Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪
পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়

যোগ্যতা নেই, নাম বাদ ২৫ ভারতীয় পড়ুয়ার

পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্পট অ্যাডমিশন’। ১৭ হাজার ডলার পর্যন্ত স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ। বি়জ্ঞাপন দেখে দেরি করেননি পড়ুয়ারা। নিয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে এ বছর জানুয়ারি মাসে পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ৬০ জন ভারতীয় পড়ুয়া।

সংবাদ সংস্থা
নিউ ইয়র্ক শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৬ ০২:৪৩
Share: Save:

পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্পট অ্যাডমিশন’। ১৭ হাজার ডলার পর্যন্ত স্কলারশিপ পাওয়ার সুযোগ।

বি়জ্ঞাপন দেখে দেরি করেননি পড়ুয়ারা। নিয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে এ বছর জানুয়ারি মাসে পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন ৬০ জন ভারতীয় পড়ুয়া। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনকে এখন মাঝপথেই বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হচ্ছে। কেন?

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভর্তির পরেই কর্তৃপক্ষ খেয়াল করেছিলেন যে, মান বা নম্বরের নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিরই যোগ্য নন ওই ২৫ জন। তবু এই পড়ুয়ারা ইতিমধ্যেই টাকা দিয়ে ভর্তি হয়ে গিয়েছেন বলে তাঁদের মান উন্নয়নের জন্য কিছু দিন সময় দেওযা হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে নানা সুষোগও দেওয়া হচ্ছিল এই সব পড়ুয়াকে। কিন্তু বেশ কয়েক মাস পার হয়ে গেলেও তাঁদের অবস্থা তিমিরেই। তাই এ বার বাধ্য হয়েই তাঁদের দরজা দেখাতে হচ্ছে।

কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের প্রধান জেমস গ্যারি সোমবার জানান, তাঁর বিভাগে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়ার যে যোগ্যতা দরকার, সেই কোঠা ছুঁতেই পারেননি অন্তত ৪০ জন ভারতীয় পড়ুয়া। যাঁদের মধ্যে ২৫ জনের অবস্থা খুবই খারাপ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের সঙ্গে আপস করতে নারাজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, কম্পিউটার প্রোগ্রামটুকুও লিখতে পারেন না ওই পড়ুয়ারা। যা এই পাঠ্যক্রমের ক্ষেত্রে আবশ্যিক। অধ্যাপক গ্যারির কথায়, ‘‘এই পড়ুয়ারা খামতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরোলে আমার বিভাগের এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বদনাম হবে।’’

বিশ্ববিদ্যালয় এখন ওই ছাত্রদের প্রস্তাব দিয়েছে, অন্য কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে জায়গা খুঁজে নিন তাঁরা। আর সে রকম কোনও সুযোগ না পেলে? মার্কিন ভিসার চুক্তি অনুযায়ী, দেশে ফেরা ছাড়া গতি থাকবে না তাঁদের।

পড়ুয়াদের অবশ্য দাবি, প্রথম সেমেস্টার পেরিয়ে যাওয়ার পরে এ রকম নির্দেশিকা জারি করা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একদমই অনুচিত হয়েছে। তাঁদের প্রশ্ন, ভর্তির আগেই পড়ুয়াদের মান বিচার করে নেয়নি কেন বিশ্ববিদ্যালয়টি?

ছাত্রছাত্রী এবং বিশ্ববিদ্যালয়, দু’পক্ষই এখন দুষছে নিয়োগকারী সংস্থাকে। আমেরিকায় এখন বহু বিশ্ববিদ্যালয়ই নিয়োগ সংস্থার মাধ্যমে বিদেশি পড়ুয়া জোগাড় করে। এমনই একটি সংস্থা পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে ভারত থেকে ছাত্র জোগাড় করেছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী, পড়ুয়া-পিছু দু’হাজার ডলার পাবে সংস্থাটি। তবে এক জন ছাত্রকে অন্তত দু’সেমেস্টার পড়তে হবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ফলে পড়ুয়া পেতে মরিয়া বিভিন্ন নিয়োগ সংস্থার লোভনীয় বিজ্ঞাপন চোখে পড়া মাত্রই আসে আবেদনপত্রের জোয়ার। হবে না-ই না কেন! এক দিনের মধ্যে হাতে এসে যাচ্ছে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠি। আর ন্যূনতম যোগ্যতার পরীক্ষা ছাড়াই দেদার ভর্তির ছাড়পত্র দিয়ে দিচ্ছে নিয়োগকারী সংস্থা। কারণ, যত বেশি পড়ুয়া ভর্তি করাতে পারবে, লাভের অঙ্ক তত বাড়বে এই সংস্থার। যা হয়েছিল পশ্চিম কেন্টাকি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও।

সামনের বার সম্ভাব্য পড়ুয়াদের মান যাচাইয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়েরই কাউকে ভারতে পাঠানো হবে, জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE