Advertisement
E-Paper

বেপাত্তা সুদীপ্তর জন্য কেষ্ট শিবিরে সহমর্মিতা

আদালত তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেছে। তাঁকে দলের পদ থেকে সরানোর নির্দেশ জারি করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। থানায় ঢুকে পুলিশ পেটানোয় অভিযুক্ত বীরভূম জেলা যুব তৃণমূলের সদ্য অপসারিত সভাপতি সুদীপ্ত ঘোষের খোঁজও এখনও মিলছে না। তবু জেলা তৃণমূলের অন্দরে সুদীপ্তের পাশে দাঁড়ানোর লোকের সন্ধান এখনও পাওয়া যাচ্ছে!

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৪ ০৩:২৫
দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

দলীয় কার্যালয়ে যাওয়ার পথে অনুব্রত মণ্ডল। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী।

আদালত তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করেছে। তাঁকে দলের পদ থেকে সরানোর নির্দেশ জারি করেছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। থানায় ঢুকে পুলিশ পেটানোয় অভিযুক্ত বীরভূম জেলা যুব তৃণমূলের সদ্য অপসারিত সভাপতি সুদীপ্ত ঘোষের খোঁজও এখনও মিলছে না। তবু জেলা তৃণমূলের অন্দরে সুদীপ্তের পাশে দাঁড়ানোর লোকের সন্ধান এখনও পাওয়া যাচ্ছে!

বীরভূম জেলা তৃণমূলের দাপুটে সভাপতি অনুব্রত (কেষ্ট) মণ্ডলের ডান হাত যুব নেতা সুদীপ্ত। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেমন ঘোষণা করেছেন অনুব্রত ভাল সংগঠক, তেমনই অনুব্রত মনে করেন, সুদীপ্তকে ছাড়া জেলায় সংগঠন অনেকটাই অন্ধকার! কিন্তু দলের ভাবমূর্তির স্বার্থে সংগঠনের নতুন কমিটি থেকে সুদীপ্তকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের স্বয়ং যুবরাজ! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দলনেত্রী-পিসির নির্দেশ শিরোধার্য করার কথাই মুখে বলছেন সবাই। তবু তার মধ্যেও দলের একাংশে ধরা পড়ছে সুদীপ্তের জন্য সহমর্মিতার সুর!

সিউড়িতে বুধবার বৈঠকে যোগ দিতে যাওয়ার পথে বোলপুরের দলীয় কার্যালয়ের সামনে স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক তথা মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেছেন, “আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের বিরুদ্ধে এমন নানা অভিযোগ উঠেই থাকে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে মানেই এটা নয় যে, তিনি দোষী!” সঠিক তদন্ত হলেই সত্য উদ্ঘাটন হবে বলে তাঁর দাবি। তাঁর সতর্ক মন্তব্য, “সংগঠনের বিষয় নিয়ে দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই শিরোধার্য।”

তৃণমূলের একাংশের ব্যাখ্যা, জেলা সভাপতির মনের কথাই বলে ফেলছেন অনুব্রত-শিবিরের কেউ কেউ। যদিও খোদ অনুব্রত বিতর্কের ধারপাশ দিয়েও যাচ্ছেন না! সুদীপ্ত কোথায়, উত্তরে মুখে কুলুপ এঁটেছেন তিনি। আগে ‘ভাল ছেলে’ বলে সুদীপ্তকে শংসাপত্র দিলেও এ দিন তাঁর এক কথা “এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না। কারণ, যেটা আমি জানি না, তা নিয়ে মন্তব্য করি না!”

ঘটনা হল, বোলপুর শহরে সুদীপ্তের দেখা মিলছে না। বোলপুর থানা থেকে মিনিটকয়েক দূরে হরগৌরী তলায় সুদীপ্তর বাড়িতে দু’বার গিয়ে ডাকাডাকি করেও কারও কোনও সাড়া মেলেনি। দরজা যদিও ভিতর থেকেই বন্ধ ছিল। বন্ধ ছিল বোলপুর পুরসভার স্যানিটেশন ইনস্পেক্টরের দায়িত্বে থাকা সুদীপ্তর অফিস-ঘরও। সুদীপ্তর খোঁজ করতেই বোলপুর পুরসভার নির্বাহী আধিকারিক রাসমোহন গড়াই বলে দেন, “আমি মন্তব্য করব না। পুরপ্রধানই যা বলার বলবেন।” তৃণমূল পুরপ্রধান সুশান্ত ভকত জানান, অসুস্থতার জন্য ৪ সেপ্টেম্বর চিঠি দিয়ে সুদীপ্ত দু’মাসের ছুটি নিয়েছেন। এর মধ্যে দু’বার তাঁর আগাম জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। কী বলছে পুলিশ? জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনন্দ রায়ের বক্তব্য, “অভিযুক্তদের পাওয়া যাচ্ছে না বলেই ধরা যাচ্ছে না।” অনুব্রতের দাপটের মধ্যেও জেলা দলে তাঁর বিরোধীদের সংখ্যা খুব কম নয়। তাঁদের একাংশের বক্তব্য, নিজেদের অস্তিত্ব বাঁচাতে বাধ্য হয়ে অনুব্রতর সঙ্গে আপসে যেতে হয়েছে। কিন্তু যুবরাজ এ বার বার্তা দিয়েছেন, দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করলে যত বড় নেতাই হন না কেন, তাঁকে বহিষ্কার করা হবে! যদিও একদা অনুব্রত-বিরোধী, বর্তমানে তাঁর ঘনিষ্ঠ এক বিধায়কের মন্তব্য, “বীরভূমে অনুব্রতর বিকল্প কে? কেষ্টদা না থাকলে কিন্তু দলের সংগঠন বলে আর কিছু থাকবে না!” জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি মলয় মুখোপাধ্যায় (যিনি সুদীপ্তর আইনজীবীও) এ দিনও বলেছেন, “আজও মনে করি না সুদীপ্ত দোষী। কিন্তু সংবাদমাধ্যমে প্রচুর জলঘোলা হওয়ায় শীর্ষ নেতৃত্বের হয়তো মনে হয়েছে, শৃঙ্খলা রাখতে সুদীপ্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে মানুষের কাছে বিরূপ বার্তা যাবে।”

sudipta ghosh anubrata bolpur
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy