Advertisement
E-Paper

সুপ্রিম কোর্টে মান্নানের তোপে মমতা, দুই অরূপও

সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে। সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের উদ্যোগে। আদালত অবমাননার এই মামলাটি দায়ের করার ক্ষেত্রেও তিনিই মুখ্য উদ্যোক্তা। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদার তদন্ত করছে জেনেও মুখ্যমন্ত্রী সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিচ্ছেন মূলত এই অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ০৩:০৫

সুপ্রিম কোর্টে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের হল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে।

সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের উদ্যোগে। আদালত অবমাননার এই মামলাটি দায়ের করার ক্ষেত্রেও তিনিই মুখ্য উদ্যোক্তা। সিবিআই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সারদার তদন্ত করছে জেনেও মুখ্যমন্ত্রী সিবিআইয়ের কাজে বাধা দিচ্ছেন মূলত এই অভিযোগেই তাঁর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে।

কী ভাবে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে?

আবেদনকারীর ব্যাখ্যা, পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্রকে সিবিআই গ্রেফতার করার পরে ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাকে আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রেফতারির প্রতিবাদে শনিবার তৃণমূল নেতাদের পথে নামার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনিই। এমনকী নিজেও হাজির হন ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির নীচে প্রতিবাদ সভায়। এ সবই আদালত অবমাননা ও সিবিআই তদন্তে অসহযোগিতার সামিল বলে মান্নানদের দাবি। শুধু মমতা নন, তাঁর মন্ত্রিসভার দুই অরূপ অরূপ বিশ্বাস ও অরূপ রায়ের বিরুদ্ধেও একই ভাবে আদালত অবমাননার মামলা হয়েছে। ওই দুই মন্ত্রীও শনিবারের সভায় মমতার পাশে হাজির ছিলেন। শনিবারই মদনকে আলিপুর আদালতে তোলার সময় হাঙ্গামা বাধান তৃণমূল সমর্থকেরা। মান্নানের অভিযোগ, মমতা সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন বলেই কোর্ট চত্বরে বিক্ষোভ হয়েছিল। হেনস্থা হয়েছিলেন সিবিআই অফিসারেরা।

আজ মামলা দায়ের করার পর মান্নান বলেন, “পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শুধু আদালতের নির্দেশকেই অমান্য করছেন না, তাঁর দলের কর্মী-সমর্থক এবং সাধারণ মানুষকে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে উস্কে দিয়ে তদন্তের কাজে বাধা তৈরি করতে চাইছেন।” এর আগে আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য কলকাতায় সিবিআই দফতরের সামনে ধর্নায় বসেছিলেন। মান্নানের যুক্তি, “সে সময়ও আদালত অবমাননা হয়েছিল। সেই মামলা এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। আইনমন্ত্রীর পর এ বার মুখ্যমন্ত্রী নিজেই আদালতের অবমাননা করছেন।” সুপ্রিম কোর্টে মুখ্যমন্ত্রী ও অন্য দুই মন্ত্রীর সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘এই ব্যক্তিরা সুপরিচিত। সমাজে এঁদের যথেষ্ট সম্মান রয়েছে। তাঁরা সাংবিধানিক পদে রয়েছেন। জনমত তৈরিতে তাঁদের যথেষ্ট ক্ষমতা রয়েছে। নিজেদের সামাজিক প্রভাব জেনেও তাঁরা ইচ্ছাকৃত ভাবে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে উস্কানি দিতে চেয়েছেন।’ শনিবার কোর্ট চত্বরে হাঙ্গামা নিয়ে সংবাদমাধ্যমের রিপোর্টের অংশ আদালতে পেশ করেছেন মান্নানরা। শুনানির সময়ে ভিডিও রেকর্ডিংয়ের সিডি-ও পেশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

মান্নানের অভিযোগ, মমতা যে আসলে সিবিআই অফিসারদের মনোবল ভেঙে দিতে চাইছেন, আদালত চত্বরের ঘটনাই তার প্রমাণ। শনিবারের ওই বিক্ষোভের পর নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সিবিআই-কে চিঠি দিতে হয়েছিল সল্টলেক এবং বিধাননগরের পুলিশের কমিশনারদের। মঙ্গলবার মদনকে আদালতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে কোনও বিক্ষোভ না হলেও আলিপুর আদালতের মূল ফটকের বাইরে ফের তৃণমূল সমর্থকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। আদালত চত্বরেও অনেক লোক ঢুকে পড়েছিল। তবে এ দিন এজলাসের ভিতরে কোনও হই-হট্টগোল হয়নি।

মান্নানের আইনজীবী শুভাশিস ভৌমিকের যুক্তি, যে জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে শীর্ষ আদালত সারদা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, সেই মামলায় রাজ্য সরকারও অংশীদার ছিল। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে কোনও ক্ষোভ থাকলে রাজ্য সরকার বা মন্ত্রীরা ফের আদালতে আবেদন জানাতে পারতেন। কিন্তু তাঁরা তা করেননি। শুভাশিস বলেন, “সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সময় শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা বলেছিলেন, রাজ্য সরকারকেও তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু সহযোগিতা না করে উল্টে বাধা তৈরি করছে রাজ্য সরকার।”

নতুন মামলার শুনানি কবে হবে? এক আইনজীবী বলেন, ১৯ ডিসেম্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টে শীতকালীন ছুটি পড়ে যাচ্ছে। ৫ জানুয়ারি আদালত খুলবে। তার পরেই এই মামলাটি উঠবে। মামলা গৃহীত হলে মুখ্যমন্ত্রী, অন্য দুই মন্ত্রী ও রাজ্য সরকারকে নোটিস জারি করতে পারে সুপ্রিম কোর্ট।

saradha scam abdul mannan supreme court contempt of court mamata bandyopadhyay
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy