নবান্নের পরে এ বার সিজিও কমপ্লেক্স।
সাংবাদিকেরা নবান্নের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করলে তাঁদের গ্রেফতার করা হতে পারে বলে এর মধ্যেই নির্দেশিকা জারি করেছে রাজ্য সরকার। এ বার সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআই এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র দফতরেও সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ শুরু করে দিল বিধাননগর পুলিশ। ১২ ডিসেম্বর বিকেলে সারদা কাণ্ডে গ্রেফতারের পর থেকে রাজ্যের পরিবহণ ও ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রকে জেরা করা হচ্ছে ওই সিজিও কমপ্লেক্সে সিবিআইয়ের দফতরেই।
সিজিও কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে অবশ্য কোনও সরকারি নির্দেশিকার কথা স্বীকার করেনি বিধাননগর পুলিশ। সেখানে পুলিশ কাউকে আটকায়নি বলে বিধাননগর কমিশনারেটের দাবি। অথচ বৃহস্পতিবার দুই সাংবাদিক অফিসে যাওয়ার চেষ্টা করায় পুলিশ তাঁদের আটকায়। কারণ জানতে চাওয়া হলে কর্তব্যরত পুলিশকর্তারা বলেন, ‘‘উপরমহলের নির্দেশ।” অর্থাৎ সাংবাদিকদের রাশ টানা নিয়ে কমিশনারেট ও পুলিশকর্তাদের বক্তব্যের মধ্যেই সামঞ্জস্য নেই।
এক বার বলা হচ্ছে, নির্দেশিকা নেই। আবার দুই সাংবাদিককে আটকানোর কারণ হিসেবে কোনও কোনও পুলিশকর্তা উপরমহলের নির্দেশের কথা বলেছেন। কোনটা ঠিক? নির্দেশ যদি না-ই থাকবে, তা হলে সিজিও কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না কেন?
বিধাননগরের এডিসিপি দেবাশিস ধর জানান, ওই অফিসে গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলার তদন্ত চলছে। ফলে নিরাপত্তার প্রশ্নে কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। সে-ক্ষেত্রে শুধু সাংবাদিক নয়, সকলেরই গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে পুলিশ-প্রশাসন।
পুলিশ যা-ই বলুক, বৃহস্পতিবার দিনভর সিজিও কমপ্লেক্সে অসংখ্য বহিরাগত যাতায়াত করেছেন। এবং তাঁদের কাউকেই আটকায়নি পুলিশ। একটি সূত্রের খবর, সারদা মামলা চলাকালীন পাকাপাকি ভাবে সিজিও কমপ্লেক্সে পুলিশ মোতায়েন করতে চাইছে প্রশাসন। এই নিয়ে ইতিমধ্যে অফিস-কর্তৃপক্ষ এবং সিবিআইয়ের সঙ্গে বিধাননগর পুলিশের মৌখিক ভাবে কিছু আলোচনাও হয়েছে।
সকালের এই পরিস্থিতির মধ্যেই এ দিন জেরা করা হয়েছে মদনবাবুকে। সিবিআই সূত্রের খবর, জেরায় সারদার ব্যবসা সম্প্রসারণের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। রাতে সিবিআই অফিস থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পথে মদনবাবু প্রশ্ন তোলেন, তিনি অনেক সিপিএম নেতার নাম বলেছেন। সিবিআই তাঁদের ডাকছে না কেন? আজ, শুক্রবার মদনবাবুকে ফের আলিপুর আদালতে তোলার কথা।
সারদা গোষ্ঠীর সঙ্গে মদনবাবুর যোগাযোগ ছিল কি না, থাকলে তা কতটা গভীর, তার হদিস পেতে এ বার বিষ্ণুপুরের একটি মন্দিরের অছি পরিষদের কর্তাদের তলব করেছে ইডি। ২০১০-’১১ আর্থিক বছরে ওই মন্দিরের উন্নয়নের জন্য সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন কোটি টাকা দিয়েছিলেন বলে ইডি-র তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন। কিন্তু মন্দিরের অছি পরিষদ সেই টাকার পুরোটা হাতে পায়নি। ইডি-র দাবি, বিষ্ণুপুরের সেই সময়কার বিধায়ক মদনবাবু সারদার ওই টাকা দেওয়ার ব্যাপারে মধ্যস্থতা করেছিলেন। সেই ব্যাপারেই ইডি-কর্তারা মন্দিরের অছি পরিষদকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy