মুলতানের হাসপাতালে ছাদে পচতে থাকা মৃতদেহ দেখছেন মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা চৌধুরি জ়ামান গুজ্জর। টুইটার থেকে নেওয়া।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশের হাসপাতাল থেকে পচন ধরা যে ৪০০ মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে, তা কাদের? শনিবার এই ঘটনা সম্পর্কে একাধিক তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে। মনে করা হচ্ছে, ওই লাশগুলি সম্ভবত বালোচ বা পাশতুনদের। ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে জোর করে যাদের গুম করার অভিযোগ দীর্ঘ দিনের।
মুলতানের পঞ্জাব নিশতার হাসপাতালে যে ৪০০টি মৃতদেহ পাওয়া গিয়েছে তার মধ্যে বহু দেহ থেকে অঙ্গপ্রতঙ্গ বার করে নেওয়ার চিহ্ন মিলেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক দাবি করেছেন, শারীরিক গঠন এবং পরনের পোশাক দেখে প্রাথমিক ভাবে মৃতদেহগুলো বালোচ বা পাশতুনদের বলে মনে করা হচ্ছে। বালোচ বা পাশতুনদের শারীরিক গঠন পাহাড়ি এলাকায় মানুষের শারীরিক গঠনের মতো। এই প্রসঙ্গে সঠিক উত্তর পাওয়ার একমাত্র পথ হল ডিএনএ পরীক্ষা করানো। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই চিকিৎসকের দাবি, মুলতানের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃতদেহগুলোর ডিএনএ পরীক্ষা করাবে না বলে ঠিক করেছে যাতে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া যায়।
এখনও চিহ্নিত না হওয়া দেহগুলো বালুচিস্তান এবং খাইবার পাখতুনখোওয়া (কেপি) প্রদেশের বাসিন্দাদের বলেই মনে করা হচ্ছে। দীর্ঘ দিন ধরেই পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে এই দুই অঞ্চলের বাসিন্দাদের গুম করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইকে পঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা চৌধুরি জ়ামান গুজ্জর জানিয়েছেন, তিনি হাসপাতাল পরিদর্শন করছিলেন। সেই সময় এক ব্যক্তি এসে তাঁকে বলেন, ‘‘আপনি যদি সত্যি ভাল কাজ করতে চান তাহলে মর্গে যান। নিজের চোখে দেখুন কী চলছে।’’ জ়ামান জানিয়েছেন, তিনি হাসপাতালের মর্গে পৌঁছলে তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেন কর্মীরা। কিন্তু তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘মর্গে ঢুকতে না পারলে সবার বিরুদ্ধে এফআইআর করব।’’ জ়ামানের আরও দাবি, তিনি যখন চিকিৎসকদের লাশের স্তূপের কথা জিজ্ঞাসা করেন তখন জবাব পান, ওই দেহগুলি চিকিৎসা বিজ্ঞানের পডুয়াদের ব্যবহারের জন্য রাখা হয়েছিল।
বালোচের বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতারা পাকিস্তানের বাহিনীর বিমাতৃসুলভ ব্যবহারের অভিযোগে দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের কড়া নেড়ে চলেছে। তাঁদের অভিযোগ, পাকবাহিনী ওই এলাকার পুরুষদের তুলে নিয়ে যাওয়াকে অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছে। এক বার তুলে নিয়ে গেলে আর তার খোঁজ মেলে না বলেও দাবি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের। এ বার তাঁদের দাবি, সব ক’টি মৃতদেহের ডিএনএ পরীক্ষা করানোর। রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার সংগঠনেও তাঁরা এই দাবি জানিয়েছেন।
এ দিকে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পাকিস্তান সরকার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। দক্ষিণ পঞ্জাব স্বাস্থ্য দফতর এ বিষয়ে তদন্তের জন্য ছয় সদস্যের কমিটি তৈরি করেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy