দিনভর বিবৃতি-পাল্টা বিবৃতি চললেও সন্ধে গড়ানোর আগে কোনও দলের নেতানেত্রীকেই পাশে পেলেন না ইংরেজবাজারের নির্যাতিতা।
ধর্ষণের অভিযোগ ওঠার পরে অভিযুক্তের পক্ষেই যুক্তি দেন রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার বিকেল পর্যন্ত পুলিশ তাঁকে থানায় বসিয়ে রেখেছে। অথচ এই গোটা সময়টায় কোনও দলের এক জনও নেতানেত্রী তাঁর কাছে যাননি।
সকাল থেকেই মন্ত্রীর সমালোচনায় মুখর হয়েছে প্রায় সব বিরোধী দল। কিন্তু মালদহ জেলা কংগ্রেস সভাপতি, পেশায় আইনজীবী মৌসম বেনজির নূর যখন শেষমেশ মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করলেন, সন্ধ্যা গড়িয়ে গিয়েছে। পরে আইনজীবী নিয়ে হাসপাতালে যান বিজেপি নেতারাও।
দেরিতে হলেও সব রকম আইনি সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন মৌসম। যেমন দিয়েছে বিজেপিও। এর আগেই অবশ্য অভিযুক্তদের ধরা নিয়ে গড়িমসির অভিযোগে জেলা পুলিশ সুপারের অপসারণের দাবিতে গাজলের কদুবাড়ি মোড়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে কংগ্রেস। সিপিএমের গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির সদস্যেরাও মালদহ শহরে বিক্ষোভ দেখান। কিন্তু রাজনীতি করতে পথে নামলেও তাঁদের কেউ নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে যাননি।
কী রকম বিবৃতি সারা দিন শোনা গিয়েছে? মৌসম বেনজির নূর: “মন্ত্রীর কথা মতো জেলা পুলিশ সুপার এক জন অভিযুক্তের সঙ্গে নির্যাতিতার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করছেন। এই পুলিশ সুপারকে অপসারণ না করলে জেলায় সাধারণ বাসিন্দাদের সুবিচার পাওয়ার আশা নেই।”
গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতির জেলা সম্পাদিকা রত্না ভট্টাচার্য: “বিধবা মেয়ের ধর্ষণ রুখতে গিয়ে বাবা জখম হলেন, অথচ তার পরে জেলার এক মন্ত্রী যে বিবৃতি দিয়েছেন, তাতে তিনি মহিলাদেরই অসম্মান করেছেন।” মঙ্গলবার থানায় গেলেও এ দিন রত্নারা নির্যাতিতার সঙ্গে দেখা করতে পারেননি। বৃহস্পতিবার হাসপাতালে যাবেন বলে তাঁরা জানান।
বিজেপির জেলা সভাপতি শিবেন্দুশেখর রায়ের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল নির্যাতিতার বাড়িতেও যায়। তিনি বলেন, “তাঁকে বলেছি আইনি সাহায্য লাগলে আমরা দেব।” মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর মালদহ শাখা সারা রাত নির্যাতিতাকে থানায় রাখার অভিযোগে কেন্দ্রীয় মানবাধিকার কমিশনে নালিশের তোড়জোড় করছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র বলেন, “কেন অভিযোগকারিণীকে সারা রাত পুলিশ থানায় আটকে রাখল, কেন তাঁকে খেতে দেওয়া হল না, জেলা এসপিকে জবাব দিতে হবে।” এঁরা কেউই হাসপাতালে ওই মহিলা বা তাঁর আহত বাবার সঙ্গে দেখা করতে যাননি।
কী বলছে তৃণমূল? দলের জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন: “পুলিশকে বলা হয়েছে, নিরপেক্ষ তদন্ত হোক।” অভিযোগকারিণীকে সারা রাত থানায় রাখার অভিযোগ জানা নেই বলে তাঁর দাবি। তৃণমূলে কৃষ্ণেন্দু-বিরোধী বলে পরিচিত প্রাক্তন নারী ও শিশু কল্যাণ (বর্তমানে দফতরহীন) মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র গতকাল দাবি করেন, সালিশি সভায় ধর্ষণের অভিযোগের মীমাংসা করা যায় না। এ দিন তিনি মুখ খুলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy