তিন জনে ঝাঁপিয়ে পড়ল আমার ওপর, জানালেন তালিবান ডেরায় ধর্ষিতা

ধাক্কা মেরে তাঁকে ঘরের মেঝেতে ফেলে দিয়ে এক এক করে খুলে নেওয়া হয়েছিল তাঁর পোশাক। আর সেগুলি ছুড়ে ফেলা হয়েছিল ঘরের এখানে ওখানে। তার পর কেটল্যানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল তালিবান জঙ্গিরা। পর পর ধর্ষণ করেছিল তিন তালিবান জঙ্গি। গণধর্ষণের পর কেটল্যানকে তাঁর পোশাকগুলিও আর ফেরত দেয়নি জঙ্গিরা।

স্বামী, তিন সন্তানকে নিয়ে আফগানিস্তানে তালিবান ডেরায় তাঁর টানা পাঁচ বছর বন্দি থাকার দিনগুলির কথা জানিয়েছেন হালে মুক্তি পাওয়া ৩১ বছর বয়সী কেটল্যান কোলম্যান বয়েল।

আরও পড়ুন- পরিচারিকা নিগ্রহের দায়ে জেলে ভারতীয় বংশোদ্ভূত​

আরও পড়ুন- সরার নাম নেই, টিভি বিবৃতি দিলেন মুগাবে​

সেটা ২০১২ সাল। তখন সদ্য কানাডার নাগরিক জোশুয়া বয়েলকে বিয়ে করেছেন কেটল্যান। ঘুরতে গিয়েছিলেন আফগানিস্তানে। সেখানেই এক দিন কেটল্যান ও জোশুয়াকে অপহরণ করে তালিবান জঙ্গিরা। চোখে কাপড় বেঁধে, বন্দুকের মুখে দু’জনকে তাদের গোপন ডেরায় নিয়ে যায় জঙ্গিরা। সেখানে বন্দি থাকা অবস্থাতেই তিন সন্তানের মা হয়েছেন কেটল্যান।

গত মাসে পাকিস্তানে মুক্তি পাওয়ার পর এবিসি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেটল্যান বলেছেন, ‘‘ওরা আমার ওপর, আমার স্বামী, ছেলেমেয়েদের ওপর যে নির্মম অত্যাচার করেছে, তা বলার নয়। ওরা শিশুদেরও রেহাই দেয় না। আমাকে প্রচণ্ড মারধর করা হত। মার খেয়ে আমার সারা গায়ে কালশিটে পড়ে গিয়েছিল। ঘরে ঢুকে আমাকে নিয়ে যেন লোফালুফি করত জঙ্গিরা। এখান থেকে তুলে এক জঙ্গি আমাকে ঘরের অন্য প্রান্তে ছুড়ে দিচ্ছে তো ওখান থেকে আমাকে ছুড়ে ফেলে দিচ্ছে আরেক জঙ্গি।’’

কেটল্যানকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে তালিবান জঙ্গিরা, তাদের গোপন ডেরাগুলিতে। বাধা দিতে গেলেই সপাং সপাং করে মারা হত চাবুক। লাঠি দিয়েও কেটল্যান, তাঁর স্বামী জোশুয়া আর তাঁদের তিন শিশুসন্তানকে বেধড়ক পেটানো হত। জঙ্গিদের মারধরের হাত থেকে স্বামী জোশুয়া আর ছেলেমেয়েদের বাঁচাতে গিয়ে তাঁর চিবুকের হাড় আর হাতের তিনটি আঙুল ভেঙে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন কেটল্যান।

কেটল্যানের স্বামী জোশুয়ার কথায়, ‘‘প্রায়ই আমাদের মাথা কেটে ফেলার হুমকি দিত তালিবানরা। কাঠের টুকরো দিয়ে পুতুল বানিয়ে বোতলের ছিপি দিয়ে তাদের মাথা বানানো হত। আর সেই পুতুলগুলি আমাদের সামনে এনে দেখানো হত, তাদের ওপর থেকে বোতলের ছিপি সরিয়ে নেওয়ার মতো কি সহজে আমাদের মাথা কেটে ফেলা হবে।’’