চৌমুহা ভুলতে পারছে না দাদার কীর্তি।
‘ঘরে ছেলে ঢুকিয়ে রেপ করিয়ে দেব,’ চৌমুহা-সহ নানা গ্রামে সাংসদের কুকথার ভিডিও ফাঁস হওয়ার সমালোচনা হয় তৃণমূল সাংসদ তাপস পালের। তার ছ’মাস পর সোমবারই প্রথম নিজের সংসদ এলাকা কৃষ্ণনগরে এসেছেন তাপস। মঙ্গলবার বেরোলেন শহরের বাইরে। চৌমুহা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে, নাগাদি মোড়ে তাঁর গাড়ি থামতেই উড়ে এসেছে টিপ্পনি। এক যুবক বললেন, “ওরে সরে যা, সরে যা। দাদা চলে এসেছে। ছেলে পাঠিয়ে রেপ করিয়ে দেবে।” কেউ বলেছেন, “ওরে এ ভাবে বলিস না। ওই সব কথা বলার জন্য মেয়ের কাছে দাদা নাকি বকুনি খেয়েছে।”
তখন দুধসাদা গাড়ি থেকে সবার উদ্দেশে নমস্কার করছেন সাংসদ। কিন্তু দলের পতাকা হাতে জনাকয়েক ছেলে ছাড়া, বাকিদের থেকে তেমন সাড়া মিলল না। নায়ক-সাংসদকে দেখতে এতদিন ভিড় করতেন গ্রামের মেয়েরা। নাগাদি মোড়ের পাতলা ভিড়ে দেখা গেল না একজন মহিলাকেও। এরপরে আর বেশিক্ষণ দাঁড়ায়নি গাড়ি।
নাগাদি মোড়ের আসার আগে সাংসদ ঘুরে এসেছেন চৌগাছা, পাগলাচণ্ডী ও দেবগ্রাম। গাড়ি থেকে হাত নাড়া, নমস্কার, নববর্ষের শুভেচ্ছা জানানো চলছিল। অনেকেই উত্তরে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। কিন্তু চৌমুহার কাছাকাছি এসেই স্পষ্ট হল, চৌমুহা ক্ষতে প্রলেপ দেওয়া অত সহজ নয়।
সাংসদের এক সফর সঙ্গীর কথায়, “পরিস্থিতি সুবিধার ঠেকছিল না। তাই দাদাকে দ্রুত সরিয়ে নিয়ে এসেছি।” কিন্তু মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে চৌমুহায় গিয়ে তাপস তো একবার সেই বটতলার দাঁড়িয়ে ক্ষমা চাইতে পারতেন? সোমবার তিনিই জানিয়েছিলেন, সময় পেলে যাবেন চৌমুহায়। ওই সফরসঙ্গীর চকিতে জবাব, “পাগল নাকি! চারদিকে যা চলছে, ঝুঁকি নেওয়া ঠিক হত না।”
জেলার তৃণমূল নেতারাও এ দিন এড়িয়ে চলেছেন তাপসকে। এক কাউন্সিলর ও মাঝারি এক নেতা তাঁর সঙ্গে ছিলেন। মঙ্গলবার সেই নেতারও দেখা মেলেনি। জেলার প্রথম সারির নেতারা তো দূর অস্ত, কাছে ঘেঁষেননি পঞ্চায়েত স্তরের নেতারাও। দাদা কী বলছেন? এ দিন দেবগ্রামের সম্প্রীতি উৎসবে তাপসের ‘দাদার কীর্তি’ ছবির চেনা গানকেই হাতিয়ার করেছেন, “এই করেছ ভাল নিঠুর হে..।” হাততালিও পড়েছে। কিন্তু ভিড়ের মধ্যে থেকে ভেসে এসেছে মন্তব্য, “এই গান গেয়ে কি আর সেই গানের (রিভলভার) কীর্তি ভোলানো যায়!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy