Advertisement
E-Paper

খুনের ফায়দা নিয়ে রাজনীতির নালিশ কোর্টে

বীরভূমের পাড়ুই গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলকর্মী সাগর ঘোষের হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নিহতের বৌমা এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজন। আর সরকারি আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্চ আদালতে অভিযোগ করলেন, নিহত সাগরবাবুর ছেলে হৃদয় ঘোষকে সামনে রেখে একটি রাজনৈতিক দল ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। ওই ঘটনার তদন্তে মূল অভিযুক্তকে বাঁচাতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে আগেই মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি হরিশ টন্ডন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:২৮

বীরভূমের পাড়ুই গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত স্কুলকর্মী সাগর ঘোষের হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত তদন্ত চেয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন নিহতের বৌমা এবং অন্যান্য আত্মীয়স্বজন। আর সরকারি আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্চ আদালতে অভিযোগ করলেন, নিহত সাগরবাবুর ছেলে হৃদয় ঘোষকে সামনে রেখে একটি রাজনৈতিক দল ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে। ওই ঘটনার তদন্তে মূল অভিযুক্তকে বাঁচাতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে আগেই মন্তব্য করেছিলেন বিচারপতি হরিশ টন্ডন।

বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস এবং বিচারপতি ঈশানচন্দ্র দাসের ডিভিশন বেঞ্চে কল্যাণবাবু বৃহস্পতিবার জানান, এই মামলার অন্যতম আবেদনকারিণী সাগরবাবুর পুত্রবধূ শিবানী ঘোষ এবং তাঁর স্বামী হৃদয়বাবু যা বলছেন, সেটাই সত্য নয়। পাড়ুই কাণ্ডের যথাযথ তদন্তই হয়েছে বলে দাবি করেন ওই সরকারি আইনজীবী। তিনি জানান, কতটা কী তদন্ত হয়েছে, সেই ব্যাপারে রাজ্য পুলিশের এডিজি (সিআইডি)-র রিপোর্টও ইতিমধ্যে দাখিল করা হয়েছে হাইকোর্টে।

এই মামলায় রাজনীতির প্রসঙ্গ আসছে আগাগোড়াই। এমনকী মূল অভিযুক্তকে বাঁচাতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন খোদ বিচারপতিও। ২০১৩ সালে বীরভূমে পঞ্চায়েত ভোটের ঠিক আগের রাতে (২১ জুলাই) দুষ্কৃতীরা বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থী হৃদয়বাবুর বাবা সাগরবাবুকে গুলি করে খুন করে। হৃদয়বাবু এবং তৃণমূলের আরও কিছু বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মী সম্প্রতি বিজেপি শিবিরে যোগ দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে সরকারি কৌঁসুলি এ দিন হাইকোর্টে অভিযোগ করেন, একটি দল এই মামলা থেকে ফায়দা লুটতে চাইছে।

সাগর-হত্যার তদন্তের জন্য রাজ্য পুলিশের ডিজি-র নেতৃত্বে বিশেষ দল (সিট) গড়ে দিয়েছিল হাইকোর্ট। কিন্তু সিটের তদন্তও উচ্চ আদালতকে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। পুলিশের উপরে অনাস্থা প্রকাশ করে ২৪ সেপ্টেম্বর পাড়ুই মামলার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআই-কে দেন বিচারপতি টন্ডন। তখনই তিনি বলেছিলেন, এই মামলায় মূল অভিযুক্তকে বাঁচানোর জন্য রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হয়েছে। সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেছে রাজ্য সরকার।

সরকারি আইনজীবী এর আগেই ডিভিশন বেঞ্চে অভিযোগ করেন, বিচারপতি টন্ডন বিচার প্রক্রিয়াকে অগ্রাহ্য করে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এ দিন কল্যাণবাবু জানান, বিচারপতি টন্ডন সিটের তদন্ত খারিজ করে নতুন করে তদন্ত করতে বলেননি। তিনি সিবিআই-কে দিয়ে খুনের ঘটনার আরও তদন্ত করতে বলেছেন। সেই তদন্ত করার নির্দেশ দিতে পারে কেবল নিম্ন আদালত।

অন্যতম আবেদনকারিণী শিবানীদেবীর আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি ডিভিশন বেঞ্চে অভিযোগ করেছেন, খুনের সময় বোমা, গুলি ছোড়া হয়েছিল। অথচ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার চার্জশিট পেশ করা হয়েছে বিস্ফোরক আইনের কোনও ধারা প্রয়োগ না-করেই। সেই কারণেই মামলার যথাযথ তদন্ত হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন এডুলজি।

এই মামলার অন্য আবেদনকারী নেপালকৃষ্ণ রায়ের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ডিভিশন বেঞ্চে আগেই অভিযোগ করেছেন, পাড়ুই কাণ্ডে পুলিশের একাংশও জড়িত। তাঁর আরও অভিযোগ, ষড়যন্ত্র করে সাগরবাবুকে খুন করা হয়েছে, কিন্তু তদন্তকারীরা সেই ষড়যন্ত্রেরও কোনও তদন্তই করেননি। বিকাশবাবুর বক্তব্যেও রাজনীতির প্রসঙ্গ এসেছে। তিনি জানান, একটি রাজনৈতিক দলের বীরভূম জেলার নেতা অনুব্রত মণ্ডল প্ররোচনামূলক ও উস্কানিমূলক বক্তব্য পেশ করেছিলেন। সেই বক্তব্যের সঙ্গে সাগর-হত্যার কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তারও তদন্ত হয়নি বলে ওই কৌঁসুলির অভিযোগ।

এই মামলায় দু’পক্ষের সওয়াল শেষ। তবে কবে রায় ঘোষণা হবে, ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন তা জানায়নি।

parui case sagar ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy