দীর্ঘকাল বাদে শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তার আগে এ দিন দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দলের সদর দফতরের বাইরে জড়ো হওয়া কর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধল পুলিশের। এই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কিছু পুলিশ-সহ বহু বিএনপি কর্মী। দলটির দফতরে ঢুকে পুলিশ কর্মীদের বেদম লাঠিপেটা করে কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে আটক করে নিয়ে গিয়েছে বলে বিএনপি-র নেতৃত্ব জানিয়েছেন। পুলিশ যেমন লাঠি, কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার করেছে, পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুড়েছেনবিএনপি কর্মীরা।
সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের নানা শহরে সমাবেশ করে সাড়া মেলার পরে শনিবার ঢাকায় মহাসমাবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। কিন্তু কোথায় সেই সমাবেশ হবে, তা নিয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে টালবাহানা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ বিএনপি নেতৃত্বের। তার ফলে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে কর্মীদের মধ্যে। এ দিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে কর্মী-সমর্থকেরা আগাম ঢাকায় পৌঁছে নয়া পল্টনে দলের দফতর ও তার বাইরে জড়ো হন। পুলিশের দাবি, এর ফলে রাস্তা বন্ধ হয়ে গেলে তারা ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে যানবাহন চলাচল শুরু করতে গেলে বিএনপি কর্মীদের সঙ্গে বচসা হয়। কিছু কর্মী পুলিশকে নিশানা করে ইট ছুড়তে থাকে। পুলিশ পাল্টা লাঠি চালালে সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশকর্তা মোহাম্মদ হায়াতুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় বেশ কিছু পুলিশ জখম হয়েছেন। এর পরে কাঁদানে গ্যাস ও রাবার বুলেট ব্যবহার হয়। দাঙ্গাপুলিশের বাহিনী সোয়াট-ও নামে। বেশ কয়েক জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বছর তিরিশের এক যুবককে ডাক্তাররা মৃত বলে ঘোষণা করেন। তাঁর শরীরে গুলির ছররার দাগ ছিল।
এর পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী বিএনপির দফতরে ঢুকে তল্লাশি চালায়। আটক হওয়ার আগে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভি অভিযোগ করেন, দফতরে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ২ হাজার কর্মীকে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। নিজেরাই বিস্ফোরক নিয়ে এসে তা পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে। মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগিরকে দফতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় পুলিশ জানায়, বিএনপি অফিসে তাদের তল্লাশি শেষ হয়েছে। কয়েকশো নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। দফতরে কয়েকটি ককটেল বোমাও মিলেছে। ঢাকার কেন্দ্রস্থলে এই সংঘর্ষের কারণে বুধবার দুপুর থেকেই ঢাকার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে যায়। যানজট ছড়িয়ে পড়ে গোটা শহরে।