তিন মাস আগে কাশ্মীরের পহেলগামে হামলা চালিয়েছিল পাক জঙ্গি সংগঠন ‘দ্য রেজ়িসট্যান্স ফ্রন্ট’, সংক্ষেপে টিআরএফ। প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ। এর মধ্যেই ‘সন্ত্রাসদমন ও আঞ্চলিক শান্তি-স্থিতাবস্থা বজায়’ রাখার জন্য পাকিস্তানকে ধন্যবাদ জানাল আমেরিকা। আমেরিকা সফরে গিয়েছেন পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রী ইশক দার। ওয়াশিংটনে আমেরিকার বিদেশ সচিব মার্কো রুবিয়োর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন তিনি। সেখানেই পাকিস্তানের প্রশংসাকরেন রুবিয়ো।
মাত্র কয়েক দিন আগের কথা। পহেলগামের হামলার প্রসঙ্গ টেনে পাক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই-তইবা-র শাখা সংগঠন টিআরএফ সম্পর্কে রুবিয়ো বলেছিলেন, শীঘ্রই এদের ‘বিদেশি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ এবং ‘বিশ্বে সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য বিশেষ ভাবে তৈরি সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। তার পরে গত কাল রুবিয়োর পাকিস্তানকে ধন্যবাদ দেওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনা।
পাকিস্তানও অবশ্য আমেরিকার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। প্রসঙ্গত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার বার দাবি করেছেন, পাকিস্তান-ভারত সংঘর্ষ থামানোর সব কৃতিত্ব তাদের। যদিও আমেরিকার সেই দাবি নয়াদিল্লি মানতে চায়নি। পাকিস্তান কিন্তু মেনে নিয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা বলেছে, ‘‘সীমান্তে উত্তেজনা কমিয়ে যুদ্ধবিরতি জারি হওয়ার পিছনে আমেরিকার যে ভূমিকা রয়েছে, তার জন্য তারা আমেরিকার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে।’’
টিআরএফ-কে ‘সন্ত্রাসবাদী সংগঠন’ হিসেবে চিহ্নিত করার জন্যেও এ দিন আমেরিকার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন দার। ওয়াশিংটনে একটি অনুষ্ঠানে দার বলেন, আমেরিকার ওই ঘোষণা নিয়ে পাকিস্তানের কোনও আপত্তি নেই। তবে টিআরএফ-এর নাম যে লস্কর-ই-তইবার সঙ্গে জোড়া হচ্ছে, সেটার বিরোধিতা করছে তারা। দার বলেন, ‘‘ওটা ভুল কথা।’’ তিনি আরও জানান, এর কোনও প্রমাণ থাকলে তিনি দেখতে চান।
এর আগে অবশ্য টিআরএফ-কে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন মানতেও নারাজ ছিল পাকিস্তান। সে দিক থেকে বিচার করলে তারা মত বদলেছে। অতীতে দার বলেছিলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদে বিবৃতি দিয়ে টিআরএফ-এর বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। বিশ্বের নানা দেশ থেকে পাকিস্তানকে বার্তা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এ সব অভিযোগ মানব না। টিআরএফের অস্তিত্ব নেই।’’
যদিও এখন অবশ্য পুরনো সেই অবস্থান থেকে সরে এসে পাকিস্তান জানিয়েছে, টিআরএফ-কে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা নিয়ে আমেরিকার সিদ্ধান্তে তাদের কোনও আপত্তি নেই।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)