Advertisement
E-Paper

স্বচ্ছতা আনতে স্মার্ট ফোন পঞ্চায়েতে

পঞ্চায়েতের কাজে স্বচ্ছতা আনতে এ বারে স্মার্ট ফোন দেওয়া হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের। ওই স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে উন্নয়ন বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য ও ছবি ‘আপলোড’ করা যাবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ওয়েবসাইটে। সেখান থেকে তা দেখে নিতে পারবেন যে কেউ।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৪ ০২:৪৯

পঞ্চায়েতের কাজে স্বচ্ছতা আনতে এ বারে স্মার্ট ফোন দেওয়া হচ্ছে গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের। ওই স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে উন্নয়ন বিষয়ক সর্বশেষ তথ্য ও ছবি ‘আপলোড’ করা যাবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের ওয়েবসাইটে। সেখান থেকে তা দেখে নিতে পারবেন যে কেউ।

এই ব্যবস্থা চালু হচ্ছে বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থ সহায়তায়। রাজ্যের ৯টি জেলার যে এক হাজার গ্রাম পঞ্চায়েতে বিশ্বব্যাঙ্কের ‘গ্রাম পঞ্চায়েত সশক্তিকরণ প্রকল্প’ (আইএসজিপি) চলছে, সেগুলিতে ইতিমধ্যেই পঞ্চায়েত প্রধানদের হাতে ওই ফোন তুলে দেওয়া হয়েছে। আইএসজিপি প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যে, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে উন্নয়নের টাকার হিসেব রাখতে প্রশিক্ষণ দেওয়া, এবং স্বচ্ছতা আনতে নানা ব্যবস্থা নেওয়া। পঞ্চায়েতগুলির সাফল্যের অনুপাতে বাড়তি অনুদান দেয় ব্যাঙ্ক।

পঞ্চায়েত দফতর সূত্রে খবর, গ্রামে উন্নয়নের কাজগুলির উপর নজরদারি বাড়ানোর জন্যই স্মার্ট ফোন ব্যবহার করা হবে। ফোনের সঙ্গে প্রতিটি প্রধানকে তাঁর গ্রাম পঞ্চায়েতের একটি মানচিত্র দেওয়া হয়েছে। কোন রাস্তা জেলা পরিষদের বা পূর্ত দফতরের, কোনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের, তার বিবরণ দেওয়া আছে সেখানে। রাস্তার কাজে কেন্দ্রীয় সরকার, রাজ্য সরকার না বিশ্বব্যাঙ্ক কার টাকা ব্যবহার করা হবে, তা গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকেই চিহ্নিত করতে হবে। কোন কাজ একশো দিনের প্রকল্পে করা হবে, সে বিষয়টিও মানচিত্রে চিহ্নিত করতে হবে। পুরো পরিকল্পনাটি স্মার্ট ফোন মারফত পাঠিয়ে দিতে হবে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরে। পরবর্তীকালে পরিকল্পনা মোতাবেক কতটা কাজ হল সে বিষয়টিও ছবি-সহ তুলে পাঠাতে হবে। এগুলি দফতরের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে।

এর ফলে ওয়েবসাইট ক্লিক করে গ্রামবাসী থেকে পঞ্চায়েত দফতরের কর্তা, সকলেই জানতে পারবেন কাজের অগ্রগতি। এতে অনেক ফাঁকিও ধরা পড়বে। যেমন, গ্রাম সংসদের বৈঠক বাধ্যতামূলক হলেও, অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত নির্দিষ্ট সংখ্যক গ্রামবাসী সংসদের বৈঠকে হাজির হন না। তা সত্ত্বেও রেজিস্টারে তাঁদের নাম লিখে পঞ্চায়েত কর্তারা বৈঠকের বিবরণ পঞ্চায়েত দফতরে পাঠিয়ে দেন। কিন্তু স্মার্ট ফোনে সংসদ বৈঠকের ছবি তোলা আবশ্যক করা হলে হিসাবের এই ফাঁকি ধরা পড়ে যাবে।

স্মার্ট ফোনে আরও থাকছে ‘জিওগ্রাফিক ইনফর্মেশন সিস্টেম’ সম্বলিত সফটওয়্যার। ফলে যে কাজটি হচ্ছে তা কোন ভৌগোলিক এলাকায়, তা সঙ্গে সঙ্গে মানচিত্রে নির্দিষ্ট হয়ে যাবে। আইএসজিপি প্রকল্পের বীরভূমের জেলা সঞ্চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, “কোনও সংসদকে কাজের ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হচ্ছে কিনা, কিংবা কোনও বিশেষ রাজনৈতিক দলের দখলে থাকা সংসদেই বেশি কাজ হচ্ছে কিনা সে সবই এই ব্যবস্থায় যে কেউ জানতে পারবেন।” এই নজরদারির ফলে দুর্নীতি কমবে, মনে করেন তিনি।

স্মার্ট ফোন দিলেও, তার ব্যবহার হবে তো? এই আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কতটা স্বচ্ছন্দ হবেন গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানেরা? হাওড়া জেলার আমতা ১ ব্লকের কানপুর গ্রাম পঞ্চায়ের প্রধান নাসিম তরফদার বলেন, “স্মার্ট ফোন তো হাতে পেয়েছি। কিন্তু কীভাবে ব্যবহার করব তা বুঝে উঠতে পারছি না।” বীরভূমে বেশ কিছু প্রধানকে এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, নতুন প্রযুক্তির চাইতেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে ইংরেজি। ইংরেজিতে যাঁরা অভ্যস্ত নন, তাঁদের পক্ষে ফোন ব্যবহার কঠিন।

পঞ্চায়েত দফতরের এক কর্তা জানান, প্রধান অনভ্যস্ত হলে নির্মাণ সহায়ক বা পঞ্চায়েতের অন্য কোনও কর্মী তথ্য আপলোড করবেন। কারণ, নিয়মিত উন্নয়ন-সংক্রান্ত তথ্য পাঠানো অনুদানের টাকা মেলার অন্যতম শর্ত। পঞ্চায়েতগুলি কোনও ভাবেই স্মার্ট ফোন এড়িয়ে যেতে পারবে না।

smart phone panchayat
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy