সিবিআইয়ের অনেক আগেই সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমেছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি। তাদের তদন্ত কতটা এগিয়েছে, ইডি-র কাছে তা জানতে চেয়েছে আদালত। ইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা জানান, আগামী ১৫ জুলাই তাঁদের তদন্তের অগ্রগতির রিপোর্ট কলকাতার নগর দায়রা আদালতের মুখ্য বিচারকের কাছে পেশ করতে হবে।
ইডি-র দায়ের করা মানি লন্ডারিং (বেআইনি ভাবে অন্যত্র টাকা সরানো) মামলায় সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, তাঁর স্ত্রী পিয়ালি সেন ও ছেলে শুভজিৎ সেন এবং সারদার অন্যতম ডিরেক্টর দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের আদালতে হাজিরার তারিখ ছিল শুক্রবার। কিন্তু অসুস্থতার জন্য শুভজিৎ এ দিন বিচারকের সামনে হাজির হতে পারেননি।
মুখ্য বিচারক মহম্মদ মুমতাজ খান এ দিন সুদীপ্তের কাছে জানতে চান, এই মামলায় তাঁকে জামিন দেওয়া হলেও তিনি জামিনের টাকা জমা দিচ্ছেন না কেন? সুদীপ্ত জানান, জামিনের জন্য ৩০ হাজার টাকা জমা দেওয়ার কথা। তাঁর কাছে ওই টাকা নেই। জামিন পেলেও অবশ্য জেল থেকে মুক্তি পেতেন না সুদীপ্ত। কারণ, কর্মীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা জমা না-দেওয়ায় একটি মামলায় ইতিমধ্যে তাঁকে তিন বছর কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে বিধাননগর আদালত।
বিচারক এ দিন দেবযানীর কাছেও জানতে চান, তিনিও কেন জামিনের টাকা আদালতে জমা দিচ্ছেন না? দেবযানী বিচারককে জানান, তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে শীঘ্রই জামিনের টাকা জমা দেবেন। ইডি-র আইনজীবী অভিজিৎ ভদ্র জানান, এই মামলায় চার অভিযুক্তই জামিন পেয়েছেন। পিয়ালি ও শুভজিৎ জামিনের টাকা আগেই আদালতে জমা দিয়েছেন।
সারদা কেলেঙ্কারিতে ধৃত ব্যবসায়ী শান্তনু ঘোষ এ দিন ইডি-র জেরার মধ্যেই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়েন। সকাল থেকে দফায় দফায় তাঁকে জেরা করছিলেন ইডি-র তদন্তকারীরা। বেলা ২টো নাগাদ তিনি অসুস্থ বোধ করেন। কালবিলম্ব না-করে তদন্তকারীরা তাঁকে স্থানীয় সল্টলেক মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ইসিজি-সহ নানা পরীক্ষা করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, তাঁর শারীরিক পরীক্ষায় তেমন কোনও গোলযোগ ধরা পড়েনি। এক ঘণ্টা পরে তাঁকে ফের সল্টলেকে ইডি-র দফতরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিকেলের দিকে অসুস্থতার খবর পেয়ে শান্তনুবাবুর স্ত্রী ইডি-র দফতরে যান। রাতে অবশ্য শান্তনুকে আবার জেরা করা হয়েছে বলে ইডি-র খবর।
সারদার মতো বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা আইকোর-এর মামলাটি এ দিন কলকাতা হাইকোর্টে উঠেছিল। আইকোরের আমানতকারীদের দায়ের করার মামলার শুনানিতে বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত সিবিআইয়ের আইনজীবীর কাছে জানতে চান, ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা পশ্চিমবঙ্গে আইকোরের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে না কেন? সিবিআইয়ের আইনজীবী বলেন, তিনি এ বিষয়ে এখনই কিছু বলতে পারবেন না। অফিসারদের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই তিনি আদালতে বিষয়টি জানাতে পারবেন। বিচারপতি তখন বলেন, সারদার ক্ষেত্রে সিবিআই যদি ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে তদন্ত করতে করতে পারে, তা হলে আইকোরের বিরুদ্ধে সেটা করা যাবে না কেন? আগামী বুধবার ওই মামলার শুনানির সময় এই ব্যাপারে সিবিআইয়ের বক্তব্য জানাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy