Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বাড়তে চলেছে কেবল টিভি দেখার মাসিক খরচ

টিভি দেখার মাসিক খরচ অনেকটাই বাড়তে চলেছে। স্টার টিভির মতো বাকি দুই চ্যানেল সংস্থা সোনি ও জি টিভি এ বার তাদের চ্যানেলগুলির জন্য নতুন চুক্তি করতে চলেছে। এমএসও সংস্থাগুলির হিসেব অনুযায়ী, এর ফলে প্রতিটি সেট-টপ বক্সে টিভি দেখার মাসিক ভাড়া প্রায় সাড়ে তিনশ টাকা থেকে শুরু হবে। স্টার তাদের যে চ্যানেলে জন্য যে নতুন ব্যবস্থা করেছে, সেই পথেই এগোচ্ছে বাকি দুই ব্রডকাস্টার সোনি ও জি টিভি।

প্রভাত ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৩:৫১
Share: Save:

টিভি দেখার মাসিক খরচ অনেকটাই বাড়তে চলেছে। স্টার টিভির মতো বাকি দুই চ্যানেল সংস্থা সোনি ও জি টিভি এ বার তাদের চ্যানেলগুলির জন্য নতুন চুক্তি করতে চলেছে। এমএসও সংস্থাগুলির হিসেব অনুযায়ী, এর ফলে প্রতিটি সেট-টপ বক্সে টিভি দেখার মাসিক ভাড়া প্রায় সাড়ে তিনশ টাকা থেকে শুরু হবে।

স্টার তাদের যে চ্যানেলে জন্য যে নতুন ব্যবস্থা করেছে, সেই পথেই এগোচ্ছে বাকি দুই ব্রডকাস্টার সোনি ও জি টিভি। সম্প্রতি কলকাতা এসেছিলেন সোনির ডিস্ট্রিবিউশন বিভাগের প্রধান মকরন্দ পালেকর। তিনি জানান, স্টারের মতোই তারাও নতুন ভাবে চুক্তি করতে চান। জি টিভির এক সূত্র দিল্লি থেকে ফোনে জানান, স্টার ইন্ডিয়ার সঙ্গে এমএসওদের চুক্তি হয়ে যাওয়ার পরে তাঁরাও একই পথ নেবেন।

২০০৪ সালে ট্রাই পে চ্যানেলের ভাড়া নির্দিষ্ট করে দেয়। এর পরে আর ভাড়া বাড়ানোর অনুমতি নেই চ্যানেল সংস্থাগুলির। তবে এমএসও-দের ভাড়া বাড়ানোয় আপত্তি নেই। চ্যানেল সংস্থাগুলির ক্ষোভ, অনুষ্ঠান তৈরির খরচ প্রায় ৪০০ শতাংশ বেড়েছে। জনপ্রিয় সিনেমাও খোলা বাজার থেকে কিনতে হয়, যেখানে বিক্রেতাই দাম স্থির করেন। এ নিয়ে ট্রাই কোনও নিয়ম তৈরি করেনি। তবুও চ্যানেলের দাম বাড়ানোর অনুমতি পাওয়া যাচ্ছে না। এর পরে বিদেশের মতো যদি পে চ্যানেলে বিজ্ঞাপন দেখানো বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে চ্যানেল চালানো অসম্ভব হয়ে উঠবে।

হংকং ও সিঙ্গাপুরের গবেষণা সংস্থা মিডিয়া পার্টনার্স এশিয়া সমীক্ষায় দেখিয়েছে, ভারতেই টিভি দেখার খরচ গোটা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম। বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান প্রভৃতি ছোট দেশকে সমীক্ষায় রাখেনি সংস্থাটি। কিন্তু পশ্চিম গোলার্ধের উন্নত দেশগুলি, এমনকী পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান, ফিলিপাইন্স, তাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, কোরিয়াতেও টিভি দেখার খরচ ভারতের চেয়ে অনেক বেশি। যেমন, এ দেশে কেব্ল টিভিতে ‘বেসিক প্যাকেজ’-এর সংখ্যা ১৫৭। সে জন্য খরচ হয় ১৮০ টাকার মতো। পাকিস্তানে ১০০টি চ্যানেলের প্যাকেজ ১৮০ টাকা, শ্রীলঙ্কায় ৫০টি চ্যানেলের ৩৩৩টাকা, তাইল্যান্ডে ৮৭টি চ্যানেলের ৫৯২ টাকা, ইন্দোনেশিয়ায় ৫৭টি চ্যানেলের ১০০০ টাকা এবং কোরিয়ায় ১০০টি চ্যানেলের বেসিক প্যাকেজ পাওয়া যায় ৪৯৫ টাকায়।

চ্যানেল সংস্থাগুলির নয়া পদক্ষেপে এমএসও এবং কেব্ল অপারেটরদের আশঙ্কা বাড়ছে। জিটিপিএল সংস্থার প্রধান বিজয় অগ্রবাল বলেন, “ব্রডকাস্টারদের হাবভাব দেখে মনে হচ্ছে টেলিভিশনে হাত দিতে গেলেই দর্শককে মাসে সাড়ে তিনশ-চারশ টাকা গুণতে হবে। আমরা মাঝখানে পড়ে আছি।” মন্থন সংস্থার সুদীপ ঘোষের বক্তব্য, “স্টারের পদক্ষেপ দেখার পরে অন্য ব্রডকাস্টাররাও একই পথে হাঁটবে জানাই ছিল। কিন্তু এক লাফে এত ভাড়া সাধারণ দর্শক স্বীকার করবেন কি না, সেটাই চিন্তা।”

দাম বাড়লে রাজ্য কী পদক্ষেপ করবে চিন্তা বেড়েছে তা নিয়েও। ক’বছর আগে ট্রাইয়ের নির্দেশে কেব্ল টিভি অ্যানালগ থেকে ডিজিটাল হওয়ার সময়ে সরকার বিভিন্ন ভাবে চাপ সৃষ্টি করেছিল এমএসওদের উপর। দরিদ্র দর্শক সেট টপ বক্স কিনতে পারবেন না এই দোহাই দিয়ে দীর্ঘ দিন ডিজিটাইজেশনের কাজে বাধা দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এ বার চ্যানেল সংস্থাগুলির নতুন চুক্তির পরে টিভি দেখার খরচ যে হারে বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, তাতে রাজ্য সরকারের কী প্রতিক্রিয়া হবে, তা নিয়েই এখন চিন্তায় এমএসও সংস্থাগুলি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

mso prabhat ghosh set top box
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE