Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

জেলে বসেই কামারহাটির প্রার্থী বাছবেন মদন

জেলে বসেই কামারহাটি পুরসভার ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব পেলেন সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী মদন মিত্র।! জেল-বন্দি মন্ত্রীকে প্রার্থী বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল। সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় সিবিআই মদনকে গ্রেফতার করেছে। আদালতের নির্দেশে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ মার্চ ২০১৫ ০৩:৩৫
Share: Save:

জেলে বসেই কামারহাটি পুরসভার ভোটের প্রার্থী বাছাইয়ের দায়িত্ব পেলেন সারদা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রী মদন মিত্র।! জেল-বন্দি মন্ত্রীকে প্রার্থী বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান করেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল।

সারদা কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় সিবিআই মদনকে গ্রেফতার করেছে। আদালতের নির্দেশে তিনি জেল হাজতে রয়েছেন। কিন্তু তিনি এখনও রাজ্যের ক্রীড়া ও পরিবহণ মন্ত্রী। জেলে গেলেও তাঁকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর প্রয়োজন বোধ করেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর দেখানো পথেই এগিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। আসন্ন পুরভোটে কামারহাটি পুরসভায় তৃণমূলের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে মদনকে। ওই কমিটিতে দমদমের সাংসদ এবং বর্ষীয়ান নেতা সৌগত রায় রয়েছেন। তা সত্ত্বেও জেলে থাকা এক জন বিচারাধীন বন্দি এই দায়িত্ব পাওয়ায় যথেষ্ট বিস্মিত দলেরই একাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই মদনের এই দায়িত্বপ্রাপ্তি হয়েছে বলে তৃণমূলের নিচু তলার নেতা কর্মীরা মনে করছেন। তাঁদের বক্তব্য, সারদা কাণ্ডে জেলে গেলেও দল যে মদনের পাশেই আছে, সেই বার্তা দিতেই তৃণমূল নেত্রীর নির্দেশে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, জেলা স্তরের নেতা-কর্মীদের কাছেও বার্তা দিতে চাওয়া হয়েছে, দলের লাইন মেনে চললে মুখ্যমন্ত্রী সকলেরই পাশে থাকবেন। মদনের এই দায়িত্বপ্রাপ্তিতে সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কটাক্ষ, “জেলে বসে যখন মন্ত্রী থাকা যায়, তখন সবই করা যায়!”

কিন্তু জেলে বসে মদন কী ভাবে প্রার্থী বাছবেন? তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি তথা রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ব্যাখ্যা, “উনি তো জেলে নেই! উনি তো হাসপাতালে! উনি ওই এলাকার মন্ত্রী। তাঁকে বাদ দিয়ে প্রার্থী বাছাই করা যায় না।” জ্যোতিপ্রিয় জানান, মদন এলাকার সব নেতা-কর্মীকে চেনেন। দলের নেতারা প্রার্থী বাছাইয়ের ব্যাপারে তাঁর মতামত নিয়ে আসবেন। কে কে প্রার্থী হলেন, তা-ও তাঁকে দলের পক্ষ থেকে জানানো হবে। কিন্তু হাসপাতালে বা জেলে, যেখানেই মদন থাকুন, তিনি তো জেল হেফাজতেই আছেন। এই পরিস্থিতিতে তাঁর কাছে গিয়ে মতামত নিয়ে আসা সম্ভব? জবাব এড়িয়ে গিয়েছেন জেলার নেতারা।

দিন কয়েক আগে ব্যারাকপুর মহকুমার আটটি পুরসভার প্রার্থী বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয় সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদীকে। ব্যারাকপুর মহকুমায় মুকুল রায়ের ছেলে বিধায়ক শুভ্রাংশু রায় এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অন্য দুই বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত ও পার্থ ভৌমিক রয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে ব্যারাকপুরের দলীয় কর্মীদের মুকুল-অনুগামীদের থেকে বিচ্ছিন্ন করতেই সেখানে দীনেশকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জেলার অন্যত্র স্থানীয় বিধায়করা প্রার্থী বাছাই কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন।

উত্তর দমদম পুরসভার কংগ্রেস কাউন্সিলর সুবোধ চক্রবর্তী রবিবার মধ্যমগ্রামে তৃণমূলের কার্যালয়ে গিয়ে সেই দলে যোগ দিয়েছেন। পুরসভাটি বামেদের দখলে রয়েছে। জ্যোতিপ্রিয় বলেন, “সুবোধবাবু জানিয়েছেন, কংগ্রেসে থেকে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় না। তাই তিনি তৃণমূলে আসতে চেয়ে আবেদন করেছিলেন। তাঁকে দলে নেওয়া হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE