Advertisement
E-Paper

ট্রাম্পের নীতির কোপে দুধের শিশুও মা-ছাড়া

সম্প্রতি একটি মার্কিন সংবাদপত্রের রিপোর্টে উঠে এসেছে কনস্তানতিনের কথা। ২০১৮ সালে রোমানিয়া থেকে মার্কিন সীমান্তে এসেছিল মুটু পরিবার। শিশুটির বাবা ভাসিলে ও মা ফ্লোরেনটিনা সংখ্যালঘু রোমা সম্প্রদায়ের মানুষ।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০১৯ ০০:২২
কনস্তানতিন তখন চার মাসের। ছবি সোশ্যাল মিডিয়া।

কনস্তানতিন তখন চার মাসের। ছবি সোশ্যাল মিডিয়া।

আট মাস বয়সে মায়ের কোলে ফিরে তাঁকে আর চিনতেই পারেনি খুদে কনস্তানতিন। অভিবাসী নিয়ন্ত্রণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘জ়িরো টলারেন্স’ নীতির সব চেয়ে খুদে এই ‘শিকার’ মাত্র চার মাস বয়সে আলাদা হয়ে গিয়েছিল বাবা-মায়ের থেকে। মার্কিন সীমান্তে পরিবারের কাছ থেকে দুধের শিশুকে কেড়ে নিয়েছিলেন অভিবাসন কর্মীরা। বিশ্ব জুড়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে ট্রাম্প সে নীতি থেকে সরে এসেছেন। কিন্তু দেড় বছর বয়সে এখনও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেনি সেই খুদে।

সম্প্রতি একটি মার্কিন সংবাদপত্রের রিপোর্টে উঠে এসেছে কনস্তানতিনের কথা। ২০১৮ সালে রোমানিয়া থেকে মার্কিন সীমান্তে এসেছিল মুটু পরিবার। শিশুটির বাবা ভাসিলে ও মা ফ্লোরেনটিনা সংখ্যালঘু রোমা সম্প্রদায়ের মানুষ। দীর্ঘদিনের দাসত্ব, হিংসা, অভাব, বৈষম্যের হাত থেকে মুক্তি পেতে আমেরিকায় আশ্রয় নেওয়ার কথা ভাবে পরিবারটি। বাড়িঘর বিক্রি করে মেক্সিকোর উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন তাঁরা। পাচারকারীরা তাঁদের মার্কিন সীমান্ত পার করে দেওয়ার লোভ দেখায়। নতুন জীবন ও ভাল থাকার ইচ্ছে উপেক্ষা করতে না-পেরে পাঁচ সন্তানের মধ্যে সব চেয়ে ছোট দু’টিকে নিয়ে যাত্রা শুরু করেন ভাসিলে ও ফ্লোরেনটিনা। কোলে-পিঠে যাচ্ছিল কনস্তানতিনও।

কিন্তু সীমান্তে যাওয়ার জন্য বাস ধরার পরেই আলাদা হয়ে যান ভাসিলে ও ফ্লোরেনটিনা। কনস্তানতিনকে নিয়ে সীমান্তে পৌঁছে যান ভাসিলে। সেখানে পৌঁছতেই কোনও ব্যাখ্যা ছাড়া শিশুটিকে কেড়ে নেন অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। পরে ভাসিলে বলেছেন, ‘‘ওরা আমায় দু’মাস আটকে রেখেছিল। পুলিশ আমায় দিয়ে ঘর মোছাত। আমি নাগাড়ে কান্নাকাটি করতাম ছেলের জন্য। ওদের বলেছিলাম আমি ইংরেজি বুঝতেও পারি না, বলতে পারি না।’’ অন্য দিকে, সন্তান-সহ ফ্লোরেনটিনাকে রোমানিয়ায় ফেরত পাঠানো হয় সীমান্ত থেকেই।

আরও পড়ুন: ভারতের দাবি মেনেই শেষ পর্যন্ত ফেরানো হল নিরপেক্ষ পিচ-প্রধানকে

ছেলেকে ফেরত পাওয়ার আশায় দিন গুনতে থাকেন ভাসিলে। তত দিনে মিশিগানে পালক পরিবারের কাছে পৌঁছে গিয়েছে খুদে কনস্তানতিন। নিরিবিলি এক গ্রামে আদরযত্নেই বড় হতে থাকে সে। তার সেই বড় হয়ে ওঠার মুহূর্তগুলির ভিডিয়ো করতে থাকেন পালক মা। কনস্তানতিনের আট মাস বয়সে অভিবাসন সংক্রান্ত আদালত তাকে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার অনুমতি দেয়। কিন্তু তত দিনে নিজের মাকে ভুলে গিয়েছে দুধের শিশু। মায়ের কোলে ফিরেও পালক মায়ের জন্য কান্না থামে না তার। সম্পূর্ণ অন্য পরিবেশে, অন্য ধরনের মানুষের মধ্যে এসে আতঙ্কে ভুগতে থাকে শিশুটি। দরিদ্র পরিবারটির চালচলন, পরিবেশ, দৈনন্দিনের লড়াইয়ে কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে সে। বর্তমানে দেড় বছরের বেশি বয়স হলেও এখনও বুলি ফোটেনি কনস্তানতিনের। একা হাঁটতেও শেখেনি সে।

কনস্তানতিন অবশ্য একা নয়। তথ্য বলছে, ট্রাম্পের নীতির জেরে ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে মে মাসের মধ্যে ১৯৫৫ জন শিশুকে বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল তাদের বাবা-মায়ের থেকে। পরে তারা পরিবারে ফিরলেও আতঙ্ক কাটেনি।

Constantin Mutu Immigrant Mexico USA
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy