নবান্ন ঢাকতে বসানো হচ্ছে ‘ভিউ কাটার’। ছবি: সুমন বল্লভ।
যাতায়াতের রাস্তায় দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে আগেই। রাজ্য প্রশাসনের সদর কার্যালয় ঘিরে যে ১৪৪ ধারা জারি ছিল, সম্প্রতি তার পরিধিও অনেকটা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এ বার নিরাপত্তা নিশ্ছিদ্র করতে বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠা-নামার সব রাস্তায় ধাতব দেওয়াল তুলে নবান্নকে কিছুটা চোখের আড়ালে রাখার ব্যবস্থা করছে পুলিশ।
পোশাকি নাম ‘ভিউ কাটার’। গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে যেখানে নবান্নের ১৪তলা বাড়িটি মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তার আশপাশেই রয়েছে বিদ্যাসাগর সেতুতে যাতায়াতের বেশ কয়েকটি অ্যাপ্রোচ রোড। এর যে কোনও একটি রাস্তা দিয়ে গেলেই নবান্নের আপাদমস্তক দেখা যায়। নবান্নের বাইরের নিরপত্তার দায়িত্বে থাকা হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট এই দেখায় কিছুটা আড়াল রাখতে চায়। কমিশনারেটের এক পদস্থ অফিসারের কথায়, “ওই সব রাস্তা দিয়ে সারা দিনে বহু গাড়ি যাতায়াত করে। তাদের চোখে নবান্ন পুরোটাই বেআব্রু। যেহেতু ওই বাড়িতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা বসেন, তাই নিরাপত্তার স্বার্থে নবান্নের অন্তরাল প্রয়োজন। আমরা সাধ্যমতো সে চেষ্টাই করছি।”
এখন যে কোনও দিন নবান্নের কাছাকাছি গেলেই দেখা যাবে, মুখ্যমন্ত্রীর পছন্দের নীল-সাদা রঙের ‘ভিউ কাটার’ বসানোর কাজ চলছে। উচ্চতায় প্রতিটি আট ফুট। পুলিশকর্তাদের যুক্তি, রাস্তার দু’ধারে দেওয়ালের মতো এই ধাতর চাদর থাকলে যাতায়াতের পথে নবান্নের নীচের দিকের অংশ দেখা যাবে না। ফলে কারও বদ মতলব থাকলেও কাজ করা কঠিন হবে।
গত বছর অক্টোবরে রাজ্য প্রশাসনের সদর কার্যালয় মহাকরণ থেকে নবান্নে চলে যাওয়ার পর থেকেই ওই বাড়ির নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ চিন্তিত। এই সময়ের মধ্যে এনএসজি-র কমান্ডোরা একাধিক বার নবান্নে গিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখে পুলিশকে নানা পরামর্শ দিয়েছেন।
পুলিশের এক কর্তা জানান, মহাকরণে সদর কার্যালয় থাকার সময়ে অবস্থানগত কারণে সেখানে পুরোমাত্রায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা সম্ভব ছিল না। নবান্নে সেটাই হচ্ছে।
নবান্নকে প্রথম থেকেই ঘিরে রেখেছে পুলিশ। আশপাশের মহল্লার চারদিকে পুলিশের পিকেট বসানো হয়েছে। সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়লেই তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও জটলা হলেই তেড়ে যাচ্ছে পুলিশ। এই বাড়ি থেকে ১০০ মিটার পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছিল গোড়ায়। সম্প্রতি নবান্নের প্রায় ঘাড়ের কাছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বিক্ষোভ দেখিয়ে যাওয়ার পরে ১৪৪ ধারার এলাকা বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের একাংশের মতে, ২০১৬-এ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠার আশঙ্কা রয়েছে। মূলত সেই কথা মাথায় রেখেই ‘ভিউ কাটার’ বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাশাপাশি নবান্নের নিরাপত্তা আরও কড়া করতে বারোতলা পর্যন্ত নতুন দু’টি লিফ্ট বসানো হচ্ছে। এত দিন চোদ্দোতলা ওই বাড়িতে ওঠানামার জন্য ছিল মাত্র দু’টি লিফ্ট ও দু’টি সিড়ি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy