Advertisement
E-Paper

পাঁচ চক্করে তল্লাশি, ভিডিও তুলল কপ্টার

ছ’ঘণ্টায় হিমালয়ের আকাশে মোট পাঁচ বার পাক খেয়ে তল্লাশি চালাল হেলিকপ্টার। কাঞ্চনজঙ্ঘায় হারিয়ে যাওয়া ছন্দারা এখনও নিখোঁজ। উদ্ধার কার্য নিয়ে নানা টানাপড়েন, রাজ্য সরকারের পাঠানো বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে ছন্দা গায়েনের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনা বাগপাড়ায় গায়েন-বাড়িতে ছুটে যাওয়া-সহ নানা ঘটনার পর অবশেষে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শনিবার জানানো হয়েছে এ দিন সকাল থেকে হেলিকপ্টারে করে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৪ ০২:৫৬
ছন্দার মা জয়াদেবী।

ছন্দার মা জয়াদেবী।

ছ’ঘণ্টায় হিমালয়ের আকাশে মোট পাঁচ বার পাক খেয়ে তল্লাশি চালাল হেলিকপ্টার। কাঞ্চনজঙ্ঘায় হারিয়ে যাওয়া ছন্দারা এখনও নিখোঁজ।

উদ্ধার কার্য নিয়ে নানা টানাপড়েন, রাজ্য সরকারের পাঠানো বিশেষজ্ঞ দল নিয়ে ছন্দা গায়েনের পরিবারের অভিযোগ, শুক্রবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কোনা বাগপাড়ায় গায়েন-বাড়িতে ছুটে যাওয়া-সহ নানা ঘটনার পর অবশেষে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শনিবার জানানো হয়েছে এ দিন সকাল থেকে হেলিকপ্টারে করে তল্লাশি অভিযান চালানো হয়েছে। ঘটনাস্থলে মোট পাঁচ বার পাক খেয়েছে কপ্টারটি। তুষার ঝড় ও ধসের জায়গাটির ভিডিও ফুটেজ তুলেছে। কিন্তু উল্লেখযোগ্য কিছুই মেলেনি। নেপালের পর্বতারোহণ সংস্থা সূত্রের খবর, ছন্দার সঙ্গেই কাঞ্চনজঙ্ঘায় ওঠা রাজীব ভট্টাচার্যকে এ দিন রাত সাড়ে আটটা নাগাদ কাঠমান্ডু নিয়ে এসেছেন রাজ্য থেকে যাওয়া পর্বতারোহীরা। রাজীববাবুর পায়ে ফার্স্ট ডিগ্রি ফ্রস্ট বাইট হয়েছে।

এ দিন নবান্নে যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস জানান, আবহাওয়া ভাল থাকায় সকাল ৬টা ১০ থেকে এ দিন হেলিকপ্টারে করে তল্লাশি শুরু হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাশি শেরপা। বেলা প্রায় ১২টা পর্যন্ত চলে তল্লাশি। কিন্তু ফের তুষারপাত শুরু হওয়ায় ফিরে আসতে হয়। মন্ত্রী জানান, যে জায়গায় তুষার ধসে ছন্দা সহ দুই শেরপা হারিয়ে গিয়েছিলেন, সেই জায়গা চিহ্নিত করেন তাশি। আন্দাজ করা যায়, হাজার মিটারেরও বেশি নীচ পর্যন্ত নেমেছিল ধস। কিন্তু সেই জায়গাটি সম্পূর্ণ বরফে ঢাকা। অরূপবাবু বলেন, “ছন্দা যে হলুদ রঙের পাহাড়ে চড়ার পোশাক বা ডাঙরি পরে ছিল, তা মাথায় রেখেই খোঁজ চলেছে। গোটা জায়গার ছবি ও ভিডিও তুলে তা খুঁটিয়ে দেখা হচ্ছে।” মন্ত্রী জানান, মাস খানেক আগে ৫ জন পর্বতারোহী ওই একই জায়গায় তুষার ধসে নিখোঁজ হয়ে যান। তাঁদের খোঁজে ৬ জনের একটি কোরীয় দল গত এক মাস ধরে তল্লাশি চালিয়ে শনিবারই বেসক্যাম্পে ফিরে এসেছে। তাঁরাও কিছুই পাননি।

উদ্ধারকার্য নিয়ে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের সাংবাদিক বৈঠক। ছবি: প্রদীপ আদক

নেপালে ছন্দার অভিযানের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা পর্বতারোহণ সংস্থাটির কর্ণধার মিংমা শেরপা ফোনে জানালেন, তুষারধসে বা অন্য কোনও দুর্ঘটনায় পাহাড়ে প্রতি বছরই কোনও না কোনও দেশের অভিযাত্রীরা নিখোঁজ হন। গত বছরেই একটি কোরীয় দলের তিন জন অভিযাত্রী ও দু’জন শেরপা কাঞ্চনজঙ্ঘা অভিযানে গিয়ে তুষার ধসের মুখে পড়েছিলেন। খোঁজ মেলেনি কারও। এখন ফের তাঁদের খোঁজ চলছে ওই এলাকায়।

তল্লাশি পুরোদমে শুরু হলেও কিছুই আশ্বস্ত করতে পারছে না গায়েন পরিবারকে। দুর্ঘটনার পর প্রায় পাঁচ দিন পেরিয়ে যাওয়ায় পরিবারের মানুষদের হতাশা ক্রমে ক্ষোভের রূপ নিয়েছে। ছন্দার খোঁজ এখনও না মেলায় উদ্ধারকার্যের গাফিলতিকে দায়ী করছেন তাঁরা। ছন্দার দাদা জ্যোর্তিময় বলেন, “এই উদ্যোগ আগে নিলে হয়ত ছন্দাকে উদ্ধার করা যেত। তবে উদ্ধার কাজ যে শুরু হয়েছে এটাই ভাল।” এই ক’দিন কোনা বাগপাড়ায় গায়েনদের চারতলা বাড়িতে সহজেই উঠে যাওয়া যেত, কথা বলা যেত উদ্বিগ্ন পরিবারটির সঙ্গে। তা এ দিন কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে। সংবাদমাধ্যম-সহ পাড়া প্রতিবেশীদের ওই বাড়িতে প্রবেশের ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ছন্দার মা জয়াদেবীও সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলছেন না।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২টা নাগাদ রাজ্যপাল এ কে নারায়ণন জয়াদেবীকে ফোন করেন। বিকালে জোর্তিময় জানান, রাজ্যপাল তাঁদের বলেন, কাঞ্চনজঙ্ঘা যাওয়ার আগে ছন্দার হাতে তিনি জাতীয় পতাকা তুলে দিয়েছিলেন। ছন্দা অত্যন্ত সাহসী মেয়ে। এই দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকে তিনি উদ্বিগ্ন। রাজ্যপাল ছন্দার মাকে আশ্বস্ত করে বলেন, তল্লাশি শুরু হয়েছে। আশা করা যায় শীঘ্রই ছন্দা-সহ দুই শেরপার খোঁজ মিলবে।

chanda gyan jayadebi kanchenjunga
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy