হয় খুন। নয় কারাগারে বন্দি। ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত মার্কিন গুপ্তচর সংস্থা সিআইএ-র অন্তত ২০ জন প্রতিনিধি এ ভাবেই হারিয়ে গিয়েছেন চিনে। সম্প্রতি এক মার্কিন দৈনিকে এই খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাদের দাবি, ওই সময়ের মধ্যে চিন থেকে তথ্য জোগাড় এক রকম বন্ধই হয়ে গিয়েছিল গুপ্তচর সংস্থাটির।
সিআইএ-র ওয়েবসাইট হ্যাক করা হয়েছিল নাকি কোনও গোষ্ঠীর সাহায্যে বেজিং প্রশাসন মার্কিন গুপ্তচরদের চিনে ফেলেছিল তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। গুপ্তচর সংস্থারই বেশ কয়েক জন প্রাক্তন অফিসারের সঙ্গে কথা বলে মার্কিন দৈনিক ওই খবর জানায়। সিআইএ-র তরফে এ ব্যাপারে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
প্রাক্তন এক অফিসারের দাবি, অন্যদের সতর্ক করতে চিনে একটি সরকারি ভবনের চত্বরে এক মার্কিন গুপ্তচরকে গুলি করে মারা হয়েছিল। ২০১০ থেকেই চিন থেকে আসা তথ্যের সংখ্যা কমছিল বলে জানিয়েছেন ওই অফিসার। তার পরের বছর গোড়ার দিক থেকে কোনও তথ্যই প্রায় মিলছিল না বলে তাঁর দাবি। চিনের কাছে তথ্য ফাঁসে সিআইএ-রই আর এক প্রাক্তন অফিসারের দিকে আঙুল উঠেছে। তবে যথেষ্ট প্রমাণ না মেলায় তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। কোনও এক এশীয় দেশে এখন রয়েছেন তিনি।
আমেরিকার হয়ে চরবৃত্তি করছেন সন্দেহে ২০১২ সালে চিনের নিরাপত্তা মন্ত্রকে এক অফিসারকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। সিআইএ তাঁকে কিছুর লোভ দেখিয়ে নিয়োগ করেছিল বলে জানা গিয়েছিল। সেই সময়কার মার্কিন বিদেশসচিব হিলারি ক্লিন্টন ওই ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি ঠিকই। কিন্তু পরবর্তীকালে কেন তথ্য কম আসছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন খোদ প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও। কিন্তু ওই সময়ের মধ্যে সিআইএ প্রতিনিধিদের উধাও হয়ে যাওয়ার স্পষ্ট কারণ এখনও মেলেনি বলে দাবি করছে ওই মার্কিন দৈনিক।
২০১৫-য় বেজিংয়ের মার্কিন দূতাবাস থেকে সিআইএ তার কর্মীদের সরিয়ে নেয়। কারণ ওই সময়ে বেজিং প্রশাসনের বিরুদ্ধে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ উঠেছিল, যাতে মার্কিন কর্মীদের সম্পর্কে প্রচুর তথ্য তাদের হাতে চলে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। ২০১০-১২ তেমনটাই হয়েছিল কি না, তা নির্দিষ্ট করে বলা হয় না। ওই সময় নিয়ে খুব কম তথ্যই প্রকাশ্যে এসেছে বলে জানিয়েছে দৈনিকটি।
তবে ওই ভাবে সিআইএ অফিসারদের উধাও হয়ে যাওয়ায় দীর্ঘদিনের তৈরি করা ‘জাল’ অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল সন্দেহ নেই। প্রাক্তন অফিসাররা বলছেন, সাম্প্রতিক কালে মার্কিন সরকারের নিরাপত্তায় এত বড় গাফিলতির ঘটনা খুব কমই ঘটেছে। ২০১৩ থেকে অবশ্য মার্কিন প্রশাসন অনেকটাই সামলে নিয়েছে বলে দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy