সুনালী বিবির স্বামী এবং সুইটি বিবি-সহ বাংলাদেশে আটক চার ভারতীয়ের সম্পর্কে আদালতে যাবতীয় নথি জমা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। একই সঙ্গে আবেদনকারীদের দাবির ভিত্তিতে সেই নথিগুলি যাচাই করার জন্য কেন্দ্রকে অনুরোধ করা হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৬ জানুয়ারি। সুনালী বিবি এবং তাঁর সন্তান ভারতে আসার পর, সুইটি বিবি এবং সুনালীর স্বামী-সহ চার জনকে দেশে ফেরাতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে তাঁদের পরিবার। তার পরই এই নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত।
তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্যদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আটকে থাকা চার জনের নথিপত্র জমা দেওয়ার জন্য কেন্দ্রকে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর পরই তিনি বলেন, ‘‘ আমি ভারতীয় বিচারব্যবস্থাকে শ্রদ্ধা জানাই এবং মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’ সামিরুল আরও জানিয়েছেন, বাংলা ভাষাভাষী মানুষদের বেআইনি ভাবে বাংলাদেশে পাঠানোর বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে শুনানি হয়। সুপ্রিম কোর্ট সুনালীর স্বাস্থ্যের অবস্থা ও তার বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছে।
সুনালী এবং তাঁর সন্তানকে দেশে ফেরানোর জন্য দীর্ঘ আইনি লড়াই চলে। সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে অবশেষে সুনালী এবং তাঁর সন্তানকে দেশে ফেরানো হয়। সুনালী এবং তাঁর সন্তান দেশে ফিরলেও বাংলাদেশে আটক রয়েছেন তাঁর স্বামী, সুইটি বিবি এবং তাঁর দুই নাবালক পুত্র। সুনালীকে দেশে ফেরানোর পরই সুইটি বিবিদের দেশে ফেরানোর জন্য তৎপর হয় রাজ্য সরকার। উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই বীরভূমের মুরারইয়ে সুইটি বিবির পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন সামিরুল। পরিবারের সদস্যদের তিনি আশ্বস্ত করেন, যে ভাবে সুনালী ও তাঁর সন্তানকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে, সে ভাবেই সুইটি ও তাঁর নাবালক পুত্রদেরও ভারতে ফিরিয়ে আনা হবে। তার জন্য আইনি সহায়তা দেবে রাজ্য সরকার। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে ছ’মাস পরে গত শুক্রবার রাতে মালদহের মহদিপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে দেশে ফেরেন সুনালী এবং তাঁর আট বছরের ছেলে। সুনালী ফিরতেই বাকি চার জনকে ফেরানোর জন্য আইনি লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে দুই পরিবার। মুখ্যমন্ত্রীও সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার আশ্বাস দেন।
গত জুনে দিল্লিতে কর্মরত সুনালী-সহ ছ’জনকে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক করে দিল্লি পুলিশ। অসম সীমান্ত দিয়ে তাঁদের বাংলাদেশে ‘পুশ ব্যাক’ করা হয়। ২২ অগস্ট থেকে তাঁরা সে দেশের সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন। সম্প্রতি জামিন পান। সুনালী ও তাঁর ছেলেকে ফেরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
(ভ্রম সংশোধন: বাংলাদেশ থেকে ফিরে আসা বীরভূমের বাসিন্দার নাম সুনালী বিবি। তাঁর আধার কার্ডে হিন্দি এবং ইংরেজিতে নাম রয়েছে সুনালী খাতুন (বিবাহের আগে যা তাঁর পুরো নাম ছিল)। তিনি নিজেও জানিয়েছেন তাঁর নাম সুনালী বিবি। আমরা ধারাবাহিক ভাবে তাঁর নাম ‘সোনালি বিবি’ লিখছিলাম। সেই ভ্রম আমরা সংশোধন করে নিলাম। এই ত্রুটির জন্য আমরা সুনালী বিবি এবং তাঁর পরিবারের কাছে আন্তরিক ভাবে ক্ষমাপ্রার্থী)