Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

দিনহাটা-ক্ষতে সিপিএম প্রলেপ দিক, চাইছে ফব

মাওবাদী প্রশ্নের পর দিনহাটা-কাণ্ড নিয়েও দুই বাম শরিক সিপিএম এবং ফব-র সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হল। বাম জমানায় ২০০৮-এর ৫ ফেব্রুয়ারি আইন অমান্য আন্দোলনের জেরে দিনহাটায় পাঁচ ফব কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার পর থেকে প্রতি বছর ওই দিনে ফব ওই ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করে। এ বার কোচবিহার ফব-র দাবি, ৫ ফেব্রুয়ারি ওই স্মরণ অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির হয়ে সিপিএম নেতাদের দিনহাটা কাণ্ডের ভুল স্বীকার এবং নিন্দা করতে হবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৪২
Share: Save:

মাওবাদী প্রশ্নের পর দিনহাটা-কাণ্ড নিয়েও দুই বাম শরিক সিপিএম এবং ফব-র সম্পর্কে জটিলতা তৈরি হল। বাম জমানায় ২০০৮-এর ৫ ফেব্রুয়ারি আইন অমান্য আন্দোলনের জেরে দিনহাটায় পাঁচ ফব কর্মী পুলিশের গুলিতে নিহত হন। তার পর থেকে প্রতি বছর ওই দিনে ফব ওই ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করে। এ বার কোচবিহার ফব-র দাবি, ৫ ফেব্রুয়ারি ওই স্মরণ অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির হয়ে সিপিএম নেতাদের দিনহাটা কাণ্ডের ভুল স্বীকার এবং নিন্দা করতে হবে। সম্প্রতি কোচবিহার জেলা ফ্রন্টের বৈঠকে ফব-র এই দাবির ফলে শরিকি সম্পর্কে টানাপড়েন দেখা দিয়েছে।

সিপিএমের পুরুলিয়া জেলা সম্মেলনের খসড়া প্রতিবেদনে ফব কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে মাওবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, বাম জমানার শেষ দিকে ফব-র নিচু তলার কিছু কর্মীর সঙ্গে তলে তলে মাওবাদীদের যোগাযোগের মাসুল দিতে হয়েছিল সিপিএমকে। ফব-র বক্তব্য, ওই সময়ে তাদেরও পাঁচ কর্মী মাওবাদীদের হাতে নিহত হয়েছিলেন। সিপিএমের অভিযোগ যে সত্য নয়, এই ঘটনায় স্পষ্ট। এই নিয়ে দুই শরিকের মতবিরোধের জেরে রবিবার সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্রের হস্তক্ষেপে ওই অংশটি প্রতিবেদন থেকে বাদ দেন পুরুলিয়া জেলা নেতৃত্ব।

ফ্রন্ট সূত্রের খবর, ফব নেতাদের দাবি নিয়ে দলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে সিপিএমের জেলা নেতৃত্ব তাঁদের জানান। সেই আলোচনা এখনও হয়নি। সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় বলেন, “ফব-র প্রস্তাব নিয়ে দলে কথা হয়নি। তাই এ নিয়ে কিছু বলার নেই।” ফব-র কোচবিহার জেলা সম্পাদক তথা দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহর বক্তব্য, “ফ্রন্টের ভিতরে কী কথা হয়েছে, সে ব্যাপারে মন্তব্য করতে চাই না। তবে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে পুলিশের গুলি চালানোর নিন্দায় সব বাম শরিকদের সরব হওয়া দরকার। তা নিয়ে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বলা উচিত সব দলেরই।”

দিনহাটা কাণ্ডের ৭ বছর পর কেন ফব ওই প্রসঙ্গ তুলছে? সিপিএমের একাংশের ব্যাখ্যা, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার চার বছর পরেও দল সব দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠেনি। এই সুযোগে তাদের বাগে পেয়েই পুরনো ক্ষোভ মেটাতে চাইছে ফব। তবে কোচবিহারের ফব নেতাদের দাবি, নন্দীগ্রাম-সহ কিছু ঘটনায় সিপিএম ভুল মেনেছে। দিনহাটা কাণ্ডেও দেরিতে হলেও সিপিএমের নিন্দা করা উচিত। যে ঘটনা নিয়ে দুই শরিকের টানাপড়েন, তা নিয়ে শীল কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে গত বছর। সেখানে আন্দোলনকারীদেরও দোষারোপ করা হয়েছে। ওই রিপোর্ট প্রকাশের দাবি নিয়ে একাধিক বার মত বদল করেছেন ফ ব-র রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ।

অতীতে দিনহাটা কাণ্ড নিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কাছেও ‘দুঃখপ্রকাশ’-এর দাবি করেছিল ফব। বুদ্ধবাবু আমল দেননি। তা মাথায় রেখেই শরিকের দাবি নিয়ে ধীরে চলো নীতিতে এগোচ্ছেন জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, বিষয়টি রাজ্য কমিটিকে জানানো হয়েছে যুক্তি দিয়ে অবস্থা সামলানোর চেষ্টা করতে পারেন সিপিএম নেতৃত্ব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

forward bloc cpm dinhata
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE