Advertisement
E-Paper

হাইকোর্টে কাজ বন্ধের বিরুদ্ধে সরব এজি-ও

হুটহাট কর্মবিরতির বিরুদ্ধে অনমনীয় থেকে এক শ্রেণির আইনজীবীকে আগেই পাশে পেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার উচ্চ আদালতের সুরে সুর মেলালেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জয়ন্ত মিত্রও। এজি শুক্রবার জানিয়ে দেন, কথায় কথায় হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশের পূর্ণ বা অর্ধদিবস কর্মবিরতির পথে যাওয়ার ব্যাপারটাকে তিনি কোনও ভাবেই সমর্থন করেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:১৪

হুটহাট কর্মবিরতির বিরুদ্ধে অনমনীয় থেকে এক শ্রেণির আইনজীবীকে আগেই পাশে পেয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। এ বার উচ্চ আদালতের সুরে সুর মেলালেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জয়ন্ত মিত্রও। এজি শুক্রবার জানিয়ে দেন, কথায় কথায় হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশের পূর্ণ বা অর্ধদিবস কর্মবিরতির পথে যাওয়ার ব্যাপারটাকে তিনি কোনও ভাবেই সমর্থন করেন না।

কোনও আইনজীবীর মৃত্যুতে কখনও সকাল ১০টা, কখনও বেলা ২টোর পরে আবার কখনও বেলা সাড়ে ৩টে পরে হাইকোর্টে কর্মবিরতি পালন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে, সারা দেশের আইন বিভাগের সঙ্গে যুক্ত নানা শিবিরের কটাক্ষের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন এজি নিজেই। তিনি জানান, যখন-তখন কর্মবিরতির বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্ট এবং অন্যান্য রাজ্যের হাইকোর্টের আইনজীবীদের মন্তব্য শুনে প্রায়শই বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। এজি বলেন, “আমি সুপ্রিম কোর্ট বা অন্য রাজ্যের হাইকোর্টে মামলা লড়তে গেলে ওঁরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, কলকাতা হাইকোর্ট আজ খোলা আছে কি!”

জয়ন্তবাবু এ দিন বি-বা-দী বাগ এলাকায় একটি বণিক সংগঠনের আলোচনাসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন। সেখানেই একটি প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমি কোনও ভাবেই এই ধরনের কর্মবিরতি সমর্থন করি না। আমি মনে করি, এক জন আইনজীবীর কাজ যেমন বিচারের কাজে আদালতকে সাহায্য করা, তেমনই নিজের মক্কেলদের স্বার্থও তাঁকে রক্ষা করতে হবে।”

কর্মবিরতির ‘সংস্কৃতি’র বিরুদ্ধে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেই থেমে থাকেননি এজি। নানা ছুতোয় কাজ বন্ধ রাখার উদ্যোগ কী ভাবে প্রতিহত করা যেতে পারে, তার সম্ভাব্য পথও বাতলে দিয়েছেন। এবং এ ক্ষেত্রে বিচারপতিদের বড় ভূমিকা আছে বলে মনে করেন জয়ন্তবাবু। তাঁর মতে, বিচারপতিরা কাজ বন্ধ রাখার ডাকে সাড়া না-দিলেই আদালত বহুলাংশে সচল রাখা সম্ভব। বিষয়টি ইতিমধ্যে প্রস্তাবের আকারে বিচারপতিদের কাছে তুলেও ধরেছেন এজি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী হাইকোর্ট বছরে কমপক্ষে ২১০ দিন সচল রাখার জন্য চার বিচারপতিকে নিয়ে গড়া কমিটি ইদানীং প্রায়ই বৈঠকে বসছে। অধিকাংশ বৈঠকে হাজির থাকেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল। হাইকোর্ট সূত্র জানাচ্ছে, ওই কমিটির কাছেই এজি প্রস্তাব দিয়েছেন, পূর্ণ বা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের ডাক দেওয়া হলেও বিচারপতিরা যাতে সেই ডাকে সাড়া না-দেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

কী ভাবে সেটা করা যাবে?

হাইকোর্ট সূত্রের খবর, অ্যাডভোকেট জেনারেল ওই কমিটির কাছে বলেছেন, পূর্ণ বা অর্ধদিবস কর্মবিরতি পালনের প্রস্তাব নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়ে এজলাস বন্ধ রাখার আবেদন নিয়ে কোনও বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা কোনও বিচারপতির কাছে হাজির হতেই পারেন। কিন্তু বিচারপতিরা যদি এজলাস থেকে না-ওঠেন, সে-ক্ষেত্রে কর্মবিরতির ডাক সত্ত্বেও যে-সব আইনজীবী মামলা লড়তে ইচ্ছুক, তাঁরা অন্তত নিজেদের মক্কেলদের স্বার্থ রক্ষা করার সুযোগ পাবেন। এই ভাবে বিচারপতিরা অনড় থাকলে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে পারে বলে মনে করেন বলে জয়ন্তবাবু।

বিচারপ্রার্থীদের স্বার্থ দেখার জন্যই শীর্ষ আদালত বিধিবদ্ধ ছুটির বাইরে যথাসম্ভব বেশি দিন আদালত খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছে। সেই অনুযায়ী বছরে ২১০ দিন আদালত চালু রাখা নিশ্চিত করার পথ খুঁজতেই কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর চার বিচারপতিকে নিয়ে একটি কমিটি গড়ে দিয়েছেন। সেই কমিটি ইতিমধ্যে একটি সুপারিশও পাঠিয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, ঘোষিত ছুটির বাইরে কোনও কারণে হাইকোর্ট পুরো দিন বন্ধ রাখা হলে শনিবার কাজ করে তা পুষিয়ে দিতে হবে। এজি-র প্রস্তাব সেই কমিটির হাত আরও শক্ত করবে বলেই মনে করছে আইন ও বিচারের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শিবির।

high court calcutta
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy