বনগাঁ লোকসভা ও কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে বাম প্রার্থীদের প্রচারে পুলিশ ও তৃণমূল বাধা দিচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাল বামফ্রন্ট। কমিশনে শনিবার ওই অভিযোগ জানিয়েছেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। ওই দুই কেন্দ্রে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের স্বার্থে যাবতীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কমিশনের কাছে আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।
এ দিন আলিমুদ্দিনে বিমানবাবু বলেন, “লোকসভা ভোটের সময়ে ওই দুই কেন্দ্রে তৃণমূল ব্যাপক সন্ত্রাস করেছিল। ভোটে জিততে রিগিং ও নানা অসাধু পথ অবলম্বন করেছিল। এ বার এ সব বন্ধ করতে নির্বাচন কমিশনকে সব ব্যবস্থা নিতে হবে।”
সারদা কেলেঙ্কারিতে তৃণমূল এখন রক্ষণাত্মক। এই পরিস্থিতিতে এক দিকে নির্বাচন কমিশনের উপর চাপ সৃষ্টি করে অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট সুনিশ্চিত করা, অন্য দিকে আক্রমণাত্মক প্রচার এই দুয়ের উপরে নির্ভর করছে বামেরা। বনগাঁর এক সভায় রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নানা কেলেঙ্কারিতে রক্ষণাত্মক হয়ে উঠেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের আক্রমণাত্মক হয়ে লড়তে হবে।” সিপিএমের এক রাজ্য নেতার কথায়, “দুই কেন্দ্রেই যদি সিপিএম তৃতীয় হয়, তা হলে বামেদের গুরুত্ব আরও কমবে। তাই জেতার চেষ্টার পাশাপাশি অন্তত দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখার চেষ্টা চলছে।” এই লক্ষ্যেই এ দিন এসইউসি ও সিপিআই (এম এল) লিবারেশনের কর্মী-সমর্থকদের প্রতি বিমানবাবু আবেদন জানিয়েছেন তাঁরা যেন বাম প্রার্থীকে ভোট দেন। বামফ্রন্টের বাইরে গিয়ে এই দুই দলকে নিয়ে ‘বৃহৎ বাম ঐক্য’ গড়ে তোলার পরে এটাই প্রথম ভোট।
বনগাঁর প্রতাপগড়ে সিপিএম প্রার্থী দেবেশ দাসের প্রচারে গৌতম দেব ও সূর্যকান্ত মিশ্র। ছবি:নির্মাল্য প্রামাণিক
মতুয়া আর উদ্বাস্তু ভোটই বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের নির্ণায়ক। সেই ভোট পেতে তৃণমূল, বিজেপি দুই দলই মতুয়া মহাসঙ্ঘের ঠাকুরবাড়ি থেকে প্রার্থী করেছে। এ সপ্তাহেই উদ্বাস্তু সমাবেশ করেছিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সিপিএম। এ দিন বনগাঁর প্রতাপগড়ের সভায় গৌতম দেব বলেন, “উদ্বাস্তু মানুষকে কোনও দিনই এ দেশে থাকতে দিতে চায়নি বিজেপি-তৃণমূল। নেহরু একাধিক বার বিধানচন্দ্র রায়কে চিঠি লিখে প্রশ্ন করেছিলেন, বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা কেন এ দেশে আসছে? অর্থাৎ কংগ্রেসও উদ্বাস্তুদের চায়নি।” একই সভায় সিপিএম নেতা কান্তি বিশ্বাস আক্ষেপের সুরে বলেন, “মতুয়ারা দীর্ঘ দিন ধরে উদ্বাস্তু সমস্যা নিয়ে লড়াই করছেন। সেই বাড়ির ছেলে হয়ে সুব্রত ঠাকুর কী ভাবে বিজেপি শিবিরের কাছে মাথাটা বিক্রি করে দিলেন?”
তবে এখনও যে নতুন প্রজন্ম সিপিএম থেকে মুখ ফিরিয়েই রয়েছে, তা গৌতমবাবুর স্বীকারোক্তিতেই স্পষ্ট। কেন সভায় নতুন প্রজন্মকে সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এখানে সভায় অনেক লোক আছে। কিন্তু বুড়োদের ভিড়ই বেশি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy