Advertisement
E-Paper

খাতায় নাম আছে, অথচ ক্লাসে নেই অনেক পড়ুয়া

কেবল শিল্প-বাণিজ্যে নয়। স্কুলশিক্ষাতেও পশ্চিমবঙ্গকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর গুজরাত। গুজরাতের গ্রামের স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ক্লাসে উপস্থিত রয়েছে ৮৫% পড়ুয়া, আর ৯৪% শিক্ষক। প্রায় ৭০% স্কুলেই যত শিক্ষক দরকার, ততই আছে। প্রায় ৯০% স্কুলে যত ক্লাসঘর দরকার, আছে ততগুলোই। আর পশ্চিমবঙ্গে? এ রাজ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গড়ে ক্লাসে থাকছে ৫৬% পড়ুয়া, আর ৮০% শিক্ষক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৯

কেবল শিল্প-বাণিজ্যে নয়। স্কুলশিক্ষাতেও পশ্চিমবঙ্গকে পিছনে ফেলে দিচ্ছে নরেন্দ্র মোদীর গুজরাত।

গুজরাতের গ্রামের স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ক্লাসে উপস্থিত রয়েছে ৮৫% পড়ুয়া, আর ৯৪% শিক্ষক। প্রায় ৭০% স্কুলেই যত শিক্ষক দরকার, ততই আছে। প্রায় ৯০% স্কুলে যত ক্লাসঘর দরকার, আছে ততগুলোই।

আর পশ্চিমবঙ্গে? এ রাজ্যে প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাসে গিয়ে দেখা গিয়েছে, গড়ে ক্লাসে থাকছে ৫৬% পড়ুয়া, আর ৮০% শিক্ষক। কেবল গুজরাত নয়। ‘ক্লাসছুট’ পড়ুয়ার সংখ্যায় পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে গিয়েছে অধিকাংশ রাজ্যকে। পঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কেরলে স্কুলের ক্লাসে পাওয়া যাচ্ছে ৮০-৯০% পড়ুয়াকে। এমনকী ছত্তীসগঢ়, ওড়িশা, অসমেও অন্তত ৭০% পড়ুয়া থাকে ক্লাসে।

এমনই ছবি উঠে এসেছে ২০১৪ সালের ‘অ্যানুয়াল স্টেটাস অব এডুকেশন রিপোর্ট’-এ (সংক্ষেপে ‘অসর’)। গত ছয় বছর ধরে ‘প্রথম’ নামে একটি অসরকারি সংস্থা দেশের গ্রামের স্কুলগুলির প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণির পরিকাঠামো ও পড়ুয়াদের পারদর্শিতার নমুনা সমীক্ষা করে বার্ষিক রিপোর্ট বের করছে। সেই রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গ কখনওই হিমাচল প্রদেশ, কেরল বা অন্ধ্রপ্রদেশের মতো রাজ্যদের কাছাকাছি আসতে পারেনি। এমনকী ত্রিপুরাতেও ৮০% স্কুলে যত শিক্ষক প্রয়োজন, ততই রয়েছে। এ রাজ্যে অর্ধেক স্কুলেও তা নেই। যত ক্লাসঘর প্রয়োজন, তত নেই ৩০ শতাংশেরও বেশি স্কুলে।

মোদীর ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানকে এ রাজ্যের প্রশাসন সে ভাবে গ্রহণ করেনি। ‘নির্মল বাংলা অভিযান’ নাম দিয়ে প্রকল্প চলছে। কিন্তু ‘অসর’ বলছে, গুজরাতে ৮১% স্কুলে মেয়েদের আলাদা টয়লেট রয়েছে, ব্যবহারও হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গে তা হচ্ছে ৪৭% স্কুলে।

এ রাজ্য কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে লেখাপড়ায় পড়ুয়াদের পারদর্শিতার দিকটি দেখলে। মাতৃভাষা পড়তে-লিখতে পারা, গণিতে বিয়োগ কিংবা ভাগ করতে পারা, এগুলিতে এখনও গুজরাতের থেকে এগিয়ে এ রাজ্যের পড়ুয়ারা। পঞ্চম শ্রেণিতে গুজরাতে মাত্র ১৬% পড়ুয়া ভাগ করতে পারে, এ রাজ্যে পারে ৩২%। তবে স্কুল তার খুব বেশি কৃতিত্ব দাবি করতে পারে কি না, সংশয় থেকে যায়। গুজরাতে যেখানে সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের মাত্র ৮% প্রাইভেট টিউশন নেয়, সেখানে প্রাথমিকেই এ রাজ্যে প্রায় ৬০% পড়ুয়া পড়ে টিউটরের কাছে। উঁচু ক্লাসে তা ৭৬%। শিক্ষার অধিকার আইন মেনে বিনা পয়সায় শিক্ষাদানের জন্য কোটি কোটি টাকা রাষ্ট্র খরচ করলেও, এ রাজ্যের গরিবকে পকেটের টাকা খরচ করেই লেখাপড়া শেখাতে হচ্ছে শিশুদের।

কিন্তু কেবল স্কুলেই গরিব শিশুরা যা শিখতে পারে, সেই পাঠের কী হবে? ‘অসর’ বলছে, গুজরাতের ৮১% গ্রামীণ স্কুলে আছে কম্পিউটার। সমীক্ষকরা ২৯% স্কুলে তা ব্যবহার হতে দেখেছেন। এ রাজ্যে কম্পিউটার ব্যবহার দেখা গিয়েছে দেড় শতাংশ স্কুলে। বছর পাঁচ-সাত পরে গুজরাতের যে পড়ুয়ারা স্কুল থেকে বেরোবে, তাদের সঙ্গে আমাদের ছাত্ররা যুঝতে পারবে কিনা, সে প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে।

school drop out education ministry west bengal school education annual status of education report
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy