মধ্যে তা বিক্রি করে ফেলতে হবে। কারণ, এ সপ্তাহের শেষেই একটি মেলা শুরু হবে ওখানে। তাই যত দ্রুত সম্ভব পাইকারি দরে বেশি বেশি করে আলু বেচে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

প্রশাসনিক সূত্রের খবর, যে-সব পাইকারি ব্যবসায়ী বেশি পরিমাণে কিনতে চাইছেন, তাঁদের ১১ টাকা কিলোগ্রাম দরে আলু দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দারা আলু কিনতে এলে বিক্রি করা হচ্ছে তাঁদের কাছেও। এখন একটি হ্যাঙারেই বাতানুকূল যন্ত্র চলছে। তা সত্ত্বেও ওই হ্যাঙার থেকে কত ভাল আলু পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে সরকারি কর্তাদেরই।

মিলনমেলায় সরকারের আলু রাখার সিদ্ধান্তে কপাল খুলেছে কিছু দিনমজুরের। আশপাশের বহু ছেলে মিলনমেলায় এখন আলু বাছাই থেকে শুরু করে তা ট্রাকে তোলা ও নামানোর কাজ পেয়েছেন। বস্তা-পিছু তাঁদের দেওয়া হচ্ছে ৩-৪ টাকা। অনেকে আবার কাজ না-পেয়ে মন খারাপ করে বসে আছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

potato problem compensation arup roy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE