Advertisement
E-Paper

রাষ্ট্রপতির কাছে জরিনাদের নিয়ে যাবেন অধীর

সুবিচার পেতে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারকে তিনি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এ বার লাভপুরের নিহত তিন ভাইয়ের পরিবারকেও রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একই সঙ্গে ঘোষণা করলেন, পরিবারটির নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি এবং সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় পালা করে জরিনা বিবিদের বাড়ি পাহারা দেবেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৪ ০২:১০
সঙ্গে আছি। শনিবার লাভপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমনাথ মুস্তাফির তোলা ছবি।

সঙ্গে আছি। শনিবার লাভপুরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমনাথ মুস্তাফির তোলা ছবি।

সুবিচার পেতে কামদুনির নির্যাতিতার পরিবারকে তিনি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন। এ বার লাভপুরের নিহত তিন ভাইয়ের পরিবারকেও রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। একই সঙ্গে ঘোষণা করলেন, পরিবারটির নিরাপত্তার স্বার্থে তিনি এবং সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় পালা করে জরিনা বিবিদের বাড়ি পাহারা দেবেন।

শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ অধীরবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল লাভপুরে সানোয়ার শেখের বাড়িতে যান। সঙ্গে ছিলেন জঙ্গিপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়, হাঁসন কেন্দ্রের বিধায়ক অসিত মাল, দলের বীরভূম জেলা সভাপতি সৈয়দ সিরাজ জিম্মি, কংগ্রেস কমিটির সদস্য সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অধীরবাবু বাড়ির উঠোনে পৌঁছতেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে জরিনা বিবি তাঁর দু’হাত চেপে ধরেন। তাঁকে বুকেও জড়িয়ে ধরেন ৮০ বছরের ওই বৃদ্ধা। প্রদেশ সভাপতি তাঁকে চেয়ারে বসিয়ে হুমকির কথা জিজ্ঞাসা করেন। জরিনা বিবি তাঁকে বলেন, “অভিযুক্তেরা আমাদের নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছে। ভয়ে নাতি-নাতনিরা স্কুলে পর্যন্ত যেতে পারছে না।” ওই কথা শোনার পরেই ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে অধীরবাবু মোবাইলে জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার সঙ্গে কথা বলেন। পরে অধীরবাবু জানান, পুলিশ সুপার তাঁকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।

২০১০ সালের ৩ জুন লাভপুরের নবগ্রামে এক সালিশি সভায় জাকের আলি, কোটন শেখ এবং ঔসুদ্দিন শেখ নামে তিন সিপিএম সমর্থক ভাই খুন হন। ওই হত্যাকাণ্ডে তৃণমূলের তৎকালীন জেলা সহ-সভাপতি মনিরুল ইসলাম-সহ ৫১ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের হয়। কয়েক মাস ফেরার থাকার পরে পুলিশ মনিরুলকে গ্রেফতার করে। কিন্তু ৯০ দিনের মধ্যে পুলিশ ওই খুনের মামলায় চার্জশিট জমা করতে না পারায় পরে তিনি জামিন পেয়ে যান। ২০১১ সালে দলের টিকিটে মনিরুল লাভপুরের বিধায়কও হয়ে যান। জরিনা বিবিদের দাবি, পরিবারের দুই সদস্যকে অপহরণ করে আদালতে লাভপুরের তৃণমূল বিধায়ক মনিরুলকে ‘নির্দোষ’ হিসেবে জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয়। সম্প্রতি জবানবন্দিতে নাম নেই, এই যুক্তি দেখিয়ে পুলিশ মনিরুলের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যেই পরিবারটি পুরনো জবানবন্দি প্রত্যাহার করে নতুন করে তা নেওয়ার জন্য হাইকোর্টে হলফনামা জমা দিয়েছে। জরিনা বিবিও তিন ছেলের খুনের তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য হাইকোর্টে মামলা করেছেন।

শুক্রবারই লাভপুরে জরিনা বিবির সঙ্গে দেখা করেছিল বামেদের এক প্রতিনিধি দল। এ দিন অধীরবাবুর নেতৃত্বে কংগ্রেসও একটি প্রতিনিধি দল পাঠায়। জরিনা বিবির মুখে নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগ শুনে, অধীরবাবু তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন। পরে তিনি জরিনাদের বলেন, “রাজনৈতিক রং দেখে আমি এখানে আসিনি। একজন মানুষ হিসেবে মানবিকতার টানে এসেছি। পুলিশ-প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।” দলগত ভাবে পরিবারটিকে সব রকমের সাহায্যের পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির কাছে নিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও তিনি দেন। আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য জরিনা বিবির হাতে কিছু অর্থ সাহায্যও তুলে দেন অধীরবাবু। ঘণ্টাখানেক সেখানে কাটানোর পরে জরিনা বিবিকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে তিনি লাভপুর ছাড়েন। পরে সংবাদমাধ্যমকে জরিনা বিবি বলেন, “টিভিতে বহুবার ওঁকে দেখেছি। মুর্শিদাবাদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছে শুনেছি উনি খুব হিম্মতদার মানুষ। সেই তিনি-ই আজ আমার বাড়িতে এসে পাশে থাকার আশ্বাস দিলাম। আমরা অনেকটাই ভরসা পেলাম।”

মনিরুল ফোন না ধরলেও অধীরের লাভপুরে যাওয়াকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। তাঁর মন্তব্য, “যাঁদের পায়ের তলায় মাটি নেই, করার মতো কোনও কাজ নেই, তাঁরাই ফুল্লরা পীঠ দর্শন করতে এসে অস্তিত্ব রক্ষার জন্য ওই সব করে বেড়াচ্ছেন।”

পাশে সৌমিত্রও

তাপস পালের হুমকি-ভাষণ নিয়ে রাজ্য তোলপাড় হলেও তাকে ‘ছোট্ট ঘটনা’ বলেই মনে করছেন দলের যুব সংগঠনের রাজ্য সভাপতি তথা বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খা।ঁ শনিবার পুরুলিয়ায় তাঁর মন্তব্য: “তৃণমূল একটা বড় পরিবার। একটা ছোট্ট ঘটনাকে আপনারা এমন ভাবে দেখাচ্ছেন কেন!” তাঁর পাল্টা প্রশ্ন, “সিপিএম, বিজেপি কেউ কি আগে এমন কিছু বলেনি?”

adhir chowdhury labhpur labhpur gangrape case gangrape rape
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy