Advertisement
E-Paper

স্বপ্ন সফল হওয়ার দিনে ডাক পেলেন না নির্মল

আলাদা আলিপুরদুয়ার জেলার দাবিতে সোচ্চার অন্তত বছর তিরিশ। জেলার দাবিতে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতেন বলে প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই চিনতেন ‘জেলা-পাগল বিধায়ক’ বলে। তবে বুধবার জেলা আলিপুরদুয়ারের জন্মলগ্নে সরকারি অনুষ্ঠানে ডাক পেলেন না বৃদ্ধ।

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৪ ০৩:১৫
মুখ্যমন্ত্রী ক্যামেরাবন্দি। আলিপুরদুয়ারে সন্দীপ পালের ছবি।

মুখ্যমন্ত্রী ক্যামেরাবন্দি। আলিপুরদুয়ারে সন্দীপ পালের ছবি।

আলাদা আলিপুরদুয়ার জেলার দাবিতে সোচ্চার অন্তত বছর তিরিশ। জেলার দাবিতে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াতেন বলে প্রশাসনের কর্তাদের অনেকেই চিনতেন ‘জেলা-পাগল বিধায়ক’ বলে। তবে বুধবার জেলা আলিপুরদুয়ারের জন্মলগ্নে সরকারি অনুষ্ঠানে ডাক পেলেন না বৃদ্ধ। আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক আরএসপি নেতা নির্মল দাস।

কেন এল না ডাক? প্রশ্ন শুনে এই সত্তরোর্ধ্বের মন্তব্য, “দল ও সরকার এক হয়ে গেলে কী হয়, তা অতীতেও দেখেছি। এখনও দেখছি!” বেলা ২টোয় শহরের প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কথা। ডাক পেলে সরকারি সে অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য তৈরিও ছিলেন ‘আলিপুরদুয়ার জেলা নির্মাণ দাবি মঞ্চ’-এর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা নির্মলবাবু। ডাক আসেনি। মঞ্চে যখন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “আজ নতুন এক ইতিহাসের জন্ম হল। যা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে”, বৃদ্ধ তখন সাদা ধুতি-পাঞ্জাবি পরে সরকারি আমন্ত্রণের প্রতীক্ষায়।

এক মঞ্চে

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে (বাঁ দিক থেকে) জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল ও জেলাশাসক পৃথা সরকার।
(ডান দিকে) নবগঠিত আলিপুরদুয়ার জেলার জেলাশাসক অ্যালিস ভেজ ও পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল।
বুধবার আলিপুরদুয়ার প্যারেড গ্রাউন্ডে সন্দীপ পালের তোলা ছবি।

কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না জেলার জন্য দীর্ঘদিন আন্দোলন করা মানুষটিকে? তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর সূত্রের খবর, মঙ্গলবার দুপুরে নবান্ন থেকে আমন্ত্রণপত্র জলপাইগুড়িতে পৌঁছয়। সেই সঙ্গে কাদের আমন্ত্রণ করা হবে, তার তালিকাও ছিল। তবে তাতে নির্মলবাবুর নাম ছিল না। জলপাইগুড়ি জেলার তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিক জগদীশচন্দ্র রায় বলেন, “বর্তমান বিধায়ক ও সাংসদদের সবাইকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে।”

কিন্তু রাজনৈতিক সৌজন্যের খাতিরেও কি নির্মলবাবুকে মঞ্চে ডাকা যেত না? তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলার চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী জানান, সিপিএম, আরএসপি, কংগ্রেসসব দলের দফতরে ১০টি করে আমন্ত্রণ পত্র পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট দলীয় নেতৃত্ব যাতে পছন্দমতো প্রতিনিধিদের পাঠাতে পারেন, তাই ওই আমন্ত্রণপত্রগুলিতে আলাদা করে কারও নাম লেখা ছিল না। সৌরভবাবু বলেন, “কংগ্রেস প্রতিনিধি পাঠিয়েছে। আরএসপি-র তরফে নির্মলবাবু আসতেই পারতেন।”

এই বিতর্কের জেরেই আমন্ত্রণ পেয়েও সরকারি অনুষ্ঠানে যাননি বলে দাবি আরএসপি-র কুমারগ্রামের বর্তমান বিধায়ক মনোজ ওরাঁওয়ের। তাঁর বক্তব্য, “যে মানুষটার (নির্মলবাবু) আন্দোলনের পরে আলিপুরদুয়ার নতুন জেলা হল, তাঁকেই যখন আলাদা ভাবে গুরুত্ব দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি, সরকারি অনুষ্ঠানে আমার যাওয়া বা না-যাওয়ায় কিছু এসে যায় না।”

সরকারি ভাবে আলিপুরদুয়ারকে জেলা ঘোষণা করা হয়েছে বিকেল ৩টে নাগাদ। প্রায় একই সময় পর্যন্ত অপেক্ষা করে লেখালিখি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন নির্মলবাবু। তার অনেক ক্ষণ পরেও জেলার বহু বাসিন্দারই ফোন গিয়েছে তাঁর কাছে, আলাদা আলিপুরদুয়ারের জন্য লড়াই করায় ধন্যবাদ জানিয়ে। “আলিপুরদুয়ারকে জেলার স্বীকৃতি দেওয়ায় ধন্যবাদ প্রাপ্য মুখ্যমন্ত্রীর” মনে করিয়ে দিয়ে বৃদ্ধের সংযোজন, “আজ খুব আনন্দের দিন, জানেন! দুঃখেরও।”

alipurduar mamata namitesh ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy