E-Paper

অবরুদ্ধ চিকিৎসক, বরগুনার মাজারে ভাঙচুর করে আগুন

মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যও ছিলেন এক সময়ে। প্রাণগোপাল এবং অনিন্দিতা— দু’জনের নামেই একাধিক খুনের মামলা দিয়েছে ইউনূস সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৫ ০৯:০৯
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

বাংলাদেশে ফের সরকার সমর্থক মৌলবাদীরা একটি মাজার ভাঙচুর করে পুড়িয়ে দিল। তাদের দলবদ্ধ হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন।

সুফিদের একটি সংগঠন জানুয়ারিতে জানিয়েছিল, মুহাম্মদ ইউনূস ক্ষমতায় আসার পরে ৬ মাসে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় সুফি-সন্ত, সহজিয়া, বাউলদের অন্তত ৮০টি মাজার ও আখড়ায় হামলা হয়েছে। আতঙ্কে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই সংগঠনের এক পদাধিকারীর কথায়, “সরকার নানা আশ্বাস দিলেও মাজার ও আখাড়ায় হামলার একের পর এক ঘটনা জানুয়ারির পরেও ঘটে চলেছে। বলা যায় সংখ্যাটি এখন ১০০ ছুঁয়েছে।”

রবিবারেই বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিয়োলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও চিকিৎসক অনিন্দিতা দত্তকে ‘ছাত্র জনতা’ তাঁর দফতরে ৬ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। কর্তৃপক্ষ সেনাদের ডাকলে তারা তাঁকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। অনিন্দিতা দত্তের ‘অপরাধ’ তাঁর বাবা বিশিষ্ট ইএনটি বিশেষজ্ঞ প্রাণগোপাল দত্ত কুমিল্লার একটি আসনে আওয়ামী লীগের সাংসদ ছিলেন। মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্যও ছিলেন এক সময়ে। প্রাণগোপাল এবং অনিন্দিতা— দু’জনের নামেই একাধিক খুনের মামলা দিয়েছে ইউনূস সরকার।

বরিশালের বরগুনায় রবিবার মধ্যরাতে লাঠি ও অস্ত্র হাতে মৌলবাদীদের একটি দল ইসমাইল শাহের মাজারে চড়াও হয়। সন্ত ইসমাইল শাহের মৃত্যুদিন উপলক্ষে মাজারের সামনের চত্বরে শামিয়ানা টাঙিয়ে বার্ষিক উরস (ধর্মীয় গান ও পাঠের অনুষ্ঠান) চলছিল। অবিভক্ত বাংলায় এই পীরেদের হাত ধরে ইসলামের প্রসার হলেও মৌলবাদীরা এই সহজিয়াদের প্রকৃত ইসলামি বলে মানে না, কারণ এঁরা ধর্মীয় সম্প্রীতির কথা বলেন। বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে যখনই মৌলবাদী ও জঙ্গি শক্তির প্রভাব বেড়েছে, আক্রান্ত হয়েছেন পীর, ফকির, আউলিয়া, সহজিয়া, বাউলদের অনুসারীরা। শেখ হাসিনার আমলে সরকারি প্রশ্রয়ে কট্টর মৌলবাদী হেফাজতে ইসলামীর বাড়বাড়ন্তের সময়েও এঁরা আক্রান্ত হয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে, রবিবার বরগুনায় হামলার সময়েও পুলিশ ছিল দর্শক। কারণ ইসলামী ঐক্য জোটের স্থানীয় দুই নেতার নেতৃত্বে এই হামলাটি হয়‌েছে, যারা সরকারপন্থী এবং প্রভাবশালী।

রবিবারের হামলায় উরসের অনুষ্ঠান বন্ধ করে শামিয়ানা খুলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তার পরে মাজারের মূল ভবনটি ভাঙচুর করে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। উপস্থিত মানুষদেরও মারধর করা হয়। মাজারের খাদেম মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল জানিয়েছেন, দমকল রাত তিনটের সময়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। ৯ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

dhaka

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy