Advertisement
E-Paper

মেয়েকে বাঁচান, হুবেইয়ে আর্তি মায়ের

ইয়াংজ়ে নদীর সেতু পেরিয়ে জিয়াংশি প্রদেশের জিউজিয়াং শহরের এক হাসপাতালে হুয়ের দ্বিতীয় পর্যায়ের কেমোথেরাপি শুরু হওয়ার কথা ছিল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩২
করোনাভাইরাসর জেরে মৃত্যু, চলছে উদ্ধারকার্য। ছবি: পিটিআই।

করোনাভাইরাসর জেরে মৃত্যু, চলছে উদ্ধারকার্য। ছবি: পিটিআই।

কনকনে ঠান্ডায় মাঝরাস্তায় দাঁড়িয়ে কাঁপছিলেন ২৬ বছরের হু পিং। তাঁর গায়ে কম্বল জড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন তাঁর মা লু উয়েজিন। অঝোরে কাঁদছেন বছর পঞ্চাশের মহিলা। মা-মেয়েকে সেতু পেরোনোর অনুমতি দিচ্ছেন না নিরাপত্তারক্ষীরা। হুয়ের লিউকেমিয়ার চিকিৎসার জন্য ওই সেতু পেরিয়ে অন্য প্রদেশে যাওয়া জরুরি।

নোভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত চিনের হুবেই প্রদেশের এখন অন্য রোগের চিকিৎসা করানোও অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। তালাবন্দি এই প্রদেশ থেকে অন্যত্র যাওয়া বন্ধ। বাইরের কেউ হুবেইয়ে ঢুকতে পারছেন না। ফলে ক্যানসারের মতো আর এক মারণ রোগে যাঁরা ভুগছেন, তাঁদের চিকিৎসাও অনিশ্চয়তায়।

ইয়াংজ়ে নদীর সেতু পেরিয়ে জিয়াংশি প্রদেশের জিউজিয়াং শহরের এক হাসপাতালে হুয়ের দ্বিতীয় পর্যায়ের কেমোথেরাপি শুরু হওয়ার কথা ছিল। আজ সকালে সেতুর চেকপয়েন্টে তাঁদের আটকে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। লু আর্জি জানান, তাঁকে না যেতে দিলেও হু-কে যেন হুবেই ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। শুধু বলতে থাকেন, ‘মেয়েটা বাঁচুক।’’ শেষে অ্যাম্বুল্যান্সের ব্যবস্থা হয় হু-এর জন্য। থার্মাল পরীক্ষার পরে হু ও তাঁর মায়ের হুবেই ছাড়ার অনুমতি মেলে।

হুবেইয়ের এই টুকরো ছবিটা চিনের অন্য শহরেও দেখা যাচ্ছে। কারণ চিনের সরকারই আজ জানিয়েছে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ আটকাতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যাঁরা আক্রান্ত, তাঁদের আলাদা করে রাখা হচ্ছে। চিহ্নিত করা হচ্ছে সংক্রমিত এলাকাগুলি। যেখানে সংক্রমণের ভয় বেশি, সেখানকার মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। উহানে তড়িঘড়ি তৈরি করা হচ্ছে কয়েক হাজার শয্যার এক নতুন হাসপাতালও। ঝেজিয়াং প্রদেশে নিয়ম করা হয়েছে, ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ির যে কোনও এক জন বাজার করতে বেরোতে পারবেন, তা-ও দিনে এক বার।

চিনের সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আজ পর্যন্ত এই ভাইরাসের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে ৩০৪ জনের। আক্রান্ত ১৪ হাজারের বেশি। চিনের বাইরে এই প্রথম মৃত্যুর খবর এসেছে ফিলিপিন্স থেকে। বছর চুয়াল্লিশের এক ব্যক্তির আজ মৃত্যু হয়েছে।

চিনে আটক পাকিস্তানিদের দেশে ফিরতে না দিলেও আজ ইসলামাবাদের তরফে জানানো হয়েছে, তারা কয়েক জন পাকিস্তানি নার্স ও চিকিৎসক পাঠাচ্ছে উহানে। পাকিস্তানে ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত নেই বলেই আপাতত দেশের নাগরিকদের ফেরানো হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পাক সরকার। অন্য দিকে, চিন থেকে বিশ্বের অন্যত্র ছুটি কাটাতে যাওয়া নাগরিকদের বিশেষ বিমানের সাহায্যে ফেরার ব্যবস্থা করেছে বেজিং।

করোনা-পরবর্তী পরিস্থিতিতে ভারত-চিন তিনটি বিমান বাতিল করে ইন্ডিগো। আজ থেকে চিনের পর্যটক বা চিনে বসবাসকারী বিদেশিদের জন্য ই-ভিসা পরিষেবাও সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে ভারতীয় দূতাবাস। দূতাবাসের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘চিনের পাসপোর্ট রয়েছে এমন ব্যক্তিরা বা চিনে থাকেন এমন বিদেশিদের ভিসার আবেদন আপাতত গ্রহণ করা হচ্ছে না। ইতিমধ্যেই কারও ভিসা রয়েছে, তা বৈধ হিসেবে গণ্য করা হবে না।’’ এর পরেও কেউ জরুরি প্রয়োজনে ভারতে আসতে চাইলে তাঁদের বেজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস, সাংহাইয়ে ভারতীয় কনসুলেট বা ভিসা অ্যাপ্লিকেশন সেন্টারগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেতে বলা হয়েছে।

Coronavirus China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy