এক দিকে প্রশান্ত মহাসাগরে জন্ম নিয়ে ফেলা ঘূর্ণিঝড়, অন্য দিকে বঙ্গোপসাগরে জন্ম নিতে চলা নিম্নচাপ। দুয়ের মধ্যে সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু তারাই এ বার পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ভারতের বর্ষা ভাগ্য খুলে দিতে পারে বলে আশা করছে মৌসম ভবন।
প্রশান্ত মহাসাগরের টাইফুন (সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড়) রাম্মাসুন (সিয়ামিজ শব্দটির অর্থ বজ্রদেবতা) ইতিমধ্যে ফিলিপিন্স উপকূলে আছড়ে পড়েছে। শুক্রবার উপগ্রহ-চিত্র খতিয়ে দেখে আবহবিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, শিগগিরই তা দক্ষিণ চিনের হাইনান প্রদেশের কাছে গিয়ে আঘাত হানবে। এ দিকে বঙ্গোপসাগরে পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের কাছেও একটি নিম্নচাপ তৈরি হতে চলেছে, বজ্রদেবতার পরাক্রম যার পালে বাতাস জোগাবে। কী ভাবে?
আবহবিদদের ব্যাখ্যা: দক্ষিণ চিনে আঘাত হানার পরে রাম্মাসুনের দেহাংশ চলে আসবে বঙ্গোপসাগরে। এবং তা নিম্নচাপকে আরও শক্তিশালী করে তুলবে। যার ফলে গোটা দেশে বর্ষার জোর বাড়বে বলে আবহবিজ্ঞানীরা মনে করছেন।
প্রশান্ত মহাসাগরে জলতলের উষ্ণতা বৃদ্ধির ফলে বায়ুপ্রবাহের পরিবর্তন, অর্থাৎ এল নিনো-র জেরে এ বার ভারতে সার্বিক ভাবে বর্ষা বেশ দুর্বল। পশ্চিমবঙ্গ-ঝাড়খণ্ড-বিহার ছাড়া অধিকাংশ এলাকায় বৃষ্টির ঘাটতি চলছে। পশ্চিম ভারতের কোথাও কোথাও খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে গোটা দেশের নিরিখে বুধবার পর্যন্ত বৃষ্টির ঘাটতি ৩৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। মৌসম ভবনের আশঙ্কা, এমনটা চলতে থাকলে খরিফ চাষে বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে।
এমতাবস্থায় নতুন নিম্নচাপ কৃষি-আবহবিদদের মনে আশার সঞ্চার করেছে। তাঁরা বলছেন, বর্ষা এই মুহূর্তে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। মৌসুমি-অক্ষরেখা রাজস্থান থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকায় গোটা দেশেই বর্ষা সক্রিয়। নিম্নচাপের ধাক্কায় সেই সক্রিয়তা আরও বাড়তে পারে। আর এখন জোরালো বৃষ্টি হলে ফসল রোপনে সুবিধা হবে।
দক্ষিণবঙ্গে অবশ্য বর্ষণ-পরিস্থিতি তুলনায় আশাপ্রদ। গত ক’দিনে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় মোটামুটি ভাল বৃষ্টি হয়েছে। সব মিলিয়ে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির ঘাটতি এখন ১৩%, যা প্রায় স্বাভাবিক। “এর উপরে বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপ জোরদার হলে পরিস্থিতি আরও অনুকূল হয়ে উঠবে।” এ দিন বলেন আলিপুর হাওয়া অফিসের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy