দ্বিতীয় বার আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পরেই নিজের ঘনিষ্ঠ বন্ধু তথা ধনকুবের ইলন মাস্ককে নিজের প্রশাসনে বিশেষ উপদেষ্টার পদ দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সরকারি দক্ষতা বিষয়ক দফতরের (ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি বা ডিওজিই) মাথায় বসেই আমেরিকার বহু সরকারি দফতরে কর্মী ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন টেসলা এবং এক্স-এর কর্ণধার মাস্ক। এ বার বিভিন্ন দেশকে দেওয়া অনুদানও বন্ধ করা হচ্ছে বলে জানালেন মাস্ক। আজই তিনি জানিয়েছেন, ভারতের নির্বাচনে ভোটদানের হার বৃদ্ধি করতে এত দিন বিপুল অর্থ খরচ করত আমেরিকান প্রশাসন। সেই অর্থ বরাদ্দ তিনি বন্ধ করে দিচ্ছেন। এরই সঙ্গে ভারতের পড়শি দেশ, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নয়নের পিছনেও প্রচুর অর্থ অনুদান দিত আমেরিকা, বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে সেই অর্থও।
আজ নিজেরই সমাজমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ মাস্ক জানিয়েছেন, জো বাইডেনের আমলে ভারতের নির্বাচনী খাতে মোট ২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ১৮২ কোটি টাকারও বেশি) অনুদান দিত আমেরিকান প্রশাসন। মূলত ভারতীয় ভোটারদের বুথমুখী করতেই এই অর্থ খরচ করা হত। আমেরিকান আয়কর দাতাদের অর্থ এ ভাবে আর অন্য দেশে বিপুল পরিমাণ অনুদান হিসেবে দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়েছেন মাস্ক। আগে ভারতের নির্বাচনে যে অর্থ বরাদ্দ করা হত, বাইডেনের আমলে সেই পরিমাণ আরও বাড়ানো হয় বলেও জানিয়েছেন মাস্ক। বাংলাদেশকে দেওয়া হত ২ কোটি ৯০ লক্ষ ডলার। সেই অর্থও বন্ধ হচ্ছে। শুধু ভারত বা বাংলাদেশই নয়, মোজ়াম্বিক, মালি, নেপাল, সার্বিয়া, কম্বোডিয়ার মতো নানা দেশকে নানা খাতে দেওয়া অনুদানের অর্থও বন্ধ করার কথা আজ জানিয়েছেন মাস্ক।
ভারতের নির্বাচনী খাতে অনুদান হিসেবে এত বিপুল আমেরিকান অর্থ অনুদান নিয়ে মুখ খুলেছেন বিজেপির অন্যতম মুখপাত্র অমিত মালবীয়। তাঁর দাবি, এই অনুদানের কথা তাঁর জানা ছিল না। এ ভাবে ভারতের ভোটে বিদেশি সরকারের অর্থ খরচকে ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলেও আজ সমাজমাধ্যমে উল্লেখ করেছেন অমিত। সেই সঙ্গেই তাঁর প্রশ্ন, এত বিপুল বিদেশি অর্থে লাভ কার হত? ভারতের বর্তমান শাসক দল অর্থাৎ বিজেপি অবশ্যই এর লাভ পেত না বলে নিজেই দাবি করেছেন তিনি। উল্টে পরোক্ষে তাঁর ইঙ্গিত, কংগ্রেসের দিকে। কংগ্রেসের নেতৃত্ব অমিতের এই অভিযোগ নিয়ে এখনও মুখ খোলেননি।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)