Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে এ বার বিশ্বভারতীতে বনধ পড়ুয়াদের

আরও একটি কর্মনাশা বনধ পালিত হল বিশ্বভারতীতে। অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ বজায় রাখার দাবিতে ছাত্র, অভিভাবক এবং অধ্যাপকদের একাংশ আন্দোলন করছিলেন মাস দুয়েক। এ বার উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ও বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ তুলে, তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিশ্বভারতী অচল করলেন পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ। তা সমর্থন করল অধ্যাপক, কর্মীদের নানা সংগঠন। উপাচার্য অবশ্য এ দিন শান্তিনিকেতনে ছিলেন না।

সাম্প্রতিক আন্দোলনের জেরে বন্ধ রইল বিশ্বভারতী। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তোলা নিজস্ব চিত্র।

সাম্প্রতিক আন্দোলনের জেরে বন্ধ রইল বিশ্বভারতী। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে তোলা নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৪:০৬
Share: Save:

আরও একটি কর্মনাশা বনধ পালিত হল বিশ্বভারতীতে। অভ্যন্তরীণ সংরক্ষণ বজায় রাখার দাবিতে ছাত্র, অভিভাবক এবং অধ্যাপকদের একাংশ আন্দোলন করছিলেন মাস দুয়েক। এ বার উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি ও বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ তুলে, তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিশ্বভারতী অচল করলেন পড়ুয়া ও অভিভাবকদের একাংশ। তা সমর্থন করল অধ্যাপক, কর্মীদের নানা সংগঠন। উপাচার্য অবশ্য এ দিন শান্তিনিকেতনে ছিলেন না।

উপাচার্যের দুর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করলেও, এই আন্দোলন পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর স্তরের আসনে সংরক্ষণ বজায় রাখার দাবিতে শুরু হয়। গত শনিবার কলকাতায় শিক্ষা সমিতির বৈঠকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। স্থির হয়েছে, পরবর্তী বৈঠকে ছাত্রভর্তির নীতি নিয়ে উপাচার্য রিপোর্ট পেশ করবেন। এরপর এ দিন সকাল থেকে কেন্দ্রীয় দফতরের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। পাঠভবন, শিক্ষাসত্র এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে গিয়ে কাজ বন্ধ রাখার আর্জি জানান আন্দোলনকারীরা। বেলা বাড়তে শান্তিনিকেতন বনধের চেহারা নেয়।

বিশ্বভারতীর শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, মঙ্গলবার একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়ে গিয়েছিল। কেউ সরাসরি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে বিরোধে যেতে চাননি। আবার অনেকে বলেন, সোমবার প্রজাতন্ত্র দিবসের ছুটির পর বুধবার সাপ্তাহিক ছুটি। মাঝে মঙ্গলবারটা জুড়ে দিলেই লম্বা ছুটির সুযোগ। তাই বনধের বিশেষ বিরোধিতা হয়নি। আন্দোলনকারীদের তরফে অবশ্য বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবারও কাজ না করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে উপাচার্যকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “যা শুনছি, কিছু পড়ুয়া ও অভিভাবক এসে কাজ বন্ধ করার অনুরোধ করেছিলেন। তাতেই একটি গোটা প্রতিষ্ঠানের সব বিভাগ বন্ধ হয়ে গেল। বহু কেন্দ্রীয় প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছি, এমন কোথাও দেখিনি।” এ দিনের বন্ধকে তিনি “দুঃখজনক ও দুর্ভাগ্যজনক” বলে আখ্যা দেন।

এ দিন বন্ধ ছিল কলাভবন, সঙ্গীতভবন, কেন্দ্রীয় কার্যালয়, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার-সহ একাধিক বিভাগ এবং দফতর। খোলা ছিল জরুরি পরিষেবাগুলি, এবং পরীক্ষা বিভাগ। তবে নির্ধারিত সূচি মেনে হয়েছে শিক্ষাসত্রের স্পোর্টস। আন্দোলন- কারীদের স্টিয়ারিং কমিটির পক্ষে আহ্বায়ক কিশোর ভট্টাচার্য বলেন, “ছাত্রছাত্রী, অভিভাবকদের দাবি সমর্থন করছি।”

এ দিন বেশ কিছু রবীন্দ্রানুরাগী ফিরে যান রবীন্দ্র-সংগ্রহশালা দেখতে না পেয়ে। কলকাতার যাদবপুর থেকে মোনালিসা দাস সপরিবারে শান্তিনিকেতন ঘুরতে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, “পরপর ক’দিনের ছুটি পেয়ে ঘুরতে এসেছিলাম। আজ খোলা থাকবে ভেবে এসে দেখি, বন্ধ রয়েছে। গেটের সামনে নোটিস।” বিশ্বভারতী সূত্রে খবর, আন্দোলনকারীরা রবীন্দ্রভবনের কর্মীদের ভবন বন্ধ রাখার আর্জি জানালে, কর্তৃপক্ষ একটি নোটিস দিয়ে ভবন বন্ধ রাখার কথা জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE