Advertisement
E-Paper

সবুজ মুকুট

রাসায়নিক সার-কীটনাশক আর নয়। জৈব সারের ব্যবহারে জৈব চাষে নতুন দিশা দেখাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের খঞ্চি। এই সবুজ বিপ্লবের পুরোধা গ্রামেরই বাসিন্দা গুরুপদ সামন্ত। পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বছর একান্নর গুরুপদবাবুর বাড়ি খঞ্চি বাজারের কাছে। তিন তলা বাড়ির ছাদ ভরে রয়েছে কেঁচো সার তৈরির একাধিক পাত্র।

তথ্য: আনন্দ মণ্ডল।

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:৫০
জৈব সারের ব্যবহারে বেড়েছে বেগুনের ফলন। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

জৈব সারের ব্যবহারে বেড়েছে বেগুনের ফলন। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।

রাসায়নিক সার-কীটনাশক আর নয়। জৈব সারের ব্যবহারে জৈব চাষে নতুন দিশা দেখাচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারের খঞ্চি। এই সবুজ বিপ্লবের পুরোধা গ্রামেরই বাসিন্দা গুরুপদ সামন্ত। পেশায় হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক বছর একান্নর গুরুপদবাবুর বাড়ি খঞ্চি বাজারের কাছে। তিন তলা বাড়ির ছাদ ভরে রয়েছে কেঁচো সার তৈরির একাধিক পাত্র। বাড়ির ছাদের উপরে ক্যালেন্ডুলা, অ্যালোভেরা, নিশিন্দা, নিম, মুশাকানি, থানকুনি পাথরকুচি-সহ প্রায় একশো ভেষজ গাছের চাষ। জৈব সারের গুণগত মান বাড়ানোর জন্য এই সব ভেষজ গাছ-পাতা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। গুরপদবাবু বলেন, ‘‘চিকিৎসা করতে গিয়ে দেখেছি রোগজ্বালা ক্রমশ বাড়ছে মানুষের। এর একটা কারণ দৈনন্দিন জীবনে যে সব খাবার খাচ্ছি, তার চাষে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার হচ্ছে। অজান্তেই এই সব রাসায়নিক ঢুকে যাচ্ছে শরীরে।’’ সমস্যার একমাত্র সমাধান জৈব পদ্ধতিতে চাষ। সেটা বুঝে বছর দশেক আগে প্রথমে জৈব পদ্ধতিতে কেঁচো সার তৈরি ও তা ব্যবহারের প্রশিক্ষণ নেন গুরুপদবাবু। এরপর ওই সার তৈরি করে নিজের জমিতে ধান, সব্জি চাষে ব্যবহার করেন। প্রক্রিয়াটি সহজ ও পরিবেশবান্ধব। রাসায়নিক সার কিনতে হয় না বলে চাষের খরচ কম। গুরুপদবাবুর উৎসাহে গ্রামের আরও কিছু চাষি জৈব পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেন। এখন গ্রামের প্রায় ৯৫টি পরিবার কেঁচো সার তৈরি করে। নিজেদের জমিতে ওই সার ব্যবহারের পাশাপাশি অনেকেই তা বিক্রি করে নতুন আয়ের পথ খুঁজে পেয়েছেন। খঞ্চি গ্রামের বাসিন্দা বছর পঞ্চান্নর কালীপদ মাইতি নিজেদের দু’বিঘে জমিতে ধান চাষ ছাড়াও কয়েক পুরুষ ধরেই পান চাষ করছেন। আগে রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের খরচ জোগাতে গিয়ে লাভ প্রায় কিছুই থাকত না। গুরুপদবাবুর পরামর্শ শুনে ২০০৯ সাল থেকে জৈব ধান চাষ শুরু করেন কালীপদবাবু। পরে পান, আদা, হলুদ, ওল চাষেও জৈব সার ব্যবহার করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘চাষের সারের খরচ অনেকটা কমে গিয়েছে। পরিবেশ বান্ধব এই চাষে কীটনাশকও লাগছে না। গত দু’বছর নিজের বাড়িতেই কেঁচো সার বানাচ্ছি। তাতে খরচ আরও কমেছে।’’ খঞ্চি গ্রামের কৃষকদের জৈব সারের ব্যবহারকে মডেল হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে কৃষি দফতরও। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা (প্রশাসন) সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, ‘‘ ওই গ্রামকে মডেল হিসেবে তুলে ধরে অন্য এলাকার কৃষকদেরও জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy