Advertisement
E-Paper

ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনে ফাঁসির সাজা যুবককে

বছর ঘোরার আগেই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। মঙ্গলবার নদিয়ার গেদে সীমান্তে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ‘ব্যতিক্রমের মধ্যে ব্যতিক্রম’ আখ্যা দিয়ে অভিযুক্ত বিমল সর্দারকে ফাঁসির সাজা শোনালেন কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের বিচারক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:১৮
আদালত চত্বরে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত বিমল সর্দার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

আদালত চত্বরে ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত বিমল সর্দার। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য।

বছর ঘোরার আগেই অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত। মঙ্গলবার নদিয়ার গেদে সীমান্তে ছাত্রীকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনা ‘ব্যতিক্রমের মধ্যে ব্যতিক্রম’ আখ্যা দিয়ে অভিযুক্ত বিমল সর্দারকে ফাঁসির সাজা শোনালেন কৃষ্ণনগর জেলা আদালতের বিচারক।

খুন, ধর্ষণ ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে আলাদা করে কারাদণ্ড ও জরিমানার সাজাও হয়েছে বিমলের। অভিযুক্তের ‘চরম সাজা’ শুনে হাসি ফোটে নিহত ছাত্রীর পরিবারের লোকজনের মুখে। তবে, ছ’মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে আদালত চত্বরে ভেঙে পড়েন অভিযুক্তের স্ত্রী পিঙ্কি সর্দার। এই রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে যাবেন বলে জানান তিনি।

গত বছর ১০ জুন বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন গেদের উত্তরপাড়া গ্রামে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ধর্ষণের পর খুন হয় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রী। পরদিন ওই কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পরে অভিযুক্ত বিমলকে পুলিশে দেন গ্রামবাসী। ১৭ দিনের মাথায় আদালতে চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণের পর সোমবার ধর্ষণ করে খুন ও প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে বিমলকে দোষী সাব্যস্ত করেন কৃষ্ণনগর আদালতের তৃতীয় জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথি মুখোপাধ্যায়।

সাজা কী হবে তা নিয়ে মঙ্গলবার সরকার পক্ষের আইনজীবী বিকাশ মুখোপাধ্যায় ও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী পরেশ পাল সওয়াল-লড়াই করেন প্রথমার্ধে। দু’পক্ষের বক্তব্য শোনার পরে বিচারক এক ঘণ্টা বিরতি ঘোষণা করে এজলাস ছেড়ে চলে যান। প্রায় ১টা নাগাদ আবার মামলা শুরু হয়। সাক্ষ্য-প্রমাণ ও ঘটনার নৃশংসতা উল্লেখ করে বিচারক খুনের অপরাধে ফাঁসি ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর কারাদণ্ড ঘোষণা করেন। এ ছাড়াও ধর্ষণের অপরাধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর কারাদণ্ড এবং প্রমাণ লোপাটের জন্য ৭ বছর কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস কারাদণ্ডের সাজা শোনান। জরিমানা আদায়ের পরে মৃতার ভাইকে তা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারক। এই রায়ের বিরুদ্ধে এক মাসের মধ্যে হাইকোর্টে আবেদন করা যাবে বলে জানান তিনি।

এ দিন প্রথম থেকেই গারদ ধরে ভাবলেশহীন মুখে দাড়িয়ে ছিল বিমল। বিচারক সাজা ঘোষণার পরে তার শরীর সামান্য কেঁপে ওঠে। হাত জোড় করে সে বিচারককে বলে, ‘‘আমাকে বাঁচিয়ে রাখুন।”

ছ’মাসের শিশুপুত্রকে নিয়ে বাবার সঙ্গে আদালতে এসেছিলেন বিমল সর্দারের স্ত্রী পিঙ্কি সর্দার। চড়া রোদে আদালতের বাইরে ঠাঁয় দাড়িয়েছিলেন তিনি। স্বামীর সাজা শুনে ভেঙে পড়েন প্রথমটা। কিছুটা সামলে নিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ও নির্দোষ। সবাই মিলে ওকে ফাঁসিয়ে দিল।” পিঙ্কি জানান, ভালবেসেই বিমলকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। বিয়ের ছ’মাসের মাথায় ওই ঘটনার সময় তিনি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন।

সাজা শুনতে এ দিন আদালত চত্বরে হাজির হয়েছিলেন নিহত ছাত্রীর মা, দাদা, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামবাসী। ছাত্রীর দাদা বলেন, ‘‘আমরা বরাবরই বিমলের ফাঁসি চেয়েছি। এটাই ওর উপযুক্ত শাস্তি। জানি না বোনের আত্মা শান্তি পাবে কি না। তবে, দোষী দ্রুত সাজা পাওয়ায় আমরা খুশি।”

এ দিনই হাওড়া আদালতে একটি গণধর্ষণের মামলার সাজা ঘোষণা হয়েছে। দু’বছর আগে বালির রাজচন্দ্রপুর স্টেশনে প্ল্যাটফর্মের পাশে গণধষির্তা হন এক বধূ। পরে ওই বধূর স্বামীর দুই বন্ধু রাজা সরকার ওরফে মিরিন্ডা এবং ছোটকা দাস ওরফে কার্তিক নামে দুই স্থানীয় যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিন মাসের মধ্যে চার্জশিটও দিয়ে দেয় পুলিশ। ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যদান পর্ব ও শুনানি শেষে সোমবার রাজা ও ছোটকাকে দোষী সাব্যস্ত করেন হাওড়ার সেশন জজ ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট-এর বিচারক দ্বিজেন্দ্রনাথ বর্মন। মঙ্গলবার দোষীদের ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লক্ষ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাবাসের সাজা শোনান তিনি।

rape krishnanagar howrah capital punishment verdict
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy