Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

খাগড়াগড়-কাণ্ডের জেরে বাড়তি নজর সীমান্তে

বর্ধমান কাণ্ডের আঁচ লেগেছে সীমান্তেও। জোরদার করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেট্রাপোলের নিরাপত্তা। সীমান্ত লাগোয়া এলাকাতেও শুরু হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কথামতোই সতর্ক করা হয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে। বনগাঁ সীমান্ত থেকে ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে বাংলাদেশে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবক। গাইঘাটাতেও ধরা পড়েছে দুই বাংলাদেশি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৪ ০২:৫৯
Share: Save:

বর্ধমান কাণ্ডের আঁচ লেগেছে সীমান্তেও। জোরদার করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পেট্রাপোলের নিরাপত্তা। সীমান্ত লাগোয়া এলাকাতেও শুরু হয়েছে ব্যাপক ধরপাকড়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের কথামতোই সতর্ক করা হয়েছে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীকে।

বনগাঁ সীমান্ত থেকে ইতিমধ্যেই ধরা পড়েছে বাংলাদেশে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত এক যুবক। গাইঘাটাতেও ধরা পড়েছে দুই বাংলাদেশি। শনিবার ভোরে উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের ইটিন্ডা ও স্বরূপনগর সীমান্ত থেকে ৩৪ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধরা পড়েছে মাসুরা মোল্লা নামে হাসনাবাদের খড়মপুরের বাসিন্দা এক মহিলা পাচারকারীও। বাদুড়িয়া, স্বরূপনগর এবং বসিরহাট সীমান্ত থেকে রবিবার ভোরে ১৯ জন বাংলাদেশিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার তন্ময় রায়চৌধুরী বলেন, “ধৃতদের ব্যাপারে বাংলাদেশ পুলিশের সঙ্গে সমান্তরাল তদন্ত চলছে।” পুলিশ সুপার আরও জানিয়েছেন, মাস দু’য়েক ধরে অভিযান চালিয়ে চোরাপথ থেকে প্রচুর বাংলাদেশিকে ধরা হয়েছে। বনগাঁ মহকুমার বাগদা, বনগাঁ, গাইঘাটা এবং বসিরহাট মহকুমার স্বরূপনগর, বসিরহাট, হাসনাবাদ ও হিঙ্গলগঞ্জ থানার পুলিশদের নিয়ে বিশেষ দল তৈরি হয়েছে। যে জায়গাগুলি দিয়ে অনুপ্রবেশ হয়, এমন বেশ কয়েকটি ‘ঘাট’-এ বিএসএফের পাশাপাশি দিন ও রাতে পুলিশি পাহারা চলছে।

বোলপুর থেকে এক বাংলাদেশি ও চাকদহ থেকে এক দম্পতি গ্রেফতার হয়েছে। মুর্শিদাবাদের সীমান্ত-লাগোয়া এক মসজিদ থেকে এক বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। রানিনগরের রাজাপুর থেকে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। ডোমকলের এসডিপিও অরিজিত্‌ সিংহ বলেন, “তার নাম কাজি আমিরুল। বাড়ি বাংলাদেশের টাঙ্গাইল জেলার গোরকি গ্রামে। বাসিন্দাদের থেকে গোপনে খবর পেয়ে ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।” পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তি জানিয়েছে, এ দেশে বেড়াতে এসেছিল। পুলিশ খাগড়াগড় কাণ্ডের পরে বিষয়টিকে হালকা করে দেখতে রাজি নয়। সীমান্ত-লাগোয়া গ্রামে দিন পনেরো ধরে ওই ব্যক্তি কী করছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার তাকে আদালতে তোলা হবে। পেট্রাপোল শুল্ক দফতর সূত্রের খবর, আটোসাঁটো করা হয়েছে সীমান্তের নিরাপত্তা। বর্ধমান কাণ্ডের পরে সীমান্ত দিয়ে বাণিজ্যিক কারণে যারাই যাতায়াত করছে, কম্পিউটারে তাদের ছবি-সহ সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত শুরু হয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে সতর্ক করে জানানো হয়, পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়েই অনুপ্রবেশের ঘটনা ঘটছে। এরপরেই পেট্রাপোলে বসানো হয় সিসিটিভি, নিয়ন্ত্রিত হয় গতিবিধি। পেট্রাপোল শুল্ক দফতরের সহকারি কমিশনার শুভেন দাশগুপ্ত এ দিন বলেন, “সিসিটিভিতে নাইটভিশন চালু। বাণিজ্যিক কারণে পাসপোর্ট ছাড়া প্রতিদিন যাঁরা যাতায়াত করছেন, বর্ধমানের ঘটনার পরে প্রত্যেকের প্রোফাইল তৈরি করে রাখা হচ্ছে।”

বধর্মান-কাণ্ডের জেরে বোলপুরের কিছু ক্লাব ভাড়াটিয়াদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহে নামে। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ রকম ভাবে তথ্য যাচাই করতে গিয়ে স্থানীয় দর্জিপাড়া এলাকায় ওমর ফারুক মণ্ডল নামে এক ব্যক্তিকে বোলপুর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “ধৃত ব্যক্তি বাংলাদেশি বলে স্বীকার করায় শনিবার ধরা হয়েছে।”

পাশাপাশি, নদিয়ার চাকদহ থেকে খালেদ মণ্ডল এবং রেহেনা মণ্ডল নামে এক দম্পতিকে পুলিশ শুক্রবার ধরে। খালেদ বাংলাদেশের কচুয়াপোতা এবং রেহেনা উত্তর ২৪ পরগনার বাগদার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষ বলেন, “ধৃতেরা জাল সচিত্র পরিচয়পত্র তৈরি করত। ঘর দু’টি সিল করা হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

khagragarh case bardwan india bangladesh border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE