নিথর: ভূমিকম্পে ভেঙে পড়েছে মসজিদ। চলছে দেহ উদ্ধার। সোমবার উত্তর লম্বকে। ছবি: এএফপি।
ছুটির দ্বীপ। বছরভর দেশ-বিদেশের পর্যটকের ভিড়। আর পাঁচটা দিনের মতো রবিবার সন্ধ্যাতেও পার্টি, গানবাজনা, হুল্লোড়ে মেতে উঠেছিল ইন্দোনেশিয়ার লম্বক। হঠাৎই কেঁপে উঠল মাটি।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সর্বেক্ষণ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৬.৯। এখন পর্যন্ত ৯৮ জনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। জখম অন্তত ২০০ জন। সন্ধে পৌনে সাতটার ওই ভূমিকম্পের পরে অন্তত শ’খানেক ভূকম্প-পরবর্তী কম্পন অনুভূত হয়েছে। মৃতের সংখ্যা বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের।
দেশের বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার এক কর্তা জানান, লম্বকের উত্তর অংশে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। বেশির ভাগ বাড়িই ধ্বংসস্তূপ। দ্বীপের কোথাও বিদ্যুৎ নেই। যোগাযোগ রক্ষাকারী সেতুগুলো ভেঙে পড়েছে। যার জেরে উদ্ধারকাজ আরও ব্যাহত হচ্ছে। লম্বকের মূল শহর মাতরমের হাল সব চেয়ে খারাপ। ফাঁকা করে দিতে হয়েছে হাসপাতালও। বাইরের চৌহদ্দিতে উপচে পড়েছে রোগীর ভিড়, চলছে চিকিৎসা। বালিতেও ঘরবাড়ি, শপিং মল, মন্দিরের দেওয়ালে ফাটল ধরেছে।
গত সপ্তাহেই ৬.৪ তীব্রতার ভূমিকম্প হয়েছিল লম্বকে। ১৬ জন মারা যান। ক্ষয়ক্ষতি সামলাতে না সামলাতেই ফের। প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো বলেন, ‘‘ভয়াবহ অবস্থা। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী সব রকম চেষ্টা করছে।’’
লম্বকের কাছে প্রবাল প্রাচীরে ঘেরা গিলি দ্বীপ থেকে অন্তত ১২০০ বিদেশি পর্যটককে উদ্ধার করা হয়েছে। ২৮ বছর বয়সি ব্রিটেনের বাসিন্দা জেমস কেলসাল প্রেমিকাকে নিয়ে গিলি-তে এসেছিলেন। উদ্ধারকারী দলের সাহায্যের অপেক্ষায় তিনি। বললেন, ‘‘সুনামির সতর্কতার কথা শুনে সবাই খুব ভয় পেয়ে গিয়েছিল। লোকজন লাইফ জ্যাকেট পরে নেন। পরে জানা যায় গুজব। চার দিকে আতঙ্কের ছায়া।’’
শিলিগুড়ি থেকে গিলি-তে ছুটি কাটাতে এসেছিলেন একই পরিবারের ১২ জন। কোনও মতে একটি হেলিকপ্টার ভাড়া করে দ্বীপ থেকে বালিতে চলে এসেছেন তাঁরা। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
লম্বকের মাতরমে সুরক্ষা ও সন্ত্রাস-দমন সংক্রান্ত একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকেরা জড়ো হয়েছিলেন। দ্রুত উদ্ধার করা হয় তাঁদের। সিঙ্গাপুরের আইন ও স্বরাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী কে সন্মুগম ফেসবুকে জানান, হোটেলের এগারো তলায় ছিলেন তিনি। হঠাৎই দুদ্দার
করে কাঁপতে থাকে ঘর। বললেন, ‘‘দাঁড়িয়ে থাকতে পারছিলাম না। চোখের সামনে ফাটল ধরে গেল দেওয়ালে। তার পরেই বিদ্যুৎ চলে গেল। বাইরে থেকে চিৎকার শুনতে পাচ্ছি, সিঁড়ি দিয়ে নেমে এস। বাড়িটা তখনও দুলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy