Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

থাবা স্বাস্থ্য তথ্যেও! ফের বিদ্ধ ফেসবুক

গত কাল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফাঁস করে দিয়েছে ফেসবুকের এই ‘গোপন’ অভিযানের কথা। তারা জানাচ্ছে, গত মাসে ফেসবুক এই বিশেষ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩২
Share: Save:

তথ্য ফাঁস-কাণ্ডে সমন পেয়ে মঙ্গলবার মার্কিন কংগ্রেসে হাজিরা দেওয়ার কথা মার্ক জুকেরবার্গের। তার আগে ফের মুখ পুড়ল ফেসবুকের। এ বারে অভিযোগ— মুমূর্ষুদের তথ্য হাতাতে হাসপাতালেও হানা দিয়েছিল তারা!

গত কাল বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবসে এক মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফাঁস করে দিয়েছে ফেসবুকের এই ‘গোপন’ অভিযানের কথা। তারা জানাচ্ছে, গত মাসে ফেসবুক এই বিশেষ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিল। আমেরিকার প্রথম সারির কয়েক জন চিকিৎসককে দলে টেনে বিভিন্ন হাসপাতালে তাঁদের পাঠানো হয় মরণাপণ্ণ রোগীদের খুঁটিনাটি জানতে। লক্ষ্য ছিল, রোগীদের বিন্দুবিসর্গ জানতে না দিয়ে চিকিৎসার বিভিন্ন ধাপের প্রতিটি প্রেসক্রিপশনেরও দখল নেওয়া!

কী বলছে জুকেরবার্গের সংস্থা?

তাদের বক্তব্য, এটা তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত গবেষণার অঙ্গ। তবে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা-কাণ্ড সামনে আসায় আপাতত ওই প্রকল্প বন্ধ রয়েছে। তবে এটি সফল হলে, বিশ্বের চিকিৎসকেরা খুবই উপকৃত হতেন। যদিও প্রশ্ন থাকছে, লক্ষ্য যা-ই হোক, চুপসারে কেন এই ব্যক্তিপরিসরের তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা? এর জবাব এড়িয়ে জুকেরবার্গের সংস্থা জানাচ্ছে, হাসপাতাল থেকে কোনও তথ্যই হাতে পায়নি তারা। ফলে এমন তথ্য বেহাত হওয়ার প্রশ্নই নেই।

গবেষণার নামে রোগীদের তথ্য হাতিয়ে ফেসবুক কি নতুন পথে ব্যবসা বাড়াতে চাইছিল? বাণিজ্য জগতের লোকজন বলছেন, বিজ্ঞাপনে গ্রাহকদের প্রভাবিত করাটাও কিন্তু ব্যবসারই অংশ। প্রায় ৯ কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর তথ্য কেমব্রিজ অ্যানালিটিকার হাতে চলে গিয়েছে বলে কবুল করেছেন জুকেরবার্গ নিজেই। আজ আবার ফেসবুকের চিফ অপারেটিং অফিসার শেরিল স্যান্ডবার্গ জানিয়েছেন, তাঁদের আশঙ্কা আরও বহু জায়গায় বহু তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছে।

এ সব জানার পরেও বিশ্ব জুড়ে মানুষ যে ভাবে ফেসবুকে বুঁদ হয়ে রয়েছেন, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে বেশ কিছু ডিজিটাল অধিকার রক্ষা সংগঠন। এমনই এক সংগঠনের এক কর্তা বলছেন, ‘‘এ বার অন্তত খাতায়-কলমে হিসেব কষে দেখা দরকার আমাদের জীবনের উপর ইতিমধ্যেই কতটা নিয়ন্ত্রণ কায়েম করেছে ফেসবুক।’’

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকায় কাজ করার সময়েই বিপদের মাত্রাটা আঁচ করেন কানাডার যুবক ক্রিস্টোফার ওয়াইলি। ফাঁস করে দেন ফেসবুকের তথ্য বেহাত হওয়ার কথা। ওয়াইলির দাবি, তথ্য-চুরি নিয়ে গত জানুয়ারি মাসেই তিনি ব্রিটিশ প্রশাসনকে সতর্ক করেছিলেন। অ্যানালিটিকার সঙ্গে ফেসবুকের বিপুল লেনদেনের তথ্যপ্রমাণও প্রকাশ করে দেন ওয়াইলি। তাঁর দাবি, ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়া না-ছাড়া নিয়ে ভোটে ব্রেক্সিট-পন্থী প্রচারে প্রচুর অর্থ ঢেলেছিল এআইকিউ। কানাডার এই সংস্থার সঙ্গে যে অ্যানালিটিকার যোগ রয়েছে, তারও প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। ওয়াইলির হুঁশিয়ারি, ‘‘প্রশ্নটা শুধু তথ্য চুরির নয়। ব্রেক্সিটের চেহারাটা দেখে বুঝতে পারছি, গণতন্ত্রও বিপন্ন।’’ স্বাস্থ্য-তথ্য হাতানোর চেষ্টা সামনে আসার পরে নিরাপদে কি মুমূর্ষুরাও!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE