Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বোমা মারলে ফুলের তোড়া দিন, সুর বদলালেন অনুব্রত

বসন্তের আঁচ রোজ পাল্টাচ্ছে। ভোল পাল্টালেন অনুব্রত মণ্ডলও। এর আগে যাঁর মুখে ‘বোমা মারুন’ শুনে জনতা শিহরিত হয়েছে, তিনি বোধহয় সদ্য স্বপ্নে মুন্নাভাইকে দেখেছেন। বা দৈবাৎ শুনে ফেলেছেন ‘গাঁধীগিরি’ বলে একটা কথা। দু’দিন আগেই মঙ্গলকোটে গিয়ে বিরোধীদের ‘ইঁদুর’ বলেছিলেন তিনি, রামপুরহাটে বলেছিলেন ‘ভেড়া’।

কেতুগ্রামের কান্দরায় দলীয় কর্মিসভায় অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ। শনিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

কেতুগ্রামের কান্দরায় দলীয় কর্মিসভায় অনুব্রত মণ্ডলের সঙ্গে তৃণমূল বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজ। শনিবার। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

সৌমেন দত্ত
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৪ ০৪:৩৮
Share: Save:

বসন্তের আঁচ রোজ পাল্টাচ্ছে। ভোল পাল্টালেন অনুব্রত মণ্ডলও।

এর আগে যাঁর মুখে ‘বোমা মারুন’ শুনে জনতা শিহরিত হয়েছে, তিনি বোধহয় সদ্য স্বপ্নে মুন্নাভাইকে দেখেছেন। বা দৈবাৎ শুনে ফেলেছেন ‘গাঁধীগিরি’ বলে একটা কথা।

দু’দিন আগেই মঙ্গলকোটে গিয়ে বিরোধীদের ‘ইঁদুর’ বলেছিলেন তিনি, রামপুরহাটে বলেছিলেন ‘ভেড়া’। শনিবার কেতুগ্রামের কান্দরায় দলের কর্মিসভায় সেই অনুব্রতই বললেন, “গোটা এলাকায় তো কোনও বিরোধী দেখতে পাচ্ছি না। এর পরেও সিপিএম যদি আমাদের দিকে বোমা ছোড়ে, তা হলে বিধায়ক শেখ সাহানেওয়াজকে বলব, সিপিএম নেতাদের বাড়িতে ফুলের তোড়া পাঠাতে।”

শুধু কি তাই? গত পঞ্চায়েত ভোটে যে বামেরা বহু বুথে পোলিং এজেন্ট দিতে পারেনি, ডাকবাংলো মাঠের সভায় দাঁড়িয়ে সেই কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। কিন্তু ছক্কাটা আসলে তার পরের বলে। অনুব্রত বলেন, “সিপিএম তো এজেন্টই দিতে পারবে না। সিপিএম প্রার্থী আমাদের লিখিত ভাবে অনুরোধ করলে শেখ সাহনেওয়াজকে বলব, নির্বাচন পরিচালনার জন্য কিছু এজেন্ট ও কর্মী সিপিএমকে দিতে।”

এটাও অবশ্য শেষ নয়।

শেখ সাহানেওয়াজের সঙ্গে অনুব্রতর এক মঞ্চে ওঠাটাও বড় বদল। বর্ধমান ও বীরভূমে তৃণমূলের গোষ্ঠী রাজনীতিতে শেখ সাহানেওয়াজ ও অনুব্রত মণ্ডলের দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। যার জেরে কেতুগ্রামের দলীয় পর্যবেক্ষক হওয়া সত্ত্বেও অনুব্রত গত দেড় বছর কেতুগ্রামে ঢোকেননি। এ দিন তৃণমূল প্রার্থী অনুপম হাজরাকে নিয়ে মঞ্চে উঠেই কিন্তু সাহানেওয়াজ অনুব্রতকে জড়িয়ে ধরেন। বলেন, “আমি অনুব্রতবাবুর রাজনৈতিক শিষ্য। তাঁর নেতৃত্বে আগেও চলেছি। ভবিষ্যতেও চলব।” ভোটের আগে এই পরিবর্তন কেন, বোঝা কঠিন নয়।

সিপিএম নেতাদের ফুল পাঠানোর বুলি কি নির্বাচন কমিশনের ভয়ে? কেননা মঙ্গলকোট ও রামপুরহাটে কটূক্তির পরেই সিপিএম রাজ্যের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক সুনীল গুপ্তর কাছে অভিযোগ করেছে। সভাগুলির ভিডিও ফুটেজ-সহ বিস্তারিত রিপোর্ট নির্বাচন কমিশনে পাঠিয়েছে বর্ধমান ও বীরভূম জেলা প্রশাসন। তৃণমূলের এক রাজ্য নেতার দাবি, নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট যাওয়ার পর দলের তরফে অনুব্রতকে সতর্ক করা হয়েছে।

অনুব্রতর অবশ্য দাবি, “আমরা নির্বাচন কমিশনের নিয়ম মেনে চলি।” বোলপুরের সিপিএম প্রার্থী রামচন্দ্র ডোমের কটাক্ষ, “নানা চাপে সম্ভবত ওঁর বোধোদয় হয়েছে। তবে সিপিএমের এমন দশা হয়নি যে তৃণমূলের কাছে এজেন্ট চাইতে হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

tmc anubrata mondal soumen dutta
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE