গনির দেশত্যাগ নিয়ে তুঙ্গে জল্পনা। —ফাইল চিত্র।
স্ত্রী-পরিবার নিয়ে দেশ ছেড়ে তিনি পালাতে পারেন বলে গুঞ্জন চারিদিকে। তার মধ্যেই তালিবান আগ্রাসন নিয়ে দেশবাসীর মুখোমুখি হলেন আফগান প্রেসিডেন্ট আশরফ গনি। নিজের ইস্তফা বা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি। তবে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আফগানিস্তানে শান্তি এবং স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই প্রধান লক্ষ্য বলে জানালেন তিনি।
শনিবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, দেশের রাজধানী কাবুল থেকে ৮০ কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থান করছে তালিবান। উত্তর দিক থেকে কাবুলে ঢোকার প্রবেশপথ হিসেবে চিহ্নিত যে মাজার-ই-শরিফ শহর, চতুর্দিক থেকে সেটি ঘিরে ফেলেছে তারা। আফগান সেনা এবং যৌথ বাহিনীর উদ্দেশে লাগাতার বোমাবর্ষণ করে চলেছে। দক্ষিণের লোগার প্রদেশেরও দখল নিয়েছে তারা।
এমন পরিস্থিতি সরকারের ভূমিকা নিয়ে যখন প্রশ্ন তুলছেন বিরোধীরা, সেই সময়ই দুপুরে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন গনি। তিনি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হিসেবে আপনাদের কথা দিচ্ছি, কিছুতেই দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে দেব না আমি। হিংসার কবলে যেতে দেব না দেশকে। মানুষ যাতে ভিটেমাটি ছাড়া না হন, তা নিশ্চিত করেই ছাড়ব। আফগান নাগরিকদের উপর যুদ্ধ এবং হত্যালীলা নামে আসতে দেব না আমি। গত ২০ বছর ধরে একটু একটু করে যা গড়ে তুলেছি আমরা, কিছু ধ্বংস হতে দেব না।’’
তালিবান মোকাবিলায় সর্বশক্তি দিয়ে কাজ করছে তাঁর সরকার, নতুন করে সেনাবাহিনীকে সাজানো হচ্ছে এবং এ নিয়ে অন্য রাষ্ট্রের সঙ্গেও আলোচনা চলছে বলেও জানিয়েছেন গনি। কিন্তু দেশবাসীকে আশ্বাস দিলেও গনি আসলে ভিতরে ভিতরে হার স্বীকার করে নিয়েছেন বলে দাবি আফগানিস্তানের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির। তাদের শিবিরের অভিযোগ, শুক্রবার রাতে আমেরিকার বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন এবং সে দেশের প্রতিরক্ষা সচিব লয়েড অস্টিনের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে গনির। ইস্তফা দেওয়ার জন্য তাঁর উপর চাপ বাড়াচ্ছে আমেরিকা, যাতে তালিবানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়।
তাই পরিবার নিয়ে অন্যত্র পালানোর আগে গনি মুখরক্ষা করছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের। আফগান সরকার যদিও তা খারিজ করে দিয়েছে। কিন্তু তালিবানের মোকাবিলায় পরবর্তী পদক্ষেপ কী, তা নিয়ে যে অস্বচ্ছতা রয়েছে তা সরকারের অন্দরেই অনেকে মেনে নিচ্ছেন। তাতেই নিজেদের বিরোধীরা আরও জোর পেয়েছেন। তাঁদের মেত গলির ইস্তফা এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy